thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৪ মে 24, ২০ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৫ শাওয়াল 1445

‘চলচ্চিত্র মন্ত্রণালয় করা দরকার’

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ১৯ ১৪:৩৫:১৩
‘চলচ্চিত্র মন্ত্রণালয় করা দরকার’

ইসহাক ফারুকী, দ্য রিপোর্ট : বিএফডিসি’র (বাংলাদেশ চলচ্চিত্র উন্নয়ন করপোরেশন) ২ নম্বর ফ্লোরে শুটিংয়ের ফাঁকে কথা হয় পরিচালক বদিউল আলম খোকনের সঙ্গে। তিনি ২৮ বছর ধরে চলচ্চিত্রাঙ্গনে আছেন। সহকারী পরিচালক থেকে পরিচালক হয়েছেন। নানা প্রসঙ্গে কথা বলেন তিনি।

আপনার শুরুটা কবে?

১৯৮৬ সালে চাষী নজরুল ইসলামের ‘মিয়া ভাই’ চলচ্চিত্রের সহকারী পরিচালক হিসেবে কাজ শুরু করি। এরপর টানা ১৬ বছর স্বনামধন্য পরিচালকদের সহকারী ছিলাম। এদের মধ্যে ছিলেন এমএম সরকার, সোহানুর রহমান সোহান, নাসির খান চৌধুরী এবং মুস্তাফিজুর রহমান বাবু।

পরিচালনায় এলেন কবে?

২০০০ সালে মান্না, মুনমুনকে নিয়ে ‘দানব’ চলচ্চিত্র নির্মাণ করি। নাম ভূমিকায় ছিলেন মিশা সওদাগর। এই চলচ্চিত্রের মধ্য দিয়ে মিশাকে ফুল ফ্লেজেড ভিলেন হিসেবে দর্শকদের সামনে হাজির করি। এখন নির্মাণ করছি ক্যারিয়ারের ২৭ নাম্বার চলচ্চিত্র ‘হিরো-দ্য সুপারস্টার’।

প্রত্যেক পরিচালকেরই নিজস্ব ধারা আছে

আমি মূলত অ্যাকশধর্মী চলচ্চিত্র নির্মাণ করি। তবে রোমান্টিক অ্যাকশনও নির্মাণ করেছি। উল্লেখযোগ্য চলচ্চিত্রগুলোর মধ্যে প্রিয়া আমার প্রিয়া, মাই নেম ইজ খান, নাম্বার ওয়ান শাকিব খান অন্যতম।

আপনার বেশির ভাগ চলচ্চিত্রই সুপারহিট, এর কারণ কী?

দর্শকদের ভালোবাসা, আল্লাহর রহমত এবং পেশার প্রতি শতভাগ শ্রদ্ধা ও সম্মান।

বর্তমানের পরিচালকরা কেমন করছেন?

আমাদের এখানে অনেক মেধাবী পরিচালক আছেন, যারা তাদের মেধার শতভাগ প্রয়োগ করেন। কিন্তু বিএফডিসিতে কোনো ভালো যন্ত্রপাতি নেই। বাইরে থেকে ভাড়া করে সবকিছুই আনতে হয়। আবার ধরুন, একটি মারপিটের দৃশ্য করতে নিজের মেধা খাটিয়ে কাজ করতে হয়। আধুনিক কোনো প্রযুক্তি বিএফডিসিতে নেই। যদি থাকত, তাহলে মেধাবী পরিচালকরা হলিউডের মত চলচ্চিত্র নির্মাণ করতে পারতেন।

তাহলে আমরা বলতে পারি চলচ্চিত্রে বেহালদশা বিরাজ করছে?

অবশ্যই। বাংলাদেশের চলচ্চিত্র বড় অবহেলিত। সরকারের এ নিয়ে কোনো মাথাব্যথা নেই। বিএফডিসিতে বড় বড় পদে যে সব লোক বসায়, তাদের দিয়ে কোনো লাভ হচ্ছে না। তারা নাটক ও অন্যান্য বিষয়ের দিকেই বেশি নজর দেন। চলচ্চিত্র নিয়ে ভাববার সময় নেই। আমি মনে করি, চলচ্চিত্র মন্ত্রণালয় করা দরকার।

চলচ্চিত্রে বাজেট সঙ্কট আছে নাকি?

চলচ্চিত্রে বাজেট অনেক বড় ব্যাপার। একটি ভালো, আধুনিক প্রযুক্তিসম্পন্ন চলচ্চিত্র বানাতে যে পরিমাণ অর্থ প্রয়োজন, সেটা শাকিব খানের মত প্রযোজকের থাকতে পারে। কিন্তু অনেকের নেই। কেউ যদি দেড় কোটি টাকা খরচ করে কোনো চলচ্চিত্র বানায়, সেখানে পঞ্চাশ লাখও ওঠে আসে না। তবে কেন রিস্ক নেবে। তাও একবার, দুইবার রিস্ক নেওয়া যায়। যদি পর পর তিনবার লোকসান হয়, তাহলে তো আর…। আরেকটা বড় সমস্যা পাইরেসি। সরকার এখনও পাইরেসি রোধ করতে পারেনি। আসলে সরকারের আগ্রহই নেই।

এ বিষয়ে বিএফডিসি বা এর ব্যবস্থাপনা পরিচালক কী করছেন?

পীযূষ বন্দ্যোপাধ্যায় আমাদের জন্য কোনো সুখের বার্তা নিয়ে আসেননি। সরকার বাজেটে ৫৯ কোটি টাকা দিয়েছিল। উনি ব্যবহার করেননি। বিএফডিসি’র দেয়াল রং করা নেই, মেশিনপত্র নেই, নোংরা পরিবেশ সৃষ্টি হয়ে আছে। উনি এগুলো দেখেন না? আরে ১০টি ক্যামেরা কিনলেও তো হয়। সরকার ডিজিটাল বাংলাদেশ ঘোষণা দিয়েছে। কিন্তু বিএফডিসিতে ডিজিটালের ‘ডি’ও নেই। ডিজিটালের সবচেয়ে বড় বিষয় হচ্ছে ডিজিটাল সাউন্ড। সেটাই তো বিএফডিসিতে নেই।

তারপরও ডিজিটাল চলচ্চিত্র নির্মিত হচ্ছে?

অনেক সিনেমা হলে প্রযোজকরা প্রজেক্টর ভাড়া দেন। হলের মালিকরা প্রজেক্টর কেনেন না। থার্টি ফাইভের সময় মেশিন কিনেছিলেন, কিন্তু এখন কেন প্রযোজকরা প্রজেক্টর দেবে? সরকার এটাও ইচ্ছে করলে ঠিক করতে পারে। সরকার আগে ঠিক করবে, একটা হল ডিজিটালাইজেশন করতে কত খরচ হয়? ধরলাম দশ লাখ। এই টাকা হল মালিকদের দেওয়ার পর বলা হবে, তোমাকে ৬ মাস বা এক বছর সময় দেওয়া হল। হল ডিজিটালাইজেশন কর, তা না হলে এক বছর পর হলের লাইসেন্স বাতিল করা হবে।

সরকার তো চলচ্চিত্রকে শিল্প হিসেবে ঘোষণা করেছে

শিল্প কথাটা লিখতে তিনটি বর্ণ হলেই হয়। মুখে শুধু শিল্প বললেই হল নাকি, কোনো সুযোগ-সুবিধা তো পাচ্ছি না।

ঢাকার বাইরের হলগুলোর কী অবস্থা?

‘মাই নেম ইজ খান’ চলচ্চিত্রটি চলছে। বরিশালের বিউটি সিনেমা হলের সামনে হাঁটু সমান পানি, লোকজন কীভাবে সিনেমা হলে যাবে? হলের পরিবেশই তো ঠিক নেই। এ জন্যই তো অপরাধ বেশি হচ্ছে।

অপরাধ বেশি হচ্ছে কীভাবে?

মানুষ যদি সিনেমা হলে গিয়ে ছবি দেখে, তবে সে কখন অপরাধ করবে। বিনোদন না পেলে তো উল্টাপাল্টা অনেক কিছু মাথায় আসবেই। চলচ্চিত্র সমাজের উন্নয়ন করে। কোনো খারাপ প্রতিফলন থাকে না।

(দ্য রিপোর্ট/আইএফ/এজেড/এইচএসএম/সা/ফেব্রুয়ারি ১৯, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জলসা ঘর এর সর্বশেষ খবর

জলসা ঘর - এর সব খবর