thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ৮ জুলাই 25, ২৩ আষাঢ় ১৪৩২,  ১২ মহররম 1447

সাভারে ইয়েস সদস্যের প্রচেষ্টায় বাল্যবিয়ে পণ্ড

২০১৭ আগস্ট ২৫ ২১:২৯:১৫
সাভারে ইয়েস সদস্যের প্রচেষ্টায় বাল্যবিয়ে পণ্ড

সাভার প্রতিনিধি : সাভারে এক ইয়েস সদস্যের প্রচেষ্টায় ৭ম শ্রেনী পড়–য়া এক স্কুল ছাত্রীর বাল্যবিবাহ রোধ সম্ভব হয়েছে। এ ঘটনার পর ওই স্কুল ছাত্রীর বাবা-মা নিজেদের ভূল বুঝতে পেরেছেন এবং উপযুক্ত বয়সেই মেয়েকে বিবাহ দিবেন বলে অঙ্কিার করেছেন। শুক্রবার (২৫ আগস্ট) দুপুরে সাভারের ভাকুর্তা ইউনিয়নের প্রত্যন্ত অঞ্চল চাইড়া গ্রামে এ বাল্যবিয়ে পন্ডের ঘটনা ঘটে।

বাল্য বিয়ের প্রস্তুতি নেয়া কনে মরিয়ম আক্তার (১৪) একই ইউনিয়নের হারুলিয়া গ্রামের নুরুল ইসলামের মেয়ে। সে মুশুরিখোলা শামসুল হক উচ্চ বিদ্যালয়ের ৭ম শ্রেণীতে পড়াশুনা করছে।

স্থানীয়রা জনায়, পারিবারিকভাবে শুক্রবার ভাকুর্তা এলাকার নুরুল ইসলামরে মেয়ে ৭ম শ্রেণীতে পড়–য়া স্কুল ছাত্রীর সাথে একই এলাকার শহিদুল্লার ছেলে ইলেকট্রেশিয়ান জাকির হোসেন (২৮) এর বিবাহের আয়োজন করা হয়। এরই মধ্যে কনের গায়ে হলুদ সম্পন্ন হয়েছে। আসবাবপত্র দিয়ে মেয়ের ঘর সাজানোর পাশাপাশি গহনা তৈরীর জন্য ছেলেকে দেয়া হয়েছে নগদ এক লক্ষ টাকা। শুক্রবার বিয়ে সম্পন্ন করার জন্য বাড়িতে বর যাত্রীসহ শতাধিক মানুষের খাবারের আয়োজনও করা হয়েছে। কনে গিয়েছে বিউটি পার্লারে সাজার জন্য। বরের অপেক্ষায় বাড়ির সকলে। ঠিক এমন সময়ই এলাকার জনপ্রতিনিধিদের সাথে নিয়ে বিয়ে বাড়িতে হাজির হয় সচেতন নাগরিক কমিটির (সনাক) ইয়েস সদস্য মুক্তা আক্তার মনি। এরপর মেয়ের বাবা-মাকে বাল্য বিয়ের কুফল ও আইনত দন্ডনীয় অপরাধের কথা জানিয়ে বন্ধ করে দেয়া হয় বিয়ের বাকী আয়োজন।

কনের বাবা নুরুল ইসলাম অভিযোগ করেন, আমার মেয়ের বিয়ের বয়স ঠিক আছে। কিন্তু স্কুলে ভর্তির সময় জন্মসনদে বয়স কমিয়ে দেয়া হয়েছিল। এছাড়া এলাকার ভিতরে একটি ভালো ছেলে পেয়ে ধার দেনা করেও মেয়ের বিয়ে দেয়ার সিদ্ধান্ত নেন। কিন্তু হঠাৎ করে বিয়েটি বন্ধ হয়ে যাওয়ায় এলাকায় সুনাম নষ্টের পাশাপাশি লক্ষাধিক টাকা খরচ করে রান্না করা খাবার ফেলে দেয়ার কথাও জানান। মেয়েকে লেখাপড়ার করানোর বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, শুনেছি সরকার মেয়েদের লেখাপড়ার খরচ দেয়। কিন্তু আমাদের এখানকার স্কুলে খরচতো দুরের কথা সময়মতো বেতন পরিশোধ না করতে পারলে পরাশুনা বন্ধ করে দেয়ার হুমকি দেন শিক্ষকরা।

সাভার বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ২য় বর্ষের ছাত্রী ইয়েস সদস্য মুক্তা আক্তার মনি বলেন, আমি একজন শিশু। আজকে যে মেয়েটির বিয়ে দেয়া হচ্ছিল সেও একটি শিশু। আমি শিশুটির বিয়ের কথা শুনেই উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তার সাথে আলোচনা করে স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান, মেম্বারসহ সমাজের সচেতন ব্যক্তিদের সরনাপন্ন হই। পরে তাদেরকে বাল্য বিয়ের নেতিবাচক দিক সম্পর্কে ধারনা দিয়ে বিয়েটি বন্ধ করতে সক্ষম হই। তিনি আরও বলেন, ভাকুর্তা ইউনিয়নের চাইড়া একটি প্রত্যন্ত অঞ্চল হওয়া সত্বেও আমি বাল্য বিয়ের কথা শুনে এখানে ছুটে এসেছি। ভবিষ্যতেও আমার জানা মতে দেশের যেখানেই বাল্য বিয়ের আয়োজন করা হবে সেখানেই প্রতিরোধ গড়ে তুলার অঙ্গিকার ব্যক্ত করেন।

তিনি আরও বলেন, বাল্য বিবাহ একটি সামাজিক ব্যাধি। এর কারনেই দেশে বহু বিবাহ, নারি নির্যাতন ও মাতৃ মৃত্যুর হার বেড়ে গেছে। আমরা সকলে মিলে যদি বাল্য বিয়েকে লাল কার্ড দেখাই তাহলেই এসব সমস্যা থেকে সমাধান পাওয়া যাবে।

(দ্য রিপোর্ট/এজে/আগস্ট ২৫, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর