thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ১ মে 24, ১৮ বৈশাখ ১৪৩১,  ২২ শাওয়াল 1445

‘সংগীতে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার ইচ্ছে আছে’

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১৮ ২১:৫২:৪৪
‘সংগীতে উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার ইচ্ছে আছে’

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : ‘ক্ষুদে গানরাজ’ মোহনা। ‘এক মুঠো স্বপ্ন’ খ্যাত মোহনার জন্ম ১৯৯৭ সালের ৯ নভেম্বর সিরাজগঞ্জে। মোহনার পুরো নাম মোহনা নিষাদ। সম্প্রতি মুক্তি পাওয়া সামিয়া জামানের চলচ্চিত্র ‘আকাশ কত দূরে’র ‘কোথায় আছো দয়াময়’ গানটির মাধ্যমে প্লেব্যাকে অভিষেক ঘটে তার। সাম্প্রতিক কাজ ও অন্যান্য প্রসঙ্গ নিয়ে মোহনা কথা বলেছেন দ্য রিপোর্টের সঙ্গে। তার সাক্ষাৎকার নিয়েছেন আদিত্য রুপু

দ্য রিপোর্ট : প্রথমেই ‘আকাশ কত দূরে’ নিয়ে বলুন…

মোহনা : ‘আকাশ কত দূরে’ পরিচালক সামিয়া জামানের চলচ্চিত্র। এই ছবিতে বেলাল খানের সুরে আমার একটি গান রয়েছে। ‘কোথায় আছো দয়াময়/কোথায় তুমি থাকো/এই অবুঝের চোখটা `কেন নদী করে রাখো’ গানটির জন্য শ্রোতা ও পরিচিতমহলে প্রশংসা পাচ্ছি।

দ্য রিপোর্ট : চলচ্চিত্রের গানে তো চিত্রনাট্যের আবহে কাজ করতে হয়, গানটির প্রেক্ষাপট কি ছিল?

মোহনা : অবশ্যই চলচ্চিত্রে গল্পের আবহে কাজ করতে হয়। গল্পটি বুঝে নিলে গানটি সম্পন্ন করতে সুবিধা হয়। ‘আকাশ কত দূরে’র গল্প ও চিত্রনাট্য জনপ্রিয় গীতিকার জুলফিকার রাসেলের। ছবিতে এতিমখানায় বেড়ে ওঠা একটি ছেলের দুঃখ-কষ্টের ব্যাপারটি উঠে এসেছে আমার গানে।

দ্য রিপোর্ট : চলচ্চিত্রের গানে কাজ করে শেখার কিছু আছে কি? আপনার গান শুনে সামিয়া জামানের অভিব্যক্তি কি?

মোহনা : শেখার আছে অনেক কিছুই, বিশেষ করে নতুনদের। চলচ্চিত্রের গানের বাঁকে বাঁকে থাকে নাটকীয়তা আর খেলা। সে সব ফুটিয়ে তুলতে পরিণত মানসিকতার দরকার হয়। গল্প ও গল্পের অন্তর্নিহিত তাৎপর্য বুঝতে হয়। কাজ করতে গিয়ে আমিও অনেক কিছুই শিখেছি। সামিয়া ম্যাম আমাকে উৎসাহ দিয়েছেন। গান রেকর্ডিং হওয়ার পরপরই তিনি প্রশংসা করেছেন। সংশ্লিষ্ট সবার সহযোগিতা ছিল কাজটিতে।

দ্য রিপোর্ট : আর কোন চলচ্চিত্রে গান করেছেন?

মোহনা : সামিয়া জামানের ‘আকাশ কত দূরে’ আমার প্রথম প্লেব্যাক। এ ছাড়াও আমি পরিচালক সাইফ চন্দনের মুক্তি প্রতীক্ষিত চলচ্চিত্র ‘ছেলেটি আবোল-তাবোল মেয়েটি পাগল পাগল’-এ গান করেছি। তামিল চলচ্চিত্রের রিমেক ‘লাভলি’-তেও থাকছে আমার একটি গান।

দ্য রিপোর্ট : আপনার গানের গুরু কে?

মোহনা : একেবারে প্রথমদিকে আমি গানের চর্চা শুরু করি আমার বড় বোনের কাছে। এরপর আমি ওস্তাদ ভরত চন্দ্রের কাছে তালিম নিই। পরবর্তী সময়ে আমিনুল ইসলামের কাছে তালিম নিই আধুনিক গানের। আর এখন আমি গান শিখছি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সাবেক বিভাগীয় প্রধান আকলিমা ইসলাম কুহেলীর কাছে।

দ্য রিপোর্ট : নাটকের গান করা হয়?

মোহনা : ‘এইতো তুমি’ নামের একটি নাটকের গানের কাজ করলাম সম্প্রতি। গানটির কথা ও নাটকের শিরোনামই ‘এইতো তুমি’। কথা চলছে আরও কয়েকটি কাজের। দেখা যাক, কি হয়!

দ্য রিপোর্ট : পড়াশোনা ও পরিবারের কথা বলুন…

মোহনা : বাবা-মা, ভাই-বোন মিলে একটি হাসিখুশি পরিবারে বেড়ে উঠেছি। দু’বোন এক ভাইয়ের মধ্যে আমিই সবার ছোট। এখন ও লেভেলের শিক্ষার্থী আমি। পড়াশোনাটা কন্টিনিউ করতে চাই।

দ্য রিপোর্ট : পরিবারের কাছে কেমন সহযোগিতা পাচ্ছেন?

মোহনা : পরিবারের আন্তরিক সহযোগিতা না থাকলে আমি এতদূর আসতে পারতাম না। বিশেষ করে আমার বোন জামাই আব্দুস সালাম মামুন ও মায়ের পরিশ্রম উল্লেখ করার মতো। আমাকে নিয়ে তাদের ভাবনা ও উৎসাহ ছিল বরাবরই। আমার বাবা পেশায় একজন সাংবাদিক। তার অবদান বলে শেষ করা যাবে না। তিনি সিরাজগঞ্জেই থাকেন। স্থানীয় একটি পত্রিকার পাশাপাশি জাতীয় একটি পত্রিকার সঙ্গেও সম্পৃক্ত তিনি। সে জন্যেই সাংবাদিক ভাই-বন্ধুদের প্রতি আমার ও আমার পরিবারের আলাদা একটা সম্মান কাজ করে। কাজ শুরু করার পর থেকে পরিবারের পাশাপাশি পেয়েছি গণমাধ্যমের ভাইয়াদের উৎসাহ ও ভালোবাসা।

দ্য রিপোর্ট : একক অ্যালবামের খবর কি?

মোহনা : একক অ্যালবামের কাজ শুরু করেছি মাত্র। একটু সময় নিয়ে করতে চাচ্ছি কাজটা। বেলাল খানের তত্ত্বাবধানে এই অ্যালবামটি হয়ত এ বছরই প্রকাশ পাবে। তবে নাম ঠিক করিনি এখনও।

দ্য রিপোর্ট : আপনার গাওয়া গান ও ব্যস্ততা সম্পর্কে বলুন…

মোহনা : গত বছর প্রকাশিত বেলাল খানের প্রথম একক ‘আলাপন’-এ ‘একমুঠো স্বপ্ন’ শিরোনামের দ্বৈত গানটিতে কণ্ঠ দেই। আমার জীবনের প্রথম মৌলিক গানটি এতটা সাড়া ফেলবে ভাবিনি। এ বছর প্রকাশিত জনি খন্দকারের একক ‘সূচনা’য় ‘তুমি আমার’ শিরোনামের একটি গানে কণ্ঠ দিয়েছি। কাজী শুভর মিক্সড ‘মনেরই আকাশ’-এ বেলাল খানের সঙ্গে কণ্ঠ দিয়েছি ‘তুমি আছো বলে’ গানটিতে। জেকের মিক্সড ‘ইচ্ছেডানা’য় তানভীর শাহীনের সঙ্গে গেয়েছি ‘দিশেহারা’ গানটি। প্রকাশের অপেক্ষায় থাকা ইলিয়াস ও জীবন খানের একক অ্যালবামেও একটি করে দ্বৈত গান প্রকাশ পাবে আমার।

দ্য রিপোর্ট : ক্ষুদে গানরাজ সম্পর্কে মূল্যায়ন?

মোহনা : ২০১১ সালের ‘মেরিডিয়ান-চ্যানেল আই ক্ষুদে গানরাজ’ প্রতিযোগিতায় সেরা ১২তে ছিলাম। সিরাজগঞ্জের মেয়ে মোহনাকে মানুষ এই আয়োজনের মধ্য দিয়েই চিনেছে। আমি মনে করি, সংগীতের প্রতিভা অন্বেষণে এ রকম প্রতিযোগিতার প্রয়োজন আছে। ‘ক্ষুদে গানরাজ’ দিয়ে উঠে আসা অনেকেই এখন ভালো কাজ করছেন।

দ্য রিপোর্ট : এ সময়ে কাদের কাজ ভালো লাগে?

মোহনা : অনেকের কাজই ভালো লাগে। কেউ ভালো গাইছেন। কেউ ভালো কম্পোজিশন করছেন। তবে, হাবিব ওয়াহিদ আমার অলটাইম ফেভারিট। বেলাল খানের কাজগুলোও ভালো লাগে আমার।

দ্য রিপোর্ট : গান গেয়ে কোনো প্রাপ্তি?

মোহনা : গান গেয়ে পেয়েছি পরিচিতি ও শ্রোতাদের ভালোবাসা। অনেক দূরের পথ পাড়ি দিতে হবে আমাকে। অনেক কিছুই পাবার আছে। বুঝে-শুনে তাই এগোতে চাই। তবে, নজরুলগীতিতে শিশুশিল্পী হিসেবে ২০০৬ এবং ২০০৯ সালে দু’বার জাতীয় পুরস্কার পেয়েছি। আপাতত এতটুকুই অর্জন।

দ্য রিপোর্ট : গানের বাইরে অন্যকিছু করার ইচ্ছে আছে?

মোহনা : না, তেমন কোনো ইচ্ছে নেই আপাতত। তবে যারা উপস্থাপনা করেন তাদেরকে দেখতে আমার ভালো লাগে। উপস্থাপনার প্রতি একধরনের আকর্ষণ আছে।

দ্য রিপোর্ট : ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কি?

মোহনা : ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা গানকে ঘিরেই। ভবিষ্যতে দেশের বাইরে গিয়ে সংগীতের ওপর উচ্চতর ডিগ্রি নেওয়ার ইচ্ছে আছে আমার।

(দ্য রিপোর্ট/এআর/এপি/এএল/ফেব্রুয়ারি ১৮, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জলসা ঘর এর সর্বশেষ খবর

জলসা ঘর - এর সব খবর