স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালকের উপস্থিতিতে চট্টগ্রামের বেসরকারি হাসপাতালের সম্প্রতি ধর্মঘটের প্রসঙ্গ টেনে হাইকোর্ট আরও বলেন, মেয়েটাকে তো আর ফিরিয়ে আনা যাবে না। কারণ আমরা জানি ডাক্তার দেবতা নন, ডাক্তার মানুষ। মানুষ মাত্রই ভুল হতে পারে। সে ভুলটা অন্যায় নয়। কিন্তু ভুলটাকে সঠিক বলে চালানের জন্য হরতাল ডাকা হলে সেটা অন্যায়।
গত মার্চে চুয়াডাঙ্গায় এক চক্ষু শিবিরে ২০ জনের চোখ নষ্ট হওয়ার প্রেক্ষাপটে করা রিটের শুনানিতে হাইকোর্ট সোমবার এসব মন্তব্য করেন।
রিটকারী আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত জানান, চুয়াডাঙ্গার ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টারে তিন দিনের চক্ষু শিবিরের দ্বিতীয় দিন গত ৫ মার্চ ২৪ জন নারী-পুরুষের চোখের ছানি অপারেশন করা হয়।
কিন্ত অপারেশনের পর বাসায় ফিরেই ওই ২০ জন রোগীর চোখে জ্বালা পোড়াসহ ব্যথা অনুভূত হয়। এর পরদিন তারা ইমপ্যাক্ট হাসপাতালে যোগাযোগ করলে রোগীদের গুরুত্ব না দিয়ে ফেরত পাঠানো হয়।
এরপর উন্নত চিকিৎসার জন্য জরুরি ভিত্তিতে রোগীদের ঢাকায় নেওয়া হলে চোখ নষ্ট হওয়া ২০ জন নারী-পুরুষের মধ্যে ১৯ জনের একটি করে চোখ তুলে ফেলতে হয়।
এরপর ‘চক্ষু শিবিরে গিয়ে চোখ হারালেন ২০ জন!’ শিরোনামে দৈনিক পত্রিকায় গত ২৯ মার্চ প্রতিবেদন প্রকাশ হয়।
সে প্রতিবেদন যুক্ত করে গত ১ এপ্রিল হাইকোর্টে একটি রিট করেন সুপ্রিম কোর্টের আইনজীবী অমিত দাসগুপ্ত।
এরপর সে রিটের শুনানি নিয়ে আদালত ওই চক্ষু শিবিরে চিকিৎসায় চোখ হারানো ২০ জনকে এক কোটি টাকা করে কেন ক্ষতিপূরণ দেওয়া দেয়া হবে না তা জানতে চেয়ে রুল জারি করেন। স্বাস্থ্য সচিব, স্বরাষ্ট্র সচিব, স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক, চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জন, ডিসি ও এসপি, ইমপ্যাক্ট মাসুদুল হক মেমোরিয়াল কমিউনিটি হেলথ সেন্টার, ডা.মোহাম্মদ শাহীনসহ ১০ জনকে ২ সপ্তাহের মধ্যে রুলের জবাব দিতে বলা হয়।
কিন্তু ওই রুলের জবাব না পেয়ে গত ৩ জুলাই হাইকোর্ট স্বাস্থ্য অধিদপ্তরের মহাপরিচালক ও চুয়াডাঙ্গার সিভিল সার্জেনকে ৯ জুলাই আদালতে হাজির হতে বলেন।
সে অনুযায়ী আজ তারা দুজন বিচারপতি এফ আর এম নাজমুল আহাসান ও বিচারপতি কে এম কামরুল কাদেরের হাইকোর্ট বেঞ্চে হাজির হলে আদালত এসব মন্তব্য করেন।
এরপর আদালত চুয়াডাঙ্গার চক্ষু শিবিরে ২০ জনের চোখ নষ্ট হওয়ার প্রকৃত কারণ কি ও দোষী কে তা নির্ধারণ করে বিবাদীদের প্রকৃত জবাব আদালতে দাখিল করতে বলেন।
আগামী ১৬ জুলাই হাইকোর্ট এ বিষয় পরবর্তী শুনানির দিন ধার্য করেন।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ০৯,২০১৮)