thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৭ জমাদিউল আউয়াল 1446

ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না : শেখ হাসিনা

২০১৭ নভেম্বর ১৮ ১৮:০১:০৫
ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না : শেখ হাসিনা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : প্রধানমন্ত্রী ও আওয়ামী লীগ সভানেত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, পঁচাত্তরের ট্রাজেডির পর বাংলাদেশ থেকে বঙ্গবন্ধুর নাম মুছে ফেলার শত চেষ্টা করা হয়েছে। ইতিহাস মুছে ফেলা যায় না, কেউ মুছতে পারেনি। ইতিহাস বিকৃত করতে চাইলে ইতিহাস প্রতিশোধ নেয়।

তিনি বলেন, স্বাধীনতার পর বিভিন্ন সময় জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ঐতিহাসিক ভাষণ প্রচারে বাধা দেওয়া হয়েছে। কিন্তু ভাষণ প্রচারে যত বাধা এসেছে তত তা জাগ্রত হয়েছে।

শনিবার (১৯ নভেম্বর) বিকেলে রাজধানীর সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আয়োজিত নাগরিক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে শেখ হাসিনা এ কথা বলেন। প্রধানমন্ত্রী বিকেল তিনটার দিকে সমাবেশস্থলে এসে পৌঁছেছেন। ৪টা ২০ এ বক্তব্য শুরু করেন তিনি। শেষ করে ৪টা ৫০ মিনিটে।

ইউনেসকোর ‘বিশ্ব প্রামাণ্য ঐতিহ্য’ হিসেবে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ৭ মার্চের ভাষণ স্বীকৃতি পাওয়া উপলক্ষে নাগরিক কমিটি এই সমাবেশের আয়োজন করে।

আওয়ামী লীগ সভানেত্রী তার বক্তব্যে ইউনেসকো ও যে দেশগুলো ভোট দিয়ে বঙ্গবন্ধু সাতই মার্চের ভাষণকে স্বীকৃতি দিয়েছে তাদের ধন্যবাদ দেন।

শেখ হাসিনা বলেন, যারা জাতির পিতার নাম মুছতে চেষ্টা করেছে, জানি না তাদের লজ্জা হয় কি না। ইউনেসকো বঙ্গবন্ধুর ভাষণকে স্বীকৃতি দেওয়ার পর তাদের কি এখন লজ্জা হয় না, দ্বিধা হয় না। অবশ্য এরা বাংলাদেশে বাস করলেও এরা পাকিস্তানেরই প্রেতাত্মা।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, বিশ্বে স্বীকৃতি পাওয়া ভাষণগুলো ছিল লিখিত। কিন্তু বঙ্গবন্ধুর ভাষণ লিখিত ছিল না। এই ভাষণের জন্য কোনো ‘নোটস’ ও বঙ্গবন্ধুর হাতে ছিল না। ৭ মার্চে ভাষণ দেওয়ার আগে সহধর্মিণী ফজিলাতুন্নেসা মুজিব বঙ্গবন্ধুকে আলাদা ডেকে নিয়ে পরামর্শ দিয়েছিলেন, ‘অনেকে অনেক কিছু বলছে। কিন্তু তুমি তাই বলবে যা তুমি ভালো মনে করো।’।

এর আগে শনিবার দুপুর আড়াইটার পরে প্রধানমন্ত্রী সমাবেশস্থলে উপস্থিত হন। এসময় বঙ্গবন্ধুর ৭ মার্চের ভাষণের অংশ বিশেষ মাইকে বাজানো হয়। প্রধানমন্ত্রী মঞ্চে উপস্থিত হয়ে হাত নেড়ে সকলকে অভিবাদন জানান। জাতীয় সঙ্গীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শুরু হয় সমাবেশ। তারপর বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থ পাঠ করা হয়। ধর্মগ্রন্থ থেকে পাঠ শেষে স্বরচিত কবিতা পাঠ করেন কবি নির্মলেন্দু গুণ।

নাগরিক কমিটির আহবায়ক ইমিরেটস অধ্যাপক ড. আনিসুজ্জামান এতে সভাপতিত্ব করছেন। স্বাগত বক্তব্য রাখেন আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক ওবায়দুল কাদের।

এছাড়া সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন নজরুল গবেষক অধ্যাপক ড. রফিকুল ইসলাম, সমকাল সম্পাদক গোলাম সারওয়ার, শহীদ জায়া শ্যামলী নাসরিন চৌধুরী, শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ড. মুহম্মদ জাফর ইকবাল প্রমুখ।

বক্তব্যের ফাঁকে ফাঁকে পরিবেশিত হয় গান ও কবিতা। সব্যসাচী লেখক সৈয়দ শামসুল হকের কবিতা পাঠ করেন সংস্কৃতিমন্ত্রী আসাদুজ্জামান নূর। এছাড়া পরিবেশিত হয় রবীন্দ্র, নজরুল আর মরমী কবি লালন শাহের গান। নাট্যব্যক্তিত্ব রামেন্দু মজুমদার ও শহীদ বুদ্ধিজীবী আবদুল আলীম চৌধুরীর মেয়ে ডা. নুজহাত চৌধুরী সঞ্চালনা করেছেন।

নাগরিক সমাবেশ ঘিরে সকাল থেকে আওয়ামী লীগ, এর অঙ্গ ও সহযোগী সংগঠনের নেতাকর্মীরা সোহরাওয়ার্দী উদ্যানে আসতে শুরু করেন। তারা বিভিন্ন ব্যানার, ফেস্টুন ও ৭ মার্চের ভাষণের ছবি সম্বলিত প্লা-কার্ড বহন করেন। সমাবেশ ঘিরে আগেই শাহবাগ এলাকার যান চলাচল নিয়ন্ত্রণ করা হয়। এরপরও এর প্রভাবে সাপ্তাহিক ছুটির দিন হলেও অন্য এলাকায় গাড়ির বাড়তি চাপ দেখা গেছে।

আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক নৌকার আদলে মূল মঞ্চ সাজানোসহ সমাবেশস্থলের আশপাশ এলাকা সাজানো হয় হয়েছে বর্ণিল সাজে। ইঞ্জিনিয়ারিং ইনস্টিটিউশনের পাশের গেইট দিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও আমন্ত্রিত অতিথিরা প্রবেশ করেন। আর ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা ইনস্টিটিউট থেকে তিন নেতার মাজার পর্যন্ত পাঁচটি গেইট দিয়ে সাধারণ জনগণ প্রবেশ করেন।

নাগরিক সমাবেশে কেন্দ্রীয় ১৪ দলের নেতৃবৃন্দসহ প্রগতিশীল ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী সকল রাজনৈতিক দলসহ সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও পেশাজীবী সংগঠনের নেতৃবৃন্দসহ নাগরিক সমাজের প্রতিনিধিরা উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ১৮, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর