thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১১ জানুয়ারি 25, ২৮ পৌষ ১৪৩১,  ১১ রজব 1446

যশোরের ৪ উপজেলা

বিদ্রোহী প্রার্থীর অনলে পুড়ছে আওয়ামী লীগ

২০১৪ ফেব্রুয়ারি ২৪ ১৫:২৪:১৪
বিদ্রোহী প্রার্থীর অনলে পুড়ছে আওয়ামী লীগ

আহসান কবীর, যশোর : প্রথম দফার মতো দ্বিতীয় দফা নির্বাচনেও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের অনলে পুড়ছে আওয়ামী লীগ। যার উত্তাপ পড়েছে যশোর আওয়ামী লীগেও।

২৭ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত হবে যশোরের চার উপজেলায় নির্বাচন। এ সব উপজেলাগুলো হলো- শার্শা, ঝিকরগাছা, বাঘারপাড়া ও চৌগাছা। এর মধ্যে দুই উপজেলায় চেয়ারম্যান ও ভাইস চেয়ারম্যান পদে লড়ছেন আওয়ামী লীগের একাধিক প্রার্থী। দল থেকে বহিষ্কার করেও ‘বিদ্রোহী’ প্রার্থীদের নিবৃত করতে পারছে না দলটি।

তবে বিএনপির নেতৃত্বাধীন ১৯ দলীয় জোট সমর্থিত একক প্রার্থী লড়ছেন প্রত্যেক উপজেলায়। ফলে সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন এ সব প্রার্থী। এ কথা স্বীকার করছেন খোদ জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতিও।

এর আগে ১৯ ফেব্রুয়ারি অনুষ্ঠিত যশোর অভয়নগর উপজেলায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত একক প্রার্থী হওয়া সত্ত্বেও রবিন অধিকারী ব্যাচা বিপুল ভোটের ব্যবধানে পরাজিত হন বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী নূরুল হক মোল্যা বাঘার কাছে।

২৭ ফেব্রুয়ারি যশোরের শার্শা, ঝিকরগাছা, বাঘারপাড়া ও চৌগাছা উপজেলা পরিষদ নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে। এই উপজেলাগুলোর মধ্যে শুধু চৌগাছায় আওয়ামী লীগ সমর্থিত একক চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন- এসএম হাবিবুর রহমান।

অন্য তিন উপজেলায় দু’জন করে প্রার্থী মাঠে থাকলেও শনিবার রাতে বাঘারপাড়ায় চেয়ারম্যান প্রার্থী মঞ্জুর রশিদ স্বপন সরে দাঁড়ান। তিনি জানান, দলের নেতাদের চাপে নির্বাচন থেকে সরে দাঁড়াতে বাধ্য হয়েছেন।

বাঘারপাড়ায় বিএনপি সমর্থিত চেয়ারম্যান প্রার্থী মশিউর রহমান। দলের উপজেলা কমিটির সভাপতি টিএস আইয়ুব বলেন, আওয়ামী লীগের বিভক্তির ফলে বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীর জয় অনেক সহজ হয়ে গেছে।

শার্শা উপজেলা চেয়ারম্যান পদে আওয়ামী লীগ সমর্থিত প্রার্থী বর্তমান উপজেলা চেয়ারম্যান আবদুল মান্নান মিন্নু। ১১ ফেব্রুয়ারি দলের জেলা কমিটি বৈঠক করে মিন্নুকে তাকে চেয়ারম্যান প্রার্থী ঘোষণা দেয়া হয়। কিন্তু দলের এই সিদ্ধান্ত মানেনি যশোর- ১ (শার্শা) আসনের সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আফিলউদ্দিন অনুসারীরা। তারা চেয়ারম্যান পদে প্রার্থী হিসেবে ঘোষণা দেন সিরাজুল ইসলাম মঞ্জুকে। দু’প্রার্থীই অনুসারীদের নিয়ে ভোটের মাঠে রয়েছেন।

এদিকে ১৯ ফেব্রুয়ারি জেলা কমিটি যে দশ নেতাকে দল থেকে বহিষ্কার করে তার মধ্যে শার্শায় চেয়ারম্যান পদে প্রতিদ্বন্দ্বিতাকারী সিরাজুল ইসলাম মঞ্জুসহ চার নেতা রয়েছেন। দল থেকে বহিষ্কৃত হওয়ার পরও সিরাজুল ইসলাম মঞ্জু নির্বাচনী প্রচার-প্রচারণা চালিয়ে যাচ্ছেন জোরেশোরে। ফলে শার্শা আওয়ামী লীগ এখন স্পষ্টত দু’ভাগে বিভক্ত। ইতোমধ্যে দুই চেয়ারম্যান প্রার্থীর মধ্যে একদফা সংঘর্ষও হয়েছে।

এই উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত একক চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন- শার্শা বিএনপির সভাপতি খায়রুজ্জামান মধু। ফলে তিনি সুবিধাজনক অবস্থানে রয়েছেন বলে দাবি করেছেন তার সমর্থকরা।

ঝিকরগাছা উপজেলায় চেয়ারম্যান প্রার্থী হয়েছেন আওয়ামী লীগের দুই নেতা। এদের মধ্যে জেলা কমিটির মনোনয়নপ্রাপ্ত প্রার্থী হলেন বর্তমান ভাইস চেয়ারম্যান মনিরুল ইসলাম। কিন্তু সাবেক সংসদ সদস্য শেখ আফিলউদ্দিনের আশীর্বাদ নিয়ে প্রার্থী হয়েছেন মুসা মাহমুদ। তার পক্ষে আফিলউদ্দিন ছাড়াও ঝিকরগাছা পৌরসভার মেয়র মোস্তফা আনোয়ার পাশা জামালসহ অনেকেই রয়েছেন। ফলে দলীয় ভোট বিভক্ত হয়ে পড়েছে দুই ভাগে।

তবে এই উপজেলায় বিএনপি সমর্থিত একক চেয়ারম্যান প্রার্থী হলেন- সাবিরা নাজমুল। তিনি ঝিকরগাছা বিএনপির সাবেক সভাপতি নাজমুল ইসলামের স্ত্রী। বছর দুয়েক আগে রাজধানীর ধানমন্ডি এলাকা থেকে অজ্ঞাত ব্যক্তিরা নাজমুলকে অপহরণ করে নিয়ে যায়। পরদিন ভোরে জয়দেবপুরে শালবাগান থেকে তার মৃতদেহ উদ্ধার হয়। তরুণ নেতা নাজমুলের বিধবা স্ত্রী হিসেবে ভোটারদের সহানুভূতি কুড়ানোর চেষ্টা করছেন।

এ ব্যাপারে জেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি আলী রেজা রাজু বলেন, দলের একাধিক প্রার্থী হওয়ায় প্রতিদ্বন্দ্বী বিএনপি সমর্থিত প্রার্থীরা সুবিধা পেয়ে যাচ্ছেন। ২/১ দিনের মধ্যে বিদ্রোহী প্রার্থীদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের নিবৃত করার চেষ্টা করবেন বলে জানান তিনি।

জেলা বিএনপির সাধারণ সম্পাদক অ্যাডভোকেট সৈয়দ সাবেরুল হক সাবু মনে করেন, আওয়ামী লীগের দ্বিধাবিভক্তি তো আছেই, তাদের গণবিরোধী কর্মকাণ্ডের কারণেও ভোটাররা ১৯ দল সমর্থিত প্রার্থীদের ভোট দেবে।

(দ্য রিপোর্ট/একে/এসবি/আরকে/ ফেব্রুয়ারি ২৪, ২০১৪)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর