thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

‘নেতৃত্বের অভাবে ঢাবিতে ছাত্রদলের কর্মী নেই’

২০১৭ আগস্ট ২৭ ১৬:৫৩:৩৯
‘নেতৃত্বের অভাবে ঢাবিতে ছাত্রদলের কর্মী নেই’

নজরুল ইসলাম নাহিদ। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা জাতীয়তাবাদী ছাত্রদলের প্রথম সহসভাপতি। জন্ম টাঙ্গাইলে। ছাত্রদলের রাজনীতির হাতেখড়ি সেখানেই। ওয়ার্ড, জেলা ও সবশেষ ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান হল থেকে রাজনীতির যাত্রা শুরু। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ইংরেজি বিভাগের এই শিক্ষার্থী বঙ্গবন্ধু হল শাখা ছাত্রদলের সহ-দপ্তর হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজনীতি শুরু করেন। এর মধ্যে ২০১২ সালের ১৮ ডিসেম্বর রাজধানীর ইঞ্জিনিয়ার্স ইনস্টিটিউশনে খালেদা জিয়ার মুক্তিযোদ্ধা সমাবেশের প্রাক্কালে ভোরবেলা গ্রেফতার হয়ে জেলে কাটিয়েছেন ৭৪ দিন। এরপর দীর্ঘ প্রায় ১০ বছর ছিল না ছাত্রদলের হল কমিটি। সবশেষ ২০১৬ সালের ৬ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের প্রথম সহসভাপতি হিসেবে মনোনীত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বর্তমান কর্মকাণ্ড, আন্দোলনের সফলতা-ব্যর্থতা, ছাত্রদলের বর্তমান সাংগঠনিক অবস্থা, আগামীতে আন্দোলন সংগ্রামে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখার ভূমিকা কি হতে পারে এমন বিষয় নিয়ে দ্য রিপোর্টের প্রতিবেদক সাগর আনোয়ারের সঙ্গে কথা বলেছেন তিনি। নিচে সাক্ষাৎকারের চুম্বক অংশ তুলে ধরা হলো :

দ্য রিপোর্ট : কমিটি গঠনের পর দীর্ঘ সময় পেরিয়ে গেলেও আপনারা ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মকাণ্ড চালাতে পারছেন না কেন?

নজরুল ইসলাম নাহিদ : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বাংলাদেশের সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান ও রাজনৈতিক ইউনিট। বর্তমান সরকারের মদদপুষ্ট সন্ত্রাসী সংগঠন ছাত্রলীগের কারণে সারাদেশের কোথাও দেশের বৃহত্তম ছাত্রসংগঠন ছাত্রদল স্বাভাবিকভাবে কাজ করতে পারছে না। যেখানে ছাত্রলীগ নিজেদের কর্মীদের হাত কেটে দেয়, পা কেটে দেয়, রাস্তার সাধারণ নাগরিক বিশ্বজিৎকে কুপিয়ে হত্যা করে সেখানে আমাদের প্রতি কী আচরণ হতে পারে আপনিই বলেন!। তার পরও ছাত্রদলের কর্মী ও শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমানের আদর্শ, গণতন্ত্রের স্বার্থে, পদের ও দলের প্রতি দায়বদ্ধতা থেকে সকল বাধা উপেক্ষা করে আমরা বিশ্ববিদ্যালয়ে যাওয়ার চেষ্টা করি। সাধারণ শিক্ষার্থীদের দাবির প্রতি একাত্মতা জানানোর চেষ্টা করি। সেদিনও ঢাকসুর দাবিতে সাধারণ শিক্ষার্থীদের আলোচনা সভায় আমরা গিয়েছিলাম। কিন্তু ছাত্রলীগ আমাদের ওপর হামলা করে। সত্যিকথা হলো, বর্তমান ভিসি ও তার দোসর বাকশালী সরকার ও সন্ত্রাসী ছাত্রলীগের কারণে আমরা ক্যাম্পাসে যেতে পারছি না।

দ্য রিপোর্ট : ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রদলের বিশ্ববিদ্যালয়ে সাংগঠনিক কর্মকাণ্ড নেই- এমন অভিযোগ রয়েছে, এটা আপনাদের ব্যর্থতা কি না?

নজরুল ইসলাম নাহিদ : ক্যাম্পাসে ও হলে হলে সহাবস্থানের জন্য আমরা তো আন্দোলন করছি। নেতৃত্বের ব্যর্থতা যে নেই এটা বলবো না। আছে তবুও আপনার নিশ্চয়ই মনে আছে, আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর তৎকালীন ছাত্রদল সভাপতি সুলতান সালাউদ্দিন টুকু ভিসির সাথে শুধুমাত্র সাক্ষাত করতে চেয়েছিলেন। আর এই কারণে তার ওপর কি ধরনের অমানুষিক ও পৈশাচিক হামলা হয়েছিল। মাথা ফাটিয়ে দেওয়া হয়েছিল। মধুর ক্যান্টিনের মতো জায়গায় ছাত্রদলের নেতাদের ওপর ন্যক্কারজনকভাবে হামলা হয়েছিল। কিন্তু বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো ধরনের বিচারের উদ্যোগ নেয়নি। আমরা তো তবুও চেষ্টা করছি। সু-সংগঠিত ও সঠিক নেতৃত্ব পেলে হয়তো আবারো ক্যাম্পাসে শহীদ প্রেসিডেন্ট জিয়াউর রহমান, দেশনেত্রী বেগম খালেদা জিয়া ও তারুণ্যের অহংকার তারেক রহমানের নাম আবারো ক্যাম্পাসে উচ্চারিত হবে। হয়তো রক্ত ঝরবে, আমরা মার খাবো কিন্তু দায়িত্ব তো অবহেলা করা যাবে না। যেটা আমাদের পূর্বসূরীরা দেখিয়ে গেছেন।

দ্য রিপোর্ট : বর্তমানে ছাত্রদলের ক্যাম্পাসের বাইরের কার্যক্রমেও নবীনদের অংশগ্রহণ তেমন চোখে পড়ছে না। কেন?

নজরুল ইসলাম নাহিদ : আসলে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে যে ছেলেটি হলে থাকেন তার ওপর সবসময় নজরদারি করে ছাত্রলীগ। যে কারণে বুকে জিয়াউর রহমানের ১৯ দফার আদর্শ লালন করলেও শুধুমাত্র হলে থাকার কারণে তারা সংগঠনে সক্রিয় হতে পারে না। তবুও আমাদের সাথে তারা যোগাযোগ রাখে। আমাদেরও কিছু ব্যর্থতা আছে। নতুন কর্মী সদস্য সংগ্রহের কোনো আনুষ্ঠানিক উদ্যোগ এখন নেওয়া হচ্ছে না। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শীর্ষ নেতৃত্বের আরো সক্রিয়তা এই সংকট কাটিয়ে তুলতে পারতো। নতুন কর্মী বান্ধব ও সাচ্চা জাতীয়তাবাদী নেতৃত্ব ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় পেলে হয়তো এই সংকট কাটিয়ে ওঠা সম্ভব।

দ্য রিপোর্ট : ব্যক্তিগতভাবে কর্মী সদস্য সংগ্রহের উদ্যোগ কথনো নিয়েছেন?

নজরুল ইসলাম নাহিদ: হুম। আমি নিয়মিত আমার হল মুজিব হলের নেতাকর্মীসহ প্রত্যেকটি হলের নেতাদের নিয়মিত বসছি। তাদের দিয়ে জুনিয়র কর্মীদের নিয়ে চা খাওয়ানো ব্যবস্থা করি। তাদের ছাত্রদলের কর্মকাণ্ড সম্পর্কে বলি। এতে অনেকেই উৎসাহিত হচ্ছে। আমাদের সাথে নিয়মিত যোগাযোগও রাখছে। কিন্তু সাংগঠনিকভাবে এটা করতে পারলে আরো ভালো হতো। বর্তমানে কর্মী সংকট চলছে। কর্মী সংগ্রহের কোনো উদ্যোগও নেই। তাই আমি ব্যক্তিগতভাবে সব সময় চেষ্টা করে যাচ্ছি নবীনদের ছাত্রদলের সাথে সম্পৃক্ত রাখার জন্য।

দ্য রিপোর্ট: নবীন সদস্য সংগ্রহ ও কর্মীদের সাংগঠনিক কাঠামোর মধ্যে আনার জন্য কি করা প্রয়োজন বলে আপনি মনে করেন?

নজরুল ইসলাম নাহিদ: নিয়মিত সদস্য সংগ্রহ কর্মসূচী গ্রহণ করা উচিত। তাদের নিয়ে কর্মশালার আয়োজন করা যেতে পারে। জিয়াউর রহমানের ভিশন, বিএনপির ভিশন ২০৩০ সহ ১৯ দফা নিয়ে আলোচনার মাধ্যমে তরুণদের রাজনীতিতে উদ্ধুব্ধ করা যেতে পারে। এজন্য প্রয়োজন যারা সত্যিকারে দলকে ভালোবাসে, জিয়াউর রহমানের আদর্শকে ধারণ করে, দলের নেতৃত্বের প্রতি শতভাগ অনুগত, বেগম খালেদা জিয়া নির্দেশের প্রতি শতভাগ দায়িত্বশীল ও তারুণ্যের অহংকার জননেতা তারেক রহমানকে দেশে ফিরিয়ে আনার দাবিতে আন্দোলন করতে ন্যূনতাম পিছুটান রাখবে না এমন নেতৃত্বের মাধ্যমে নিয়মিত ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের কমিটি পুনর্গঠন করা উচিত।

(দ্য রিপোর্ট/সাআ/আগস্ট ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর