thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ৩ মে 24, ২০ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৪ শাওয়াল 1445

মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ না বলার ব্যাখ্যা দিলেন পোপ

২০১৭ ডিসেম্বর ০৩ ১৩:২৬:৩৩
মিয়ানমারে ‘রোহিঙ্গা’ না বলার ব্যাখ্যা দিলেন পোপ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : মিয়ানমার সফরকালে ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি উচ্চারণ না করার কারণ ব্যাখ্যা দিয়েছেন রোমান ক্যাথলিক খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের ধর্মগুরু পোপ ফ্রান্সিস। শনিবার (২ ডিসেম্বর) বাংলাদেশ সফর শেষে দেশে ফেরার পথে বিমানে সংবাদকর্মীদের নিজের অবস্থানের ব্যাখ্যা দেন তিনি। খবর- রয়টার্সের।

মিয়ানমার সফর শেষে ২ ডিসেম্বর পোপ ঢাকায় আসেন। এখানে রোহিঙ্গাদের একটি প্রতিনিধি দলের সঙ্গে সাক্ষাতের সময় তিনি ‘রোহিঙ্গা’ শব্দটি ব্যবহার করেন। শনিবার তিন দিনের সফর শেষে ঢাকা থেকে দেশে ফেরার পথে পোপ ফ্রান্সিস বিমানে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে কথা বলেন। রোহিঙ্গা শব্দটির ব্যবহার সংক্রান্ত প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, ‘সেন্ট পিটার্সবার্গ থেকে বারবার আমি রোহিঙ্গাদের জাতিগত পরিচয়েই তাদের কথা বলেছি। এমন নয় যে বাংলাদেশে গিয়ে আমি প্রথম রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহার করলাম।

একজন সাংবাদিক পোপের কাছে জানতে চান, মিয়ানমারে রোহিঙ্গা শব্দটি ব্যবহারে তাকে বাধা দেওয়া হয়েছে কিনা। জবাবে পোপ বলেন, তিনি মিয়ানমার সফরে বেশ কিছু একান্ত বৈঠক করেছেন। এ বৈঠকগুলোর মূল্য রয়েছে।

সাংবাদিকদের প্রশ্নের জবাবে তিনি বলেন, মিয়ানমার সরকার ও দেশটির সেনাবাহিনীকে যে বার্তা দেওয়া দরকার ছিল, আলোচনার (বাংলাদেশ-মিয়ানমার) দ্বার বন্ধ না করেই তিনি তা দিতে পেরেছেন।

পোপ বলেন, ‘আমার পক্ষ থেকে যেটা গুরুত্বপূর্ণ ছিল সেটা হলো- তাদের বক্তব্য শোনা ও তার জবাব দেওয়া। আর বার্তা দেওয়াটাই মূল কথা।’

‘আমি জানতাম, আমি যদি আনুষ্ঠানিকভাবে শব্দটি (রোহিঙ্গা) উল্লেখ করতাম, তাহলে তারা আমাদের মুখের ওপর বন্ধ (আলোচনা) করে দিত। তার চেয়ে বরং আমি তাদের (রোহিঙ্গা) অবস্থা, অধিকার, নাগরিকত্ব নিয়ে কথা বলেছি। কৌশল অবলম্বন করায় আমি এগুলো বলতে পেরেছি।’

সামরিক কর্মকর্তাদের সঙ্গে বৈঠকে রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেছেন কিনা সাংবাদিকদের এমন প্রশ্নের জবাবে পোপ বলেন, ‘বার্তা পাওয়ার জন্যই তো শব্দটি ব্যবহারের কথা, কিন্তু যখন দেখলাম আমি যা জানতে চাই তা পেয়ে গেছি তখন আর সেটি উচ্চারণের দরকার ছিল না।’

তবে পোপ নিজের অবস্থানের এমন ব্যাখ্যা দিলেও বিশ্লেষকরা মনে করছেন, দেশটিতে অবস্থানরত খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতাদের পরামর্শেই তিনি রোহিঙ্গা শব্দটি উচ্চারণ করেননি। কারণ বৌদ্ধ অধ্যুষিত মিয়ানমারে খ্রিস্টানরাও সংখ্যালঘু।

আর সে কারণে দেশটির খ্রিস্টান সম্প্রদায়ের নেতারা আগেই পোপকে এ ব্যাপারে সতর্ক করেন। আর পোপ সে অনুযায়ীই কথা বলেন।

প্রসঙ্গত, গত ২৫ আগস্ট মিয়ানমারের নিরাপত্তা বাহিনীর কয়েকটি চেকপোস্টে হামলার ঘটনাকে কেন্দ্র করে দেশটির রোহিঙ্গা মুসলমানদের ওপর সাঁড়াশি অভিযান শুরু করে সেনাবাহিনী। পাশাপাশি দেশটির উগ্র বৌদ্ধরাও রোহিঙ্গাদের ওপর হামলা চালায়। হত্যা করা হয় কয়েক হাজার রোহিঙ্গা মুসলমানকে। নারীদের ওপর চালানো হয় পাশবিক নির্যাতন। জীবন বাঁচাতে রোহিঙ্গারা দীর্ঘ পথ ও নদী পাড়ি দিয়ে বাংলাদেশে পালিয়ে আসতে থাকে। সর্বশেষ খবর অনুযায়ী সোয়া ছয় লাখের বেশি রোহিঙ্গা বাংলাদেশে পালিয়ে এসেছে।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/ডিসেম্বর ০৩, ২০১৭)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর