thereport24.com
ঢাকা, বুধবার, ২৭ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৫ জমাদিউল আউয়াল 1446

ঈদে সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পাচ্ছে না কেউ

২০১৮ জুন ১৪ ২১:০৮:২৬
ঈদে সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পাচ্ছে না কেউ

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ঈদ, স্বাধীনতা দিবস ও বিজয় দিবসকে সামনে রেখে ঢাকা কেন্দ্রীয় কারাগার সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি পেয়ে থাকেন লঘু অপরাধে দণ্ডিত কারাবন্দিরা।

কারাবিধি অনুযায়ী সাতটি শর্ত মেনে যাদের বিষয়ে সংশ্লিষ্ট কমিটি সুপারিশ করে থাকে, কেবল সেইসব কারাবন্দি মুক্তি পেয়ে থাকেন। তবে এবার ঈদের আগে কোনও কারাবন্দি মুক্তি পাচ্ছেন না। বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে কমিটির সুপারিশ অনুমোদিত হয়ে বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) বিকেল পর্যন্ত কারা কর্তৃপক্ষের হাতে পৌঁছায়নি বলে সংশ্লিষ্ট সূত্র জানিয়েছে।

সংশ্লিষ্ট কারা কর্মকর্তারা জানান, যাবজ্জীবন দণ্ডপ্রাপ্ত ছাড়া অন্য যেকোনও মামলায় সাজার মেয়াদের অর্ধেক সময় যাদের অতিবাহিত হয়ে গেছে, শুধুমাত্র তাদের ক্ষেত্রে মুক্তির জন্য সুপারিশ করা যাবে। অচল, অক্ষম, দৃষ্টি শক্তি নষ্ট বা প্রায় অকেজো হয়ে গেছে, দুরারোগ্য মরণ ব্যাধিতে আক্রান্ত হয়েছে, এমন যে কোনও কয়েদির অপরাধ ও শর্ত নির্বিশেষে মুক্তির জন্য সুপারিশযোগ্য হবে।

অন্যদিকে, ১৮৬০ সালের দণ্ডবিধির ৪৫ নম্বর আইনের ধারা, নারী ও শিশু নির্যাতন দমন (বিশেষ বিধান) আইন, এসিড অপরাধ দমন আইন- ২০০২ সালের দুই নম্বর আইন এবং দুর্নীতি দমন আইনে দণ্ডপ্রাপ্তরা সুপারিশযোগ্য হবেন না। কারাগারে সদাচরণ করেন না, বা একাধিক মামলায় দণ্ডিত আছেন, এমন কয়েদিও মুক্তিযোগ্য হবেন না। দ্য আর্মি অ্যাক্ট ১৯৫১, দ্য এয়ার ফোর্স অ্যাক্ট ১৯৫৩, দ্য নেভি অর্ডিনেন্স ১৯৬১ এর অধীনে দণ্ডপ্রাপ্ত কয়েদি, কোনও অপরাধে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি এবং ফৌজদারি কার্যবিধির ৫৬৫ ধারায় শর্ত বা বিধি লঙ্ঘনের জন্য দণ্ডপ্রাপ্ত কোনও বন্দি মুক্তির জন্য সুপারিশযোগ্য হবেন না। মাদক আইন, মোবাইল কোর্ট, বিডিআর আইনে বন্দিদের ক্ষেত্রে মুক্তির কোনও সুপারিশ করা যাবে না বলে কারা অধিদফতরের শর্তে উল্লেখ রয়েছে।

ঈদসহ বিশেষ দিনগুলোতে বন্দিদের সাধারণ ক্ষমায় মুক্তির জন্য প্রতিটি জেলায় একটি কমিটি রয়েছে। জেলা ম্যাজিস্ট্রেট বা জেলা প্রশাসক এই কমিটির প্রধান থাকেন। প্রতিবছরই এ কমিটি সংশ্লিষ্ট কারাগারের বন্দিদের বিভিন্ন মামলা যাচাই-বাছাই করেন। পরে সেগুলো পাঠানো হয় স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে। এবারও ঈদুল ফিতর উপলক্ষে সাধারণ ক্ষমায় মুক্তি দেওয়ার জন্য সাজাপ্রাপ্ত বন্দিদের তালিকা করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয়ে পাঠানো হয়। সেই তালিকা যাচাই-বাচাইয়ের জন্য গত ২১ মে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে সভা অনুষ্ঠিত হয়। কিন্তু সভা শেষে বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) পর্যন্ত চূড়ান্ত কোনও সিদ্ধান্ত দেওয়া হয়নি।

কারা অধিদফতরের এআইজি (প্রশাসন) আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, ‘কারা বিধি অনুযায়ী যারা সুপারিশ যোগ্য হবেন, তাদের একটি তালিকাসহ সুপারিশ করবে জেলা কমিটি। পরে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রণালয় থেকে সেই সুপারিশ অনুমোদিত হলে বন্দিরা বিশেষ দিবসগুলোতে মুক্তি পেয়ে থাকেন। এবার বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) পর্যন্ত এমন কোনও নির্দেশনা আসেনি।’ তিনি বলেন, ‘অনেক সময় ঈদের আগে প্রক্রিয়া শেষ না হলে ঈদের পরেও প্রক্রিয়া শেষে বন্দিদের মুক্তি দেওয়া হয়।’

স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের কারা-২ শাখার সহকারী সচিব মোহাম্মদ আলী বলেন, ‘ঈদের আগে বন্দিদের মুক্তির বিষয়ে বৈঠক হয়েছে। তবে বৃহস্পতিবার (১৪ জুন) পর্যন্ত ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে চূড়ান্ত কোনও নির্দেশনা পাইনি। ফলে এবার ঈদের আগে সাধারণ ক্ষমায় কোনও বন্দি মুক্তি পাচ্ছেন না।’

কারা অধিদফতর সূত্র জানায়, ২০০৯ সাল থেকে ২০১৮ সাল পর্যন্ত তিন হাজার ৯৩৪ জন কারাবন্দি বিশেষ দিনগুলোতে মুক্তি পেয়েছেন। এরমধ্যে ২০০৯ সালে ৯৭১ জন, ২০১০ সালে এক হাজার ৬৪১ জন, ২০১১ সালে ৪৯৭ জন, ২০১২ সালে ১৩৬ জন, ২০১৩ সালে ৪৮৯ জন, ২০১৪ সালে ৪২ জন, ২০১৫ সালে ৪০ জন, ২০১৭ সালে ৫১ জন ও ২০১৮ সালে এ পর্যন্ত সাতজন কারাবন্দি মুক্তি পেয়েছেন।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুন ১৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর