thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালের ২ চিকিৎসক চাকরিচ্যুত

২০১৮ জুলাই ০৭ ১৭:৪২:১২
চট্টগ্রামের ম্যাক্স হাসপাতালের ২ চিকিৎসক চাকরিচ্যুত

চট্টগ্রাম অফিস: শিশু রাইফার মৃত্যুর ঘটনায় দুই চিকিৎসককে চাকরিচ্যুত করেছে চট্টগ্রামের বেরসরকারি ম্যাক্স হাসপাতাল।

শুক্রবার রাত ১০টার দিকে তাদের অব্যাহতি দেয়া হয়েছে। চিকিৎসক দুজন হলেন- ডা. দেবাশীষ সেন গুপ্ত ও ডা. শুভ্র দেব।

ম্যাক্স হাসপাতালের ব্যবস্থাপনা পরিচালক ডা. লিয়াকত আলী খান শনিবার দুপুরে বলেন, শিশু রাইফার মৃত্যুতে ওই দুই চিকিৎসকের অবহেলার অভিযোগের সত্যতা পাওয়ায় তাদেরকে চাকরিচ্যুত করা হয়েছে।

গলাব্যথা নিয়ে ২৮ জুন বিকেলে নগরীর মেহেদীবাগের বেসরকারি ম্যাক্স হাসপাতালে ভর্তি হওয়া দৈনিক সমকালের সিনিয়র রিপোর্টার রুবেল খানের আড়াই বছর বয়সী শিশুকন্যা রাইফা পরদিন শুক্রবার রাতে মারা যায়। অভিযোগ ওঠে- কর্তব্যরত চিকিৎসক ও নার্সদের অবহেলার কারণে এ ঘটনা ঘটেছে।

‘রাইফাকে হত্যা করা হয়েছে’-এ অভিযোগ তুলে চট্টগ্রামের সাংবাদিক সংগঠনগুলো আন্দোলন এবং দায়ীদের বিচার দাবি করা হচ্ছে।

পরে ঘটনা তদন্তে স্বাস্থ্য অধিদফতর থেকে একটি কমিটি করে দেয়া হয়। পাশাপাশি চট্টগ্রামের সিভিল সার্জনের নেতৃত্বে তিন সদস্যের একটি কমিটিও এ ঘটনার তদন্ত করে। সিভিল সার্জনের নেতৃত্বাধীন কমিটি বৃহস্পতিবার রাতে তাদের প্রতিবেদন দেয়।

এতে বলা হয়, চিকিৎসক ও ম্যাক্স হাসপাতাল কর্তৃপক্ষের অবহেলার কারণে শিশু রাইফার মৃত্যু হয়েছে। রাইফার মৃত্যুর সঙ্গে সম্পৃক্ত তিন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তির সুপারিশ করা হয় ওই প্রতিবেদনে।

চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. আজিজুর রহমান সিদ্দিকীর নেতৃত্বে তদন্ত প্রতিবেদনে উল্লেখ করা হয়, রাইফার মৃত্যুর পর হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ও চিকিৎসকদের বিরুদ্ধে রাইফার বাবা-মা যে অভিযোগ করেছিলেন, তার সত্যতা পাওয়া গেছে।

এতে আরও বলা হয়, রাইফা হাসপাতালে ভর্তি হওয়ার পর থেকে তার রোগনির্ণয় ও ওষুধ প্রয়োগ যথাযথ থাকলেও সে যখন খিঁচুনিতে আক্রান্ত হয়, তখন চিকিৎসকের অনভিজ্ঞতা ও আন্তরিকতার অভাব পরিলক্ষিত হয়। জটিল পরিস্থিতি মোকাবেলার দক্ষতা ও জ্ঞান তাদের ছিল না।

‘ম্যাক্স হাসপাতালে জরুরি বিভাগে ভর্তি ও চিকিৎসা শুরুর প্রতিটি ক্ষেত্রে রাইফার অভিভাবকদের ভোগান্তি ছিল চরমে। শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় শিশুটিকে যথেষ্ট সময় ও মনোযোগ দিয়ে দেখেননি। রোগ জটিলতায় বিপদকালীন সময়ে আন্তরিকতার সঙ্গে সেবা প্রদান করেননি বলে রাইফার বাবা-মা যে অভিযোগ করেছেন, তা সত্য বলে প্রতীয়মান হয়।’

তদন্ত প্রতিবেদনে আরও উল্লেখ করা হয়, ম্যাক্স হাসপাতালে ভোগান্তি অনেক প্রকট। চিকিৎসক ও নার্সদের সেবা প্রদানের সমন্বয় নেই। অদক্ষ নার্স ও অনভিজ্ঞ চিকিৎসক নিয়োগের ফলে এই হাসপাতালে কাঙ্ক্ষিত চিকিৎসাসেবা পায় না রোগীরা।

তদন্ত প্রতিবেদনে ম্যাক্স হাসপাতালে রাইফাকে চিকিৎসা প্রদানকারী শিশু বিশেষজ্ঞ ডা. বিধান রায় চৌধুরীসহ চিকিৎসায় অবহেলার দায়ে তিনজন চিকিৎসকের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থাগ্রহণ প্রয়োজন বলে উল্লেখ করা হয়।

তদন্ত কমিটিতে চট্টগ্রামের সিভিল সার্জন ছাড়াও অপর দুই সদস্য হলেন-চট্টগ্রাম মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের শিশু স্বাস্থ্য বিভাগের প্রধান ডা. প্রণব কুমার চৌধুরী ও চট্টগ্রাম সাংবাদিক ইউনিয়নের যুগ্ম সম্পাদক সবুর শুভ।

এছাড়া সরেজমিন পরিদর্শন শেষে স্বাস্থ্য অধিদফতরের পরিদর্শন দল ম্যাক্স হাসপাতালের ১১টি অনিয়ম চিহ্নিত করেছে।

আগামী ১৫ কর্মদিবসের মধ্যে লাইসেন্স ও চিকিৎসক-নার্স নিয়োগের সব তথ্য দিতে নোটিশ দেয়া হয়েছে হাসপাতাল কর্তৃপক্ষকে।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুলাই ০৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর