thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৫ জমাদিউল আউয়াল 1446

কোটা আন্দোলনকারী ২ নেতাকে হত্যার হুমকি

২০১৮ মে ১৬ ১৪:১২:০১
কোটা আন্দোলনকারী ২ নেতাকে হত্যার হুমকি

ঢাবি প্রতিনিধি : কোটা সংস্কার আন্দোলনকারীদের সংগঠন বাংলাদেশ সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূরু ও রাশেদ খানকে প্রকাশ্যে পিস্তল ঠেকিয়ে হত্যার হুমকি দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে ছাত্রলীগ নেতাদের বিরুদ্ধে।

মঙ্গলবার (১৬ মে) দিবাগত রাত দেড়টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের মুহসীন হলে ১১৯ নম্বর কক্ষে এ ঘটনা ঘটে। যদিও ছাত্রলীগ নেতারা এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

জানা গেছে, পিস্তল নিয়ে ওই কক্ষে আসেন কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি। তাঁর সঙ্গে ছিলেন মুহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম লিমনসহ একাধিক ছাত্রলীগ নেতাকর্মী।

প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন, রাত দেড়টার দিকে বাপ্পি, সানী ও লিমনের নেতৃত্বে ১৫/২০ ছাত্রলীগ কর্মী মুহসীন হলের ওই কক্ষটিতে আসেন। এ সময় নুরুল হক নূরুর কক্ষে ছিলেন আরেক যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ। বাপ্পির পকেটে একটি পিস্তল ছিল বলে দাবি করেছেন প্রত্যক্ষদর্শীরা।

নূরু ও রাশেদকে হুমকি দিয়ে ছাত্রলীগ নেতা বাপ্পি বলেন, ‘এই আন্দোলন করছিস তোরা সরকারের বিরুদ্ধে। তোদের একটাকেও ছাড়া হবে না। প্রজ্ঞাপনটা জারি হলে তোদের কুত্তার মতো পেটানো হবে। কুকুরের মতো গুলি করে রাস্তায় মারা হবে। তোরা তো কেউ বাঁচবি না। বেশি বাড়াবাড়ি করিস না। শেষবারের মতো মা-বাবার দোয়া নিয়ে নিস। শুধু প্রজ্ঞাপনটা জারি হোক। তোদের কী অবস্থা করি।’

এ সময় মুহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী, চারুকলা অনুষদ ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাহিম লিমন সাধারণ ছাত্র অধিকার সংরক্ষণ পরিষদের দুই নেতাকে বারবার আক্রমণ করার চেষ্টা করছিলেন। তবে সঙ্গে থাকা অন্যরা তাঁদের নিবৃত্ত করেন।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে যুগ্ম আহ্বায়ক নুরুল হক নূরু বলেন, ‘আমি এবং কেন্দ্রীয় কমিটির যুগ্ম আহ্বায়ক রাশেদ আমার রুমে ছিলাম। এর মধ্যে চারুকলা অনুষদের ছাত্রলীগের সেক্রেটারি লিমন ফোন দিয়ে থ্রেট দেয় যে হল থেকে নামিয়ে দেওয়া হবে। পিটিয়ে নামিয়ে দেওয়া হবে। আমরা নাকি সরকারের বিরুদ্ধে আন্দোলন করছি। একপর্যায়ে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি ফোন নিয়ে বলেন, ছাত্রদলের সুলতান সালাউদ্দিন টুকুকে মারছি। তোদের মতো পোলাপানকে খেয়ে দিতে দুই সেকেন্ডও লাগে না। তোগোরে গুলি কইরা মারি নাই শুধু কিছু সিনিয়রের নিষেধ ছিল। তা না হলে তোদের মতো কুলাঙ্গারদের রাখতাম না এই দেশে। শুধু কিছু সিনিয়রের নিষেধ থাকার কারণে তোরা বেঁচে গেছস। তবে তোরা বাঁচবি না। কিছুদিন পর প্রজ্ঞাপনটা জারি হোক। দেখি, তোদের কোন বাপ ঠেকায়। তার ১০ মিনিট পরে রুমে পিস্তল নিয়ে এসে বলে, তোরা মা-বাবার কাছ থেকে দোয়া নিয়ে নে। তোরা বাঁচবি না। তোদের গুলি করে মারব। আমাকে মারতেও আসে। তারা আমার মোবাইলও নিয়ে যায়, যাতে আমি রেকর্ড করতে না পারি। আমরা এখন জীবননাশের হুমকির মুখে আছি।’

অভিযোগের বিষয়ে জানতে চাইলে কেন্দ্রীয় ছাত্রলীগের সহসভাপতি ইমতিয়াজ উদ্দিন বাপ্পি বলেন, ‘এ রকম কোনো ঘটনা ঘটেনি। ও আমার পাশে রুমে থাকে। আমার এক ছোট ভাইয়ের আইডি হ্যাক করে বিভিন্ন গ্রুপে দেয়। পরে তার সঙ্গে এ বিষয়ে বাকবিতণ্ডা হয়। আমার বাবা মুক্তিযোদ্ধা। শেরপুর জেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক। আমি তাকে বলেছি, আন্দোলন করতেছস ঠিক আছে। অন্য কোনো ঝামেলায় জড়াবি না। আমি কাল হল ছাড়ছি।’

একইভাবে অভিযোগ অস্বীকার করেন মুহসীন হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মেহেদী হাসান সানী। তিনি বলেন, ‘তাকে কিছু করা হয়নি। সে ইস্যু বানাচ্ছে।’

এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর অধ্যাপক ড. এ কে এম গোলাম রাব্বানী বলেন, ‘আমাকে কেউ অফিশিয়ালি অভিযোগ করেনি। কেউ অভিযোগ করলে দেখব।’

এর আগে মুহসীন হল ছাত্রলীগের এই সাধারণ সম্পাদকের বিরুদ্ধে সাত কলেজ অধিভুক্তি বাতিলের আন্দোলনে ঢাবি ছাত্রীদের যৌন নিপীড়ন করার অভিযোগ উঠেছিল। মুহসীন হলে মাদক ব্যবসা ও চাঁদাবাজির সঙ্গে জড়িত বলেও অভিযোগ রয়েছে। যদিও এসব অভিযোগ অস্বীকার করেছেন সানী।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/মে ১৬, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর