সকাল থেকেই অধিবেশন প্রতিহত করতে বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে অবস্থান নেন উপাচার্যবিরোধী শিক্ষক ও সিনেটররা। বিকাল ৩টার দিকে উপাচার্য অধ্যাপক ফারজানা ইসলাম রেজিস্ট্রার ভবনের সামনে আসলে আন্দোলনকারী শিক্ষক ও সিনেটররা তাকে ভেতরে ঢুকতে না দিলে তিনি ফিরে যান।
তবে সিনেট সভাপতি হিসেবে উপাচার্য অধ্যাপক ড. ফারজানা ইসলাম নিজ ক্ষমতাবলে বাজেট অনুমোদন দিয়ে দেবেন বলে তিনি সাংবাদিকদের জানান।
এসময় উপাচার্য সাংবাদিকদের বলেন: বাজেট পাশ হওয়া নিয়ে কোনো অনিশ্চয়তা নেই। আমরা ২৯৩ কোটি টাকা চেয়ে ২৩৩ কোটি টাকা পেয়েছি। এটা বিধিমতে উপাচার্যের বিশেষ ক্ষমতাবলে পাশ হয়ে যাবে।
বিকেল তিনটার দিকে উপাচার্য ফারজানা ইসলাম তার অনুসারী সিনেট সদস্য ও শিক্ষকদের নিয়ে প্রশাসনিক ভবনে প্রবশে করতে গেলে সেখানে অবস্থানরত শরীফপন্থী শিক্ষকদের সংগঠন ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ’-এর শিক্ষক ও সিনেট সদস্যদের বাঁধার মুখে পড়েন। এসময় উপাচার্য কর্মসূচি প্রত্যাহার করে সিনেট অধিবেশনে যোগ দেওয়ার অনুরোধ জানান।
কিন্তু শরীফপন্থীদের সংগঠনের সম্পাদক সহযোগী অধ্যাপক ফরিদ আহমেদ উপাচার্যের কাছে চারটি আলোচ্যসূচি অন্তর্ভূক্ত করে অধিবেশন ডাকার দাবি জানান। দাবিগুলো হলো, ১৭ এপ্রিল শিক্ষকদের ওপর ‘হামলায়’ বিচার বিভাগীয় তদন্ত কমিটি গঠন, তলবি সভার মাধ্যমে উপাচার্য প্যানেল নির্বাচন প্রদানের ব্যবস্থা গ্রহণ, সিনেট থেকে সিন্ডিকেটে তিনটি ও অর্থ কমিটিতে একটি মেয়াদোত্তীর্ণ পদে নির্বাচন এবং জাকসু নির্বাচন।
এসময় উপাচার্য বলেন: আলোচনার মাধ্যমে এগুলোর সমাধান সম্ভব। ৪৫-৫০ দিনের মধ্যে বিশেষ সিনেটে অধিবেশন ডেকে মেয়াদোত্তীর্ণ পদ চারটিতে নির্বাচনের ব্যবস্থা করা হবে।’
আগামী জাতীয় নির্বাচনের আগে জাকসু নির্বাচন দেওয়া সম্ভব না জানিয়ে উপাচার্য বলেন: ছাত্র নেতৃবৃন্দের সঙ্গে আমি কথা বলেছি। জাকসু নির্বাচন আমারও কাম্য। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে কিছু নির্দেশনা রয়েছে। আগামী জাতীয় নির্বাচনের পরে জাকসুর দিকে অগ্রসর হবো।
অন্যদিকে জাকসু নির্বাচনের তফসিল ঘোষণার দাবিতে পৌনে তিনটায় ‘প্রগতিশীল ছাত্র জোট’ এর ব্যানারে প্রশাসনিক ভবনের সামনে অবস্থান নেয় বামপন্থী ছাত্র সংগঠনগুলো।
এর আগে উপাচার্যের বিরুদ্ধে অধ্যাদেশ, স্ট্যাটিউট ও কার্যপ্রণালি বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগ এনে বৃহস্পতিবার সকাল সাড়ে আটটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন প্রশাসনিক ভবনের ফটকগুলোতে তালা ঝুলিয়ে সেখানে অবস্থান নেন আওয়ামীপন্থীদের একাংশ শরীফ এনামুল কবিরের অনুসারী সিনেট সদস্য ও শিক্ষকরা। ‘বঙ্গবন্ধুর আদর্শ ও মুক্তিযুদ্ধের চেতনায় বিশ্বাসী প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজ এবং জোট’ এর ব্যানারে পূর্বঘোষিত এই কর্মসূচির কারণে দিনভর বন্ধ থাকে প্রশাসনিক কার্যক্রম।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুন ২৯,২০১৮)