thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ১৬ জানুয়ারি 25, ৩ মাঘ ১৪৩১,  ১৬ রজব 1446

সিলেট শহীদ মিনারে হামলা

এক বছরে কেবল চার্জশিট প্রদান

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ২২ ২৩:৪৪:৫২
এক বছরে কেবল চার্জশিট প্রদান

সিলেট অফিস : সিলেটবাসীর অন্তরে লাগা ক্ষতের যন্ত্রণা শুকায়নি আজও। এ যন্ত্রণা প্রতিনিয়ত তাড়িয়ে বেড়াচ্ছে নগরীর চৌহাট্টা থেকে জিন্দাবাজারগামী হাজারও প্রগতিশীল প্রাণে। সিলেটের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারে ‘তৌহিদী জনতা’র ব্যানারে জামায়াত-শিবিরের হামলা ও ভাষা শহীদদের প্রতি দেওয়া শ্রদ্ধাঞ্জলী তছনছের এক বছর পার হলো শনিবার।

সিলেটের সংস্কৃতিকর্মীরাও চান না এ ক্ষত শুকিয়ে যাক, যতক্ষণ না অপরাধীদের শাস্তি দেওয়া হচ্ছে। তাই তারা ওই অপরাধীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিও করছেন।

সিলেট মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরিক্ত উপ-কমিশনার মুহাম্মদ রহমত উল্লাহ দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘একুশের প্রথম প্রহর ও ২২ ফেব্রুয়ারিকে সামনে রেখে এসএমপি বিশেষ নিরাপত্তাব্যবস্থা নেয়। তিন স্তরের নিরাপত্তাব্যবস্থার পাশাপাশি আলোচিত কিছু সংগঠন ও নেতাদেরও নজরদারিতে রাখা হয়।’

তিনি বলেন, কেন্দ্রীয় শহীদ মিনার ভাঙচুরকারীদের বিরুদ্ধে দায়ের করা দুটি মামলাই আদালতে বিচারাধীন।

২০১৩ সালের ২২ ফেব্রুয়ারি সিলেট নগরীতে জুমার নামাজের পর ব্লগে ধর্ম অবমাননার প্রতিবাদে ইসলামী ও সমমনা ১২ দলসহ বিভিন্ন ইসলামী সংগঠনের ব্যানারে কয়েক হাজার কর্মী কোর্ট পয়েন্টে জমায়েত হয়। সেখানে সমাবেশ করে তারা শহীদ মিনারে গিয়ে হামলা চালায়। তারা শহীদ মিনারের প্রধান ফটক, নিরাপত্তাবেষ্টনী ভেঙে উপড়ে ফেলে। আগের রাতে একুশে ফেব্রুয়ারিতে শহীদদের স্মৃতির প্রতি সিলেটবাসীর দেওয়া শ্রদ্ধাঞ্জলিও তছনছ করে তারা।

একপর্যায়ে শহীদ মিনারসংলগ্ন ট্রাস্ট ব্যাংকেও আগুন দেয় তারা। পাশাপাশি পুলিশের গাড়িতেও আগুন লাগানো হয়। দেই পক্ষের সংঘর্ষে জিন্দাবাজার থেকে চৌহাট্টা পর্যন্ত রণক্ষেত্রে পরিণত হয়। পরে পুলিশ কাঁদানে গ্যাস, সাউন্ড গ্রেনেড ও শটগানের গুলি ছুড়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনে। সংঘর্ষে কমপক্ষে অর্ধশতাধিক আহত ও তিনজন নিহত হন।

ওই ঘটনায় পুলিশ বাদী হয়ে কোতোয়ালি থানায় ৮৪ জনকে আসামি করে দুটি মামলা দায়ের করে। ইতোমধ্যে মামলা দুটির একটিতে ৮৪ জন ও অপরটিতে ৯৪ জনকে আসামি করে আদালতে চার্জশিট দিয়েছে পুলিশ।

সিলেটের শহীদ মিনারে হামলার পরই উত্তপ্ত হয়ে ওঠে পুরো সিলেট। দাবি ওঠে প্রকৃত হামলাকারীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির। কিন্তু এক বছরেও মামলার চার্জশিট প্রদান ছাড়া আর কোনো অগ্রগতি চোখে পড়েনি সিলেটবাসীর।

সিলেটের সম্মিলিত নাট্য পরিষদের সাধারণ সম্পাদক রজত কান্তি গুপ্ত জানান, বর্বরোচিত হামলার এক বছরে চার্জশিট প্রদান ছাড়া আর কোনো অগ্রগতি নেই।

তিনি বলেন, ‘যতদিন হামলাকারী জামায়াত-হেফাজতিদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি না হচ্ছে, ততদিন আমাদের আন্দোলন চলবে।’

তিনি সরকারের প্রতি বর্বরোচিত ওই হামলার মামলাটিকে বিশেষ নজর দিয়ে দোষীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিত করার দাবি জানান।

সিলেট কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের পাহারাদার ও মুক্তিযোদ্ধার সন্তান দুদু মিয়া জানান, ঘটনার দিন জামায়াতের লোকজন শহীদ মিনার ভাঙচুরের চেষ্টা চালালে তিনি বাধা দেন। এতে ক্ষিপ্ত হয়ে তাকে মারপিট করা হয়। আহত দুদু মিয়া হামলাকারীদের সর্বোচ্চ শাস্তি নিশ্চিতের দাবি জানান।

সিলেট সিটি কর্পোরেশনের মেয়র আরিফুল হক চৌধুরী বলেন, শহীদ মিনার আমাদের চেতনার স্থান। শহীদ মিনারে হামলাকারী প্রকৃত দোষীদের চিহ্নিত করে শাস্তির আওতায় আনা দরকার। স্পর্শকাতর এ বিষয়ে রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি পাল্টে প্রকৃত দোষীদের শাস্তি নিশ্চিত করারও দাবি জানান তিনি।

(দ্য রিপোর্ট/এমজেসি/এমএইচও/এমএআর/এজেড/ফেব্রুয়ারি ২৩, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর