thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি 25, ২৮ পৌষ ১৪৩১,  ১১ রজব 1446

বেনাপোল ও কুমিল্লায় দুই বাংলার মিলনমেলা

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ২১ ১৬:৫২:১০
বেনাপোল ও কুমিল্লায় দুই বাংলার মিলনমেলা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উপলক্ষ্যে শুক্রবার যশোরের বেনাপোল ও কুমিল্লায় একত্র হয়েছিল দুই বাংলার বাংলা ভাষাভাষীরা। এ সময় অঞ্চলগুলোর নোম্যান্সল্যান্ড এলাকায় অস্থায়ী শহীদ মিনার তৈরি করে পুষ্পস্তবক অর্পণ ও অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।

বেনাপোল ও কুমিল্লা থেকে আমাদের প্রতিনিধিদের পাঠানো খবর :

বেনাপোল (যশোর) : মহান শহীদ দিবস ও আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবস উদযাপন উপলক্ষে যশোরের বেনাপোল চেকপোস্টের নোম্যান্সল্যান্ডে শুক্রবার সকালেই একত্রিত হন দুই বাংলার ‘বাংলা ভাষাভাষী’ মানুষ।

‘একই আকাশ একই বাতাস, দুই বাংলার মানুষের ভাষা এক। আমরা বাংলা ভাষায় কথা বলি। তাই তো বারবার ছুটে আসি বাংলাভাষী মানুষের পাশে।’ এমন আবেগ নিয়েই ভারত থেকে অসংখ্য বাঙালী ছুটে আসেন এখানে।

নোম্যান্সল্যান্ডে স্থাপিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে পুষ্প অর্ঘ্য অর্পণের মধ্য দিয়ে প্রতি বছরের মতো এবারও ভাষা শহীদদের স্মৃতির প্রতি সম্মান জানানো হয়।

উভয় দেশের জনপ্রতিনিধিরা অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে সৌহার্দ্য ও সম্প্রীতির কথা ব্যক্ত করেন। এ ছাড়া উভয় দেশের বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠনগুলো স্বতঃস্ফূর্তভাবে অংশ নেয়।

অনুষ্ঠান উপলক্ষ্যে নানা রংয়ের ফেস্টুন, ব্যানার, প্ল্যাকার্ড, ফুল দিয়ে বর্ণিল সাজে সাজানো হয় নোম্যান্সল্যান্ড এলাকা।

অস্থায়ী শহীদ বেদীতে সকাল ৯টার দিকে প্রথমে ফুল দিয়ে শহীদদের প্রতি শ্রদ্ধা জানান পশ্চিমবঙ্গ রাজ্য সরকারের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক, রাজ্যসভার বনগাঁও অঞ্চলের বিধায়ক বিশ্বজিৎ দাস, বনগাঁ পৌর মেয়র জোসনা আরডোর, উওর ২৪ পরগণা জেলা পরিষদের সভাপতি রহিমা মণ্ডল ও ভাইস চেয়ারম্যান গোপাল ব্যানার্জি। বাংলাদেশের পক্ষে যশোরের জেলা প্রশাসক মোস্তাফিজুর রহমান, পুলিশ সুপার জয়দেব ভদ্র, যশোর ২৬ বিজিবি ব্যাটালিয়নের কমান্ডিং অফিসার লে. কর্নেল মতিউর রহমান, উপজেলা নির্বাহী অফিসার শরিফুল আলম, বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন উপস্থিত ছিলেন।

একুশ উদযাপন কমিটির সভাপতি ও বেনাপোল পৌর মেয়র আশরাফুল আলম লিটন বলেন, ‘৫২’র ভাষা সংগ্রামের পথ ধরেই বাংলাদেশের স্বাধীনতা এসেছে। আর এই স্বাধীনতা সংগ্রামে ভারতের জনগণ ও সরকার আমাদের পাশে দাঁড়িয়েছিল। সে জন্য আমরা তাদের প্রতি কৃতজ্ঞ। ১৯৪৮ সাল থেকে শুরু হয়েছে আমাদের ভাষা আন্দোলন। দেশের সন্তানরা জীবন দিয়ে বাংলা ভাষা প্রতিষ্ঠা করেছে।’

পশ্চিমবঙ্গ সরকারের খাদ্যমন্ত্রী জ্যোতিপ্রিয় মল্লিক বলেন, ‘আপনারা ভাষার জন্য জীবন দিয়েছেন। স্বাধীনতার জন্য অকাতরে জীবন বিলিয়ে দিয়েছেন। ভাষা আর স্বাধীনতার জন্য এত ত্যাগের নজির পৃথিবীতে অন্য কারোর নেই। এ জন্য আপনারা গর্বিত জাতি। ভাষার টানে আমরা বাংলাদেশে ছুটে এসেছি একুশ উদযাপন করতে। দু’বাংলার মানুষ একসাথে মাতৃভাষা দিবস পালন করছে দেখে আমি মুগ্ধ হয়েছি। ভবিষ্যতে দু’বাংলার ভাষাপ্রেমীদের সাথে নিয়ে আরও বড় আকারে একুশ উদযাপন করব, এটাই আমার প্রত্যাশা। আজ বাংলা ভাষা সারা বিশ্বে পালিত হচ্ছে। একুশ যেমন দুঃখের দিন, তেমনি গর্বেরও দিন।’

তিনি আরও বলেন, ‘বিধি-বিধানের কারণে আমাদের বাংলা দু’বাংলায় বিভক্ত হয়ে গেছে। এ বেদনা আমরা প্রতিনিয়ত অনুভব করি। একে অপরকে আলিঙ্গন করার ইচ্ছা আছে কিন্তু মাঝখানে সীমারেখার কারণে তা সম্ভব হয় না। আমরা দুই দেশের সরকারের কাছে দাবি জানাচ্ছি, আগামী দিনে একই মঞ্চে বসে যাতে এই অনুষ্ঠান করতে পারি তার জন্য ব্যবস্থা নিন।’

কুমিল্লা : আন্তর্জাতিক মাতৃভাষা দিবসে কুমিল্লার বিবির বাজার সীমান্তে জিরো পয়েন্টে বাংলাদেশ-ভারত বাংলা ভাষাভাষীদের সংগঠন ‘মোহনা সাংস্কৃতিক গোষ্ঠি’, সোনামুড়া নগর ও কাঠালিয়া নগর পঞ্চায়েতের উদ্যোগে দুই বাংলার মিলনমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে।

অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি ছিলেন ভারতের বিধানসভার সদস্য শ্যামল চক্রবর্তী। নগর পঞ্চায়েত নারায়ণ চক্রবর্তীর সভাপতিত্বে আরও উপস্থিত ছিলেন ত্রিপুরার ডিএম কৃষ্ণ দুলাল চৌধুরী। বাংলাদেশের পক্ষে কুমিল্লা সদর দক্ষিণ উপজেলার ভাইস চেয়ারম্যান ও মোহনা স্বাংস্কৃতিক গোষ্ঠির সাধারণ সম্পাদক আব্দুল হাই বাবলু, ভাষা সৈনিক আলী তাহের মজুমদার, সমাজকর্মী পাপড়ী বোস, আশোক বড়ুয়া, নগর পঞ্চায়েত আবু তাহের উপস্থিত ছিলেন।

বিবির বাজার স্থল বন্দর দিয়ে শুক্রবার সকালে একুশের ব্যানার ও ফুল নিয়ে বাংলাদেশের অতিথিরা প্রবেশ করলে ভারতের ত্রিপুরা অঞ্চলের বিভিন্ন স্কুলের ছাত্র-ছাত্রীরা তাদের ফুল দিয়ে স্বাগত জানায়। এরপর ওপারে নির্মিত অস্থায়ী শহীদ মিনারে দু’বাংলার লোকজন ফুল দেন।

(দ্য রিপোর্ট/জেএইচ-জেপি/এফএস/এসকে/ফেব্রুয়ারি ২১, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর