thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ৬ মে 24, ২৩ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৭ শাওয়াল 1445

ধর্ষণের পর গৃহপরিচারিকা হত্যা

আদালতের নির্দেশে যুবতীর লাশ উত্তোলন

২০১৬ নভেম্বর ১৭ ১৪:২৬:৩৪
আদালতের নির্দেশে যুবতীর লাশ উত্তোলন

চট্টগ্রাম অফিস : চট্টগ্রামের ফটিকছড়ির বাগান বাজার ইউপি চেয়ারম্যান রুস্তম আলীর বাড়িতে শিরিন আক্তার নামে (২৯) এক গৃহপরিচারিকাকে ধর্ষণের পর হত্যা করা হয়। হত্যার পর তার লাশ মাটিচাপা দেওয়া হয়।

আদালতের নির্দেশে বৃহস্পতিবার (১৭ নভেম্বর) সকাল সাড়ে ৯টার দিকে নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে বাগান বাজার রসুলপুরে জুলফু মিয়ার বাড়ির (মেয়ের নানার বাড়ির পিছনে) পাহাড়ের ঢালে মাটিচাপা দেওয়া ওই লাশ উত্তোলন করে পুলিশ। পরে ময়নাতদন্তের জন্য লাশ চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ (চমেক) হাসপাতাল মর্গে পাঠানো হয়েছে।

মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও ভূজপুর থানার হেলাল উদ্দীন ফারুকী এ বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি জানান, আদালতের নির্দেশে ম্যাজিস্ট্রেটের উপস্থিতিতে শিরিনের লাশ তোলা হয়েছে। এ সময় উপস্থিত ছিলেন-নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট নাজিমুল হায়দার ও ভুজপুর থানার ওসি আব্দুর লতিফ।

এর আগে চেয়ারম্যান রুস্তমের বিরুদ্ধে শিরিনকে বিয়ের প্রলোভনে ধর্ষণের পর হত্যার অভিযোগে মামলা হয়। শিরিন আক্তারের বাবা তাজুল ইসলাম বাদী হয়ে আদালতে মামলা করেন। মামলায় চেয়ারম্যান রুস্তম আলী ও তার ছেলে সাইফুল ইসলামসহ ১১ জনকে আসামি করা হয়।

বাদীর অভিযোগ আমলে নিয়ে তা এফআইআর হিসেবে নথিভুক্ত করে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের জন্য ওসি ভুজপুরকে নির্দেশ প্রদান করেন। গত ৩ নভেম্বর চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট মুন্সি মো. মশিউর রহমান এ আদেশ প্রদান করেন। এর আগে গত ২৭ অক্টোবর রাতে এ হত্যাকাণ্ডের ঘটনা ঘটে।

আদালতে দায়ের করা বাদীর অভিযোগের ভিত্তিতে জানা যায়, ২০১১ সালে একই ইউনিয়নের ফুলছড়ি গ্রামের নুরুল আমিনের সঙ্গে বিয়ে হয় শিরিনের। কিছুদিন সংসার করার পর তাদের বিয়ে বিচ্ছেদ ঘটে। এরপর শিরিন বাগান বাজার ইউপি চেয়ারম্যান রুস্তম আলীর বাড়িতে গৃহপরিচারিকার কাজে নিয়োজিত হয়।

চেয়ারম্যান রুস্তম আলীর স্বভাব চরিত্র ভালো না লাগায় সেখান থেকে কাজ ছেড়ে চলে আসার চেষ্টা করে। কিন্তু রুস্তম আলী প্রভাবশালী হওয়ায় সে সময় শিরিনকে নানা ভয়ভীতি দেখিয়ে তার বাড়িতে থাকতে বাধ্য করে। বিষয়টি তার মাকে অবহিত করেছিলেন শিরিন।

এর কিছুদিন পর স্ত্রী মারা যাওয়ার পর শিরিনের সঙ্গে অবৈধ শারীরিক সম্পর্ক শুরু করেন রুস্তম। এ সময় শিরিনকে স্ত্রীর মর্যাদায় রাখবেন বলেও আশ্বাস্ত করেন।

মামলার অভিযোগে আরও জানা যায়, শিরিনকে সেখান থেকে নিয়ে অন্যত্র বিয়ে দেয়ার চেষ্টা করেন তার মা বাবা। কিন্তু তাতেও বাধা দেন চেয়ারম্যান রুস্তম। এরই মধ্যে গত ২৮ অক্টোবর বাদী তার সিএনজি অটোরিক্সা নিয়ে চিকনছড়া এলাকায় গেলে লোক মুখে শুনে যে তার মেয়ে মরে গেছে। লোক মুখে এ খবর শুনার পর নিজের স্ত্রীকে নিয়ে মেয়ের খোঁজে রুস্তম আলীর ঘরে গিয়ে শিরিনের খোঁজ করতে থাকে। এ সময় রুস্তম আলী বাদীর স্ত্রীকে ম্যানেজ করার চেষ্টা করে। এক পর্যায়ে ব্যর্থ হয়ে বাদী এবং তার স্ত্রীকে ভয়ভীতি ও হুমকি দিয়ে মিথ্যা মামলায় ফাঁসানোর ভয় দেখায়।

এরপর তার বাইরে বের হলে রুস্তম আলীর কাজের ছেলে মুরালী স্থানীয় চা দোকানে বলতে থাকে যে শিরিন ২৭ অক্টোবর রাতে মারা গেছে। এর পর রুস্তম আলী, তার ছেলে সাইফুল ও অন্যান্য আসামিরা মিলে স্থানীয় আন্দারমানিক বাজারের আলম টেইলার্স থেকে কাফনের কাপড় কিনে রাতের তিনটা থেকে সাড়ে তিনটার দিকে অজ্ঞাতস্থানে শিরিনের লাশ গুম করে ফেলে।

(দ্য রিপোর্ট/এইচ/এমকে/নভেম্বর ১৭, ২০১৬)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর