thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৩ ডিসেম্বর ২০২৪, ৯ পৌষ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউস সানি 1446

গল্প

সত্যি-মিথ্যে

২০১৮ জুন ২২ ০৩:২৪:৩৬
সত্যি-মিথ্যে

পাভেল চৌধুরী

এ বাড়িতে সে শাকআলা বুড়ি বলে পরিচিত। অশীতিপর বৃদ্ধ। হত দারিদ্র। অস্থিসার। একটা জীর্ণ আধময়লা শাড়ি শরীরে পেঁচানো। বয়সের ভারে কিছুটা ন্যুব্জ । মাথায় হালকা চুল প্রায় সবই সাদা। অসংখ্য বলিরেখা খচিত মুখমন্ডল আর গর্তের ভেতরে ঢোকা ক্ষুদে দুটো চোখ, জলজ, তাতে পলক পড়ে দ্রুত।

তাঁর সমাদর নেই এ বাড়িতে, শুধু একজনের কাছে ছাড়া। তিনি এ বাড়ির গৃহকর্ত্রী। বৃদ্ধা সেও তবে এখনও বেশ সবল। হাঁটা চলায় ডাঁটো, কর্তৃত্বেও। সপরিবার ছেলের বাড়ি। দুইজন নাতি ৭ আর ৩ বছর বয়সের। সচ্ছল পরিবার। পরিপাটি দোতলা বাড়ি। বসবাস উপরে, নীচেটা ফাঁকা। কালেভদ্রে কোন অনুষ্ঠান বা বাড়িতে কেউ এলে নীচেটা ব্যবহার করা হয়, তাছাড়া নীচেটা দারোয়ানের অধিকারে থাকে।

শাকআলা বুড়ির এ বাড়িতে অবাধ গতি। গৃহকর্ত্রীর আনুকূল্যে। অন্যথায় দারোয়ানের চোখ এড়ানো সহজ কথা না। প্রায়শই এমন হয়, সম্পর্কে নিতান্ত ঘনিষ্ঠজন হোলেও দ্বাররক্ষীর অপরিচয়ের কারণে ভেতরে ঢোকার অনুমতি পেতে দরজায় ঠাঁই দাঁড়িয়ে থাকতে হয়, - বিষয়টা বিরক্তিকর শুধু না, অপমানজনকও, কিন্তু উপায় কি? যা দিনকাল পড়েছে বাবা, কখন কে ঢুকে পড়ে, কেউ কি চায় নিকটজন কেউ এসে দরজায় দাঁড়িয়ে থাকুক, -এ অজুহাতের কোন জবাব হয় না।

শাকআলা বুড়ির ঝুড়িতে থাকে নানাবিধ দেশি শাকশবজি। কখনও কচুর লতি, ঘেটকোল, কলমিশাক, পেঁপে, কুমড়ো, কলা ইত্যাদি, একেবারে মাঠের শবজি, বিষমুক্ত। সেদিকে তাকিয়ে গৃহকর্ত্রীর চোখ জ্বলজ্বল করে ওঠে। তাঁর শৈশব কৈশোর কী যৌবনের সাথে এসবের অবিচ্ছেদ্য সংযোগ যেন নতুন করে সাড়া তোলে মনে। দোতলার ঝকঝকে বারান্দার এক কোণে হাঁটুমুড়ে বসা শাকআলা বুড়ির কাছেই আয়েশ করে চেয়ার এনে বসে গৃহকর্ত্রী। ঝুড়ি থেকে কখনও ক’আটি কচুর শাক কিংবা কচুর লতি বা কলমি শাক মাটিতে রেখে দীর্ঘশ্বাস ছেড়ে শাকআলা বুড়ি বলে, -আজ মা এই পালাম।

গৃহকর্ত্রী রীতিমতো আবেগাক্রান্ত হয়ে পড়ে; -ও বৌমা বৌমা, বাড়ির বৌ রেহানাকে সে ডাকে।- দেখ, আজকে কি এনেছে, আহা!

(২)

শাশুড়ির ডাককে রেহানা উপেক্ষা করতে পারে না। অনিচ্ছুক পায়ে মুহূর্তকাল এসে দাঁড়ায় আর তার মধ্যেই গৃহকর্ত্রী বলতে শুরু করেন, হয়তো বেখেয়ালে পুনরাবৃত্তি করেন একই কথার;-বোশেখ জষ্টি মাসে তুমার শ্বশুর যখন মাঠ থেকে হাল চষে ফিরতো, সারা গা’য় কাদা, ঘাম, মেজাজ তিরিক্ষি, মাথায় এক বুঝা ঘাস গরুর জন্যি আর ঘাসের মদ্যি গুজা থাকতো ক’আটি কচুর লতি। তখন কি আর কিনা লাগতো এসব বিল থেকে খুশি মতো তুলে আনলিই হলো। যতো খাটনিই হোক আমার পছন্দ যে, কচুর লতি আনতি কখনও ভুল হোতো না।

প্রথমে অবাক বিস্ময়ে রেহানা এই কাহিনী শুনতো। যতো শুনতো ততোই তার বিস্ময় বাড়তো, ভেতরে এক ধরণের ক্ষোভও। হারুনের কাছ থেকে শোনা শ্বশুর সম্পর্কে যাবতীয় কাহিনীর সাথে এই কাহিনীর যোগসূত্র সে খুঁজে পেতো না। শ্বশুর গ্রামে থাকতেন এটা রেহানা জানতো কিন্তু সেই থাকা তো মাঠে হাল-চষে কাদা-মেখে মাথায়-ঘাসের-বোঝা নিয়ে ঘাম-শরীরে বাড়ী ফেরা না। সেই থাকা তো বিস্তর জমি জমা, গোলাভরা ধান, গোয়াল ভরা গরু, পুকুর ভরা মাছ নিয়ে হুকুমদারীতে তটস্থ কৃষাণ মজুর মিলে দাপুটে থাকা।

মন খারাপ হয়ে যায় রেহানার। রাত ছাড়া হারুনকে ঘনিষ্ঠভাবে পাওয়া যায় না। রাত পর্যন্ত তাই সে বিষণ্নই থাকে। রাতে অভিমান সিক্ত স্বরে হারুনকে বললো -তুমি তাহলে আমার সাথে মিথ্যে বলেছিলে?

মিথ্যে!- হারুন শঙ্কিত হয়। দৈনন্দিন জীবনে সত্যি মিথ্যের তো বাছবিচার নেই, এখন কোন মিথ্যে কোন অর্থে ধরা পড়লো সেটা তো ভাববারই বিষয়।

শ্বশুর সম্পর্কে তুমি যা বলেছিলে ...।

হারুন ভারমুক্ত হয়ে এবার একটু প্রাণ খুলেই হাসলো। তারপর রেহানার মেঘশুভ্র মুখের চিবুকের ডানপাশে অল্প উপরে মুসুরীর দানার মতো ছোট্ট মিশকালো তিলের উপর তর্জনীর হালকা স্পর্শ রেখে রসতীর্ণ গলায় বললো, -তা না বললে তুমি তিন বছর ধরে আমার সাথে প্রেম করতে? যদি জানতে ছেলের বাবা হদ্দ চাষা তবে দশ মাইল দূরে ছিটকে যেতে তোমার সময় লাগতো?

(৩)

হারুনের সরল স্বীকারোক্তি রেহানা সহজভাবে নিতে পারে না। আর সেটা বুঝেই যেন রেহনাকে ঘনিষ্ঠভাবে নিয়ে সে গভীর আবেগে বলে- শোন, এসব নিয়ে এতোসব ভাবতে নেই, কোনটা সত্যি কোনটা মিথ্যে এতোসব বাছবিচারের দরকার কি? তুমি কেমন আছো সেটাই আসল কথা, খারাপ? বলো?

রেহানা খারাপ নেই রেহানা জানে, কাজেই এ প্রসঙ্গ মন থেকে ঝেড়ে ফেলতে তার সময় লাগে না।

এ সব বিষয় শাকআলা বুড়ির এ বাড়ি প্রবেশে সমস্যা হয় না। গৃহকর্ত্রীর অবাধ প্রশ্রয়ে সে অন্তত সপ্তাহে বার দুই আসে। দোতলার বারান্দায় জাক করে বসে হালফিল গল্প ছুড়ে দেয়।

শ্রোতা গৃহকর্ত্রী, তার গভীর মনোযোগ, অদম্য কৌতুহল কোনভাবেই নিরস্ত হয় না।

- এখন যে এইসব শাকপাতাড়ি আনো, কোথায় পাও?

আমার বাগানের কিছু,-গর্বের সাথে সে বলে,-জমিতো আমার না, জমি কনে পাবো? রেল লাইনির পাশে থাকি। রেলের জমিতি লাগাই। সার বিষ-তেল দিলি শাক শবজি বলো, পেঁপে কুমড়ো বলো, এসব ভাল হয়, বাজারে দেখো না, আমি দিইনে, তুমরা বারণ করো যে মা।

না না প্রায় আৎকে ওঠেন গৃহকর্ত্রী। -ওসব দেবে না, তুমার কাছ থেকে দরদাম না করে নিই কেন, ওসব দেও না বলেই তো নিই। চারিদিক যা অবস্থা মানুষ বিষ খেয়েই সব শেষ হয়ে যাবে।

এইসব কথপোকথনের সময় রেহানা তার পায়ের দাপটে আশেপাশে নিজের উপস্থিতি ঘোষণা করে কিন্তু কাছে দাঁড়িয়ে কখনও জল্পনায় অংশ নেয় না। শাকআলা বুড়ি বোঝে বাড়ীর বৌ তাকে পছন্দ করে না কিন্তু গৃহকর্ত্রী অতোদুর বুঝতে চায় না।

-আগে ছিলো কি মা; রেল লাইনির পরেই, উরে বাবা, মাঠ আর মাঠ, ধান পাটের আবাদ। বর্ষা একটু বেশি হলি সব বুড়ে যাতো, তখন শুধু পানি, পানির শেষ নেই, সাগর। কচুর লতি বলো, শাকপাতাড়ি বলো, তখন কিসির অভাব, হাত বাড়ালিই মুঠো মুঠো পাওয়া যেতো। আর এখন...।

(৪)

শাকআলা বুড়ি একটু চুপ করে যেন অতীত আর বর্তমানের পার্থক্যটা মিলিয়ে নিতে চায়; তারপর আবার শুরু করে...

-ওদিকটায় গিয়েছো কোনোদিন? রাতারাতি কি হয়ে গেলো, কুথায় বিল, কুথায় ধান পাটের ক্ষেত। এখন শুধু বিল্ডিং...।

শাকআলা বুড়ি দুই হাত উপরে তুলে যেন বিল্ডিং গুলোর আকার বোঝাতে চায়-সব আকাশ ছোয় ছোয়, আমি ভাবি রাতারাতি এসব কারা বানায়, মানুষ না দত্যি ? এখন শাকপাতাড়ি খুঁজে পাতি কতো কষ্ট, এ ঘোজ সে ঘোজ আর পেরে উঠিনে।

বয়স তো কম হলো না, কি করবো, কষ্ট করি, বাঁচতি তো হবে।

শাকআলা বুড়ির জীবন সংগ্রামের এই সব কাহিনী শুনতে শুনতে গৃহকর্ত্রী কেমন ঘোরের মধ্যে চলে যায়। তার চোখে কি ভেসে ওঠে আজ থেকে প্রায় ৪০/৫০ বছরের সেই অতীত ? সেই বিস্তীর্ণ বিল, বিলের শুনশান নীরবতা। সেই নিথর প্রান্তরের জমাট নিস্তব্ধতা ভেদ করা নিশুতি রাতের শেষ প্রান্তে ভেসে আসা অপার্থিব সব শব্দ- নাম না জানা পাখি, নিশাচর কোনো প্রাণির ডাক! আজকের গৃহকর্ত্রীর সংসার ছিলো এই বিলের ধারে, কয়েক ঝাড় বাঁশ বাগানের ভেতর, মাটির দেওয়াল আর খড়ের চালের একটা ঘরে।

এই আবাসস্থলের ভেতরেই অনেকটা একাকি এখনকার গৃহকর্ত্রী তাঁর জীবন যৌবনের অনেকটা কাটিয়েছে। ভয় তাঁর করতো প্রথম প্রথম পরে ওতোপ্রত একাত্ম হয়েছে। হারুণের বাবা সম্মন্ন কৃষক ছিলো না, ছিলো প্রান্তজন। টানাপোড়েন আর্থিক অসচ্ছলতার ভেতরই হারুণ বড়ো হচ্ছিলো অনেকটা অলৌকিক ভাবে, তাঁর বর্তমান অবস্থার সাথে অতীতের সেই অবস্থার সামান্য কোনো সম্পর্কসূত্রও এখন আর খুঁজে পাওয়া যাবে না। হারুণের বাবা মারা গেছেন প্রায় ২৫ বছর হয়। তখন সবে দেশ স্বাধীন হয়েছে। পাওয়া না পাওয়ার প্রশ্নে জেগে ওঠা।

সামাজিক কম্পন সারা দেশজুড়ে ঝড়ের আভাস দিচ্ছে। ঠিক সেই সময়েই হারুনকে নিয়ে হারুনের মাকে গ্রাম ছাড়তে হয়েছিলো।

হারুন অতীতের কথা ঘুণাক্ষরেও মনে আনে না, হারুনের মা অতীতকে মন থেকে মুহূর্তের জন্যেও তাড়াতে পারে না, - তার সামান্য কিছু প্রকাশ হয় শাকআলা বুড়ির কাছে, অন্য কোথাও সামান্যতমও প্রকাশিত হয় না।

(৫)

এ বাড়ির গৃহকর্ত্রীর কাছে শাকআলা বুড়ির প্রশ্রয় তাই এতোবেশী।

এই নাও মা, -শাকআলা বুড়ি তার ঝুড়ি থেকে একটা ঘেয়ো পেঁপে তুলে পাশে রাখে।- কতো কষ্টে রাখিছি, রাখা যায়! বাদুড় পাখি সব যেন হামলে পড়ে। পেঁপেটার গা’য় পরিপক্কতার লাল ছোপ।-আর এই যে কচুর লতি।

এক বান্ডিল কচুর লতি তুলে সে পেঁপেটার পাশে রাখে;-কতো ঘুরে ঘুরে জুগাড় করলাম, কতো কষ্ট, কেউ বোঝপে ? এ কটা খুঁজে পাতিই আমার সারা বেলা গেলো।

কৃতজ্ঞতায় গৃহকর্ত্রীর চোখ উজ্জ্বল হয়ে ওঠে।

একেবারে প্রকৃতিজাত বিষমুক্ত এসব শবজি কোথায় মেলে, শাকআলা বুড়ি ছাড়া এ সবের যোগান দেবে কে ?

গৃহকর্ত্রী আবেগে আপ্লুত হয়ে যায়। তাঁর সামনে বসা দরিদ্য অপুষ্টি আর বয়সের নির্মম আঁচড়ে ক্ষত বিক্ষত শাকআলা বুড়ির উপর সহানুভূতির বৃষ্টি ঝরে পড়তে থাকে। আর ঠিক তখনই দুপ্ দাপ্ পা’য়ে রেহানা সেখানে এসে দাঁড়ায়;- এসব কিছু বিশ্বাস করবেন না মা, ডাহা মিথ্যে। বাজারের যতো বাতিল আনাজপাতি কুড়িয়ে এনে আপনার কাছে মিথ্যে বলে চালায়। রেল লাইনের ধারে আমি গিয়েছিলাম, কোথায় বাগান কোথায় কি; কয়েকটা ঝুপড়ি ছাড়া একটা কুটোও নেই, -বলো সত্যি না? আঙ্গুল তুলে সে জেরা করে শাকআলা বুড়িকে।

গৃহকর্ত্রী শাকআলা বুড়ি দুজনেই বিমুখ চোখে তাকায় রেহানার দিকে।

কিন্তু রেহানার এই যে আবিষ্কার সেটাকে সে প্রমাণ না করে ছাড়বে কেন? - কতোদিন আপনাকে বলেছি ধান্দাবাজ এই বুড়িকে বাড়ি ঢুকতে দেবেন না, শোনেননি, আর এখন ও চুপ করে আছে কেন, মাথার মধ্যে কোন শয়তানি আছে কে জানে! -ধারালো হয়ে ওঠে রেহানার গলা।

এই আক্রমণে শাকআলা বুড়ির কোনো প্রতিক্রিয়া হয় বলে বোঝা যায় না বরং এতোক্ষণ সে যে আয়েশ করে বসেছিলো; তার র্জীর্ণ প্রায় ঝুড়ি, ঝুড়ির পাশে বিছানো গামছা, ছোটো একটা কোটো ইত্যাদি খুব যত্নের সাথে গুছাতে থাকে।

গৃহকর্ত্রী এবার উত্তেজিত হয়ে ওঠে,-বলো, কথা বলছো না কেন? এতাদিন তুমি সব মিথ্যে বলেছো?

(৬)

মিথ্যে না বললি তুমরা নিতে ? মিথ্যে বলছে না কে ? গাড়ি বাড়ির জন্যি মিথ্যে বলছি ? বাঁচপো না!- শুধুমাত্র নিজেকে শুনিয়ে নিজের জন্যেই যেন কথাগুলো বললো শাকআলা বুড়ি।

শাকআলা বুড়ির এই নির্জলা স্বীকারোক্তি, এতোদিনের বিশ্বাসভঙ্গ, গৃহকর্ত্রী সহ্য করতে পারে না। বয়সের জড়ত্ব ভুলে স্প্রিং এর মতো লাফিয়ে উঠলেন তিনি, তারপর দ্রুত পা’য়ে ঘর থেকে একটা পঞ্চাশ টাকার নোট এনে শাকআলা বুড়ির দিকে বাড়িয়ে দিলেন- এই নাও, আর কোনোদিন যেন এই বাড়ির ত্রিসীমানায় তোমার না দেখি, তোমাকে এতো বিশ্বাস করি আর তুমি কিনা.... প্রচন্ড রাগে গৃহকর্ত্রীর কথা আটকিয়ে যায়, শুধু তাঁর ঠোঁট দুটো থর থর করে কাঁপতে থাকে।

এই উত্তেজনা শাকআলা বুড়িকে কিছু মাত্র ষ্পর্শ করে বলে মনে হয় না। নির্বিকার ভাবে সে হাত বাড়িয়ে টাকাটা নেয়, সযত্নে আঁচলে বাঁধে। তারপর উঠে দাঁড়িয়ে যথারীতি ঝুড়িটা কাঁখে নিয়ে সিড়ির রেলিং ধরে ধীর পা’য়ে নীচে নামতে থাকে।

দীর্ঘদিনের ঘনিষ্টজনের সম্ভাব্য বিচ্ছেদে বিপর্যস্ত গৃহকর্ত্রী সিঁড়ির ধারে এসে রেলিং ধরে দাঁড়ায়। শাকআলা বুড়ি তো তাঁর কাছে শুধু শাকবিক্রেতাই না আরও কিছু আর এই আরও কিছুর বিচ্ছেদ বেদনাকে আড়াল করতেই যেন তিনি জোর গলায় বলেন-খবরদার, এ বাড়িতে আর কখনও যদি তোমাকে দেখি সোজা পুলিশে দিয়ে দেবো, জালিয়াত মিথ্যুক।

শাকআলা বুড়ি থমকে দাঁড়িয়ে মুখ তুলে কয়েক মুহূর্ত গৃহকর্ত্রীর দিকে তাকিয়ে থাকে। তারপর যথারীতি সিঁড়ি দিয়ে নামে। গৃহকর্ত্রীর নিষেধাজ্ঞার গুরুত্ব তার কাছে কতোটুকু বোঝা যায় না। নিজেকে শুনিয়ে নিজের জন্যেই যেন সে আবার বলে-মিথ্যে বলছে না কে ? গাড়ি বাড়ির জন্যি বলছি? বাঁচবো না!

( দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুন ২২,২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

সাহিত্য এর সর্বশেষ খবর

সাহিত্য - এর সব খবর