thereport24.com
ঢাকা, রবিবার, ৫ মে 24, ২২ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৬ শাওয়াল 1445

বিডিআর বিদ্রোহে পেছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে: হাইকোর্ট

২০১৭ নভেম্বর ২৭ ১৩:৪৮:৪৯
বিডিআর বিদ্রোহে পেছনে ষড়যন্ত্র থাকতে পারে: হাইকোর্ট

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : তৎকালীন বিডিআর বিদ্রোহের পেছনে ভেতরের ও বাইরের ষড়যন্ত্র থাকতে পারে। রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা নষ্ট করে গণতন্ত্র ধ্বংস করাই ছিল বিদ্রোহের অন্যতম উদ্দেশ্য বলে পর্যবেক্ষণে বলেছেন আদালত।

সোমবার (২৭ নভেম্বর) সকাল ১০টা ৫২ মিনিটে বিচারপতি মো. নজরুল ইসলাম তালুকদার রায় পড়া শুরু করেন। সেখানে তিনি এই পর্যবেক্ষণের কথা বলেন।

২০০৯ সালের ফেব্রুয়ারিতে তৎকালীন বিডিআরের সদর দপ্তর পিলখানায় নারকীয় হত্যাযজ্ঞের ঘটনায় করা হত্যা মামলায় হাইকোর্টের রায় পড়া দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে। রায় পড়ার মধ্যাহ্ন বিরতি চলছে। দুপুর দুইটার পর রায় পড়া আবার শুরু হবে। সোমবারই এই মামলার রায় পড়া শেষ হবে বলে রবিবার জানিয়েছিলেন এই বেঞ্চের নেতৃত্বে থাকা বিচারপতি মো. শওকত হোসেন।

এই বেঞ্চের অপর বিচারপতি মো. আবু জাফর সিদ্দিকী রবিবার তার পর্যবেক্ষণ পড়ে শোনান।

এই রায়ে এক হাজার পৃষ্ঠার বেশি পর্যবেক্ষণ রয়েছে। মূল রায়টি প্রায় ১০ হাজার পৃষ্ঠার।

সোমবার রায় পড়তে গিয়ে বিচারপতি নজরুল বলেন, তৎকালীন বিডিআরের নিজস্ব গোয়েন্দারা কেন এ ধরনের ঘটনা ঘটতে পারে তা আগে জানতে পারেনি সেই ব্যর্থতা খুঁজতে একটি তদন্ত কমিটি করা দরকার। তিনি মহাপরিচালকের উদ্দেশে বলেন, কোনো সমস্যা আসলে তা তাৎক্ষণিক সমাধান করতে হবে। বিজিবির জোয়ানরা কোনো সমস্যা নিয়ে আসলে তা মীমাংসা করতে হবে এবং বিজিবিতে সেনা কর্মকর্তা ও জোয়ানদের মধ্যে পেশাদারি সম্পর্ক থাকতে হবে।

নজরুল ইসলাম প্রশ্ন করে কেন সে সময়ের বিডিআর ডাল-ভাত কর্মসূচি নিল। ভবিষ্যতে এ ধরনের কোনো কর্মসূচি যেন না নেওয়া হয় সে ব্যাপারে বিজিবিকে সতর্ক করেন তিনি।

আরেক বিচারপতি মো. শওকত হোসেন বলেন, কোনো সেনা কর্মকর্তা সীমান্তরক্ষী বাহিনীতে থাকবে না এটাই ছিল বিদ্রোহে অংশ নেওয়াদের মূল মনোভাব। তিনি জোয়ানদের সঙ্গে ঔপনিবেশিক (কলোনিয়াল) আমলের মতো ব্যবহার না করার কথা বলেন। তিনি বলেন, একই দেশ। এখানে সবাই ভাই ভাই।

২০০৯ সালের ২৫ ও ২৬ ফেব্রুয়ারি তৎকালীন বিডিআরের সদর দপ্তরে ৫৭ সেনা কর্মকর্তাসহ ৭৪ জন প্রাণ হারান। ওই বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি লালবাগ থানায় হত্যা ও বিস্ফোরক আইনে দুটি মামলা হয়। পরে মামলা দুটি নিউমার্কেট থানায় স্থানান্তরিত হয়। বিচার হয় ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগারসংলগ্ন আলিয়া মাদ্রাসা মাঠসংলগ্ন অস্থায়ী এজলাসে। বিচার শেষে ঢাকা মহানগর তৃতীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. আখতারুজ্জামান ২০১৩ সালের ৫ নভেম্বর রায় ঘোষণা করেন।

রায়ে বিডিআরের প্রাক্তন ডিএডি তৌহিদসহ ১৫২ জনকে মৃত্যুদণ্ড দেওয়া হয়। এছাড়া বিএনপি দলীয় প্রাক্তন সংসদ সদস্য নাসিরউদ্দিন আহমেদ পিন্টু (প্রয়াত) ও স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা তোরাব আলীসহ ১৬০ জনকে যাবজ্জীবন কারাদণ্ড এবং ২৫৬ জনকে বিভিন্ন মেয়াদে সাজা দেওয়া হয়। অভিযোগ প্রমাণিত না হওয়ায় ২৭৭ জনকে খালাস দেওয়া হয়।

রায়ের পর ডেথ রেফারেন্স হাইকোর্টে আসে। রায়ের পর বিভিন্ন সময়ে আসামিরা দণ্ডাদেশের বিরুদ্ধে আপিল ও জেল আপিল করেন। এর মধ্যে ৬৯ জনকে খালাস দেওয়ার বিরুদ্ধে রাষ্ট্রপক্ষ আপিল করেন। গুরুত্বপূর্ণ এ মামলার শুনানির জন্য সুপ্রিম কোর্ট বিশেষ উদ্যোগ নেন। বিশেষ ব্যবস্থায় এই মামলার পেপারবুক তৈরি করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/নভেম্বর ২৭, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর