thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ১৪ জুন 25, ৩১ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩২,  ১৭ জিলহজ 1446

এরশাদের নেতৃত্বে ৭০ দলের ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’

২০১৭ মে ০৪ ১৬:১৭:৪৯
এরশাদের নেতৃত্বে ৭০ দলের ‘সম্মিলিত জাতীয় জোট’

সাগর আনোয়ার, দ্য রিপোর্ট : আগামী ৭মে আত্মপ্রকাশ ঘটতে যাচ্ছে জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে নতুন রাজনৈতিক জোটের। দেশের ইতিহাসে সর্ববৃহৎ এই রাজনৈতিক জোটের সদস্য দল ৭০টি। তবে জোটের একমাত্র নিবন্ধিত দল হচ্ছে উদ্যোক্তা জাতীয় পার্টিই। সম্মিলিত জাতীয় জোট- ইউএনএ নামক এই জোটের একটি দলেরও নিবন্ধন নেই।

জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যানের প্রেস এন্ড পলিটিক্যাল সেক্রেটারি সুনীল শুভরায় জানান, ৭ মে সকাল ১১টায় জাতীয় প্রেস ক্লাব মিলনায়তনে এক সংবাদ সম্মেলনে এই জোটের আনুষ্ঠানিক ঘোষণা দেবেন জাতীয় পার্টির চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ।

তবে শুরু থেকেই প্রিন্সিপাল মাওলানা হাবিবুর রহমান এর নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ খেলাফত মজলিস, আল্লামা আব্দুল লতিফ নেজামীর নেতৃত্বাধীন ইসলামী ঐক্যজোট, বাংলাদেশ ইসলামী ফ্রন্টকে জাতীয় পার্টি জোটভূক্ত হওয়ার জন্য অনুরোধ জানালেও তারা মজলিসে শুরার কথা বলে অপারগতা জানান।

ইসলামী ঐক্যজোটের মহাসচিব মুফতি ফয়জুল্লাহ বুধবার দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘রাজনৈতিক দল হিসেবে আমরা সকল দলের সঙ্গে সৌহার্দ্যপূর্ণ সম্পর্কে বিশ্বাসী। তবে জোট আমরা করছি কি করছি না তা নির্ভর করছে আমাদের দলের সর্বোচ্চ নীতি নির্ধারণী ফোরাম মজলিসে শূরার সদস্যদের মতামতের উপর। শুরার বৈঠকের পরই সিদ্ধান্ত জানানো হবে। তবে এখনই শূরার বৈঠকের সম্ভাবনাও নেই।’

জাতীয় পার্টির সূত্র জানায়, এ বছরের ৩০ মার্চ জাতীয় প্রেস ক্লাবে জাতীয় পার্টির নেতৃত্বাধীন জোটে সে সময় ৩৪টি দল জোটভুক্ত হয়েছিল। নতুন করে লেবার পার্টির একাংশের চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনির নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ জাতীয় জোট- বিএনএ এর ২১ রাজনৈতিক দল ও সাংবাদিক সালাম মাহমুদ এর নেতৃত্বাধীন ১৫ দলীয় যুক্তফ্রন্টও ৭ মে এরশাদের নেতৃত্বাধীন জোটে যোগ দিবেন। এতে জোটের সদস্য দল হবে ৭০টি। নতুন জোটের নামকরণ করা হচ্ছে সম্মিলিত জাতীয় জোট- ইউএনএ।

এ বিষয়ে বাংলাদেশ জাতীয় জোট- বিএনএ চেয়ারম্যান সেকেন্দার আলী মনি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘আমরা ২১টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে বিএনএ জোট এরশাদের নেতৃত্বে ঐক্যবদ্ধ হচ্ছি। ৭ মে জোট ঘোষণা করা হবে। আমাদের জোটের কোনো দলের নিবন্ধন নেই।’

এ ব্যাপারে জাতীয় পার্টি ঢাকা মহানগর দক্ষিণের সভাপতি সৈয়দ আবু হোসেন বাবলা এমপি দ্য রিপোর্টকে বলেন, ‘দেশে জোটের রাজনীতির প্রতি সাধারণ মানুষের আগ্রহ আছে। কোন দলের কত ভোট আছে সেটি মূল কথা নয়, দেশের মানুষ দেখতে চায় এরশাদের সঙ্গে কয়টি দল আছে। ২০-দলীয় জোট ও ১৪-দলীয় জোটের বেশিরভাগ শরিক দলের জনভিত্তি নেই। তারপরও শেখ হাসিনা ও খালেদা জিয়া জোটের রাজনীতিকে গুরুত্ব সহকারে দেখেন। আমরাও দেখবো।’

৩০ মার্চ এরশাদের নেতৃত্বাধীন জোটের দলগুলো ছিল গণ ইসলামিক জোট, পিপলস জাস্টিস পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক ফেডারেশন, বাংলাদেশ ইসলামিক লিবারেল পার্টি, জাতীয় শরিয়া আন্দোলন, জাতীয় গণতান্ত্রিক লীগ, বাংলাদেশ জনতা পার্টি, বাংলাদেশ ইসলামী জনকল্যাণ পার্টি, ইউনাইটেড ইসলামিক লীগ, জমিয়তে মুসলিমিন বাংলাদেশ, ন্যাপ-ভাসানী, খেলাফত সংগ্রাম পরিষদ, বাংলাদেশ মানবাধিকার পার্টি, ইসলামী গণ-আন্দোলন, জাতীয় ইসলামী আন্দোলন, জমিয়তুল ওলামা পার্টি, জাতীয় ইসলামিক মুভমেন্ট, খেলাফত আন্দোলন বাংলাদেশ, ইনসানিয়াত পার্টি, খেলাফত বাস্তবায়ন পার্টি, ইসলামী আক্বিদা সংরক্ষণ পার্টি, ইসলামী সংরক্ষণ পার্টি, মুসলিম জনতা পার্টি, খেদমতে খালক পার্টি, ওলামা মাশায়েখ সমন্বয় পরিষদ, ইউনাইটেড ইসলামিক ফ্রন্ট, বাংলাদেশ ইসলামী পার্টি, ইসলামী সমাজ কল্যাণ আন্দোলন, বাংলাদেশ ইত্তেহাদুল মুসলিমিন, বাংলাদেশ খলাফাতুল উম্মাহ, বাংলাদেশ আক্বিমুদ্দিন মজলিস, সোশ্যাল ডেভেলপমেন্ট পার্টি, জমিয়তুল হেদায়াহ মুভমেন্ট। এই দলগুলোর মধ্যে একটিরও নিবন্ধন নেই।

এ ছাড়া সেকেন্দার আলী মনির নেতৃত্বাধীন বিএনএ জোটের মোট ২১টি রাজনৈতিক দল এরশাদের জোটের শরিক হচ্ছে।

অন্যদিকে ১৫টি রাজনৈতিক দলের সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত যুক্তফ্রন্ট বৃহস্পতিবার জোটের এক সভা থেকে হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের নেতৃত্বে সম্মিলিত জাতীয় জোটে যোগদানের চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে। সভায় যুক্তফ্রন্ট জোটের চেয়ারম্যান ও কৃষক শ্রমিক পার্টি- কেএসপি’র সভাপতি লায়ন সালাম মাহমুদ বলেন, হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদের ৯ বছরের শাসনকাল ছিল স্বর্ণযুগ। বর্তমান সরকার বাংলাদেশকে উন্নয়নের রোল মডেল হিসেবে সারাবিশ্বে প্রতিষ্ঠিত করেছে। তাই পল্লীবন্ধুর হাতকে আরো শক্তিশালী করতে ১৫টি দল সমন্বয়ে প্রতিষ্ঠিত যুক্তফ্রন্ট জোট পল্লীবন্ধুর সম্মিলিত জাতীয় জোটে যোগ দেবে।

যুক্তফ্রন্ট জোটের শরিক দলগুলো হচ্ছে- কৃষক শ্রমিক পার্টি- কেএসপি, আঞ্জুমানে তরিকতে সাজ্জাদী, নতুনধারা গণতান্ত্রিক পার্টি- এনজিপি, বাংলাদেশ দেশপ্রেমিক পার্টি- বিডিপি, সম্মিলিত নাগরিক পার্টি, বাঙালি জনতার পার্টি- বিজেপি, বাংলাদেশ জনকল্যাণ পার্টি, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক পার্টি- বিজিপি, জাতীয় গণতান্ত্রিক স্বাধীনতা পার্টি, বাঙালি জাতীয় গণতান্ত্রিক পার্টি, বিশ্বশান্তি মুক্তির গণপরিষদ, বঙ্গপার্টি, বাংলাদেশ কৃষক শ্রমিক ওলামা পার্টি, প্রগ্রেসিভ পার্টি, জাতীয় গণতান্ত্রিক মুক্তি পার্টি। এই জোটের একটি দলেরও নিবন্ধন নেই।

(দ্য রিপোর্ট/সাআ/এপি/মে ০৪, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

M

M

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর