thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

যে ভাবে রূপকথা লিখল ফ্রান্স

২০১৮ জুলাই ১৬ ০০:০৫:৩৫
যে ভাবে রূপকথা লিখল ফ্রান্স
দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: মহাদেশীয় একটি টুর্নামেন্টের ফাইনালে হারের স্বাদ কোনো দলকে কতটা তাঁতিয়ে দিতে পারে সেটির উদাহরণ হয়ে থাকল ফ্রান্স। ২০১৬ ইউরোর ফাইনালে পর্তুগালের কাছে ১-০ গোলে হারের জ্বালাটা ভুলতে পারেনি দলটি। কোচ দিদিয়ের দেশম আসলে ভুলতে দেননি, আবার বিষাদের মাঝে আটকেও রাখেননি। হারের পর শিষ্যদের মানসিকতায় অবশ্য যোগ করেছিলেন শিক্ষা আর দৃঢ় প্রতিজ্ঞা। যেটা কাজে লাগিয়ে লুঝনিকির ফাইনালে রূপকথা লিখল দ্বিতীয়বার বিশ্বচ্যাম্পিয়ন হওয়া ফরাসিরা।

ফ্রান্স যে ভালো করবে সেটা রাশিয়ায় আসার আগে থেকেই টের পাওয়া যাচ্ছিল। বিশ্বকাপ বাছাই থেকেই অদম্য খেলেছে তরুণ দলটি। এক সুইডেনের কাছে হার ছাড়া কোনো ম্যাচেই পরাজয় দেখেনি লা ব্লুজরা। অপেক্ষাকৃত তরুণদের নিয়ে সাজানো একটা দলের এমন পারফরম্যান্স মন ভরিয়েছে বোদ্ধাদেরও। সেই দলটাই যখন অভিজ্ঞতায় ভরপুর জার্মানিকে প্রীতি ম্যাচে ২-২ গোলে রুখে দিয়েছে, তখনই টের পাওয়া যাচ্ছিল দারুণকিছুর অপেক্ষায় ফ্রেঞ্চরা।

যদিও প্রত্যাশা অনুযায়ী পারফরম্যান্স বিশ্বকাপের মূলপর্বের শুরুতে খুঁজে পাওয়া যায়নি ফ্রান্সের খেলায়। পল পগবা, কাইলিয়ান এমবাপে, উসমানে ডেম্বেলেদের নিয়ে গড়া দল অস্ট্রেলিয়ার মতো প্রতিপক্ষের বিপক্ষে জিতেছে ২-১ ব্যবধানে। সেটিও একটি পেনাল্টি, অপরটি আত্মঘাতী গোলের সুবাদে!

দ্বিতীয় ম্যাচে আরও করুণ দশা। পেরুর মতো দলের বিপক্ষে জিততে ঘাম ছুটে যায় ফরাসিদের। ৩৪ মিনিটে কাইলিয়ান এমবাপে গোলে উদ্ধার।

গোলে ভরা রাশিয়া বিশ্বকাপে কেবল একবারই দেখেছে গোলহীন ম্যাচ। সেটা এই ফ্রান্সের কল্যাণেই। আগেভাগেই দ্বিতীয় রাউন্ড নিশ্চিত হয়ে যাওয়ায় ডেনমার্কের বিপক্ষে একদম প্রাণহীন ফুটবল খেলেছেন গ্রিজম্যান-এমবাপেরা। খানিকটা সমালোচনাও হয়েছে তখন। এরপরই খোলস ছেড়ে বেরিয়ে আসে দলটি।

সমালোচনা কিংবা ভালো খেলার তাগিদ, আসল ফ্রান্সকে খুঁজে পাওয়া যায় নকআউটে। আর্জেন্টিনার বিপক্ষে দ্বিতীয় রাউন্ডের ম্যাচে গতিময় ফুটবল, ছন্দময় পাস আর আক্রমণের পসরা সাজানো ম্যাচ উপহার দেয় তারা। একসময় ২-১ গোলে পিছিয়ে থেকেও শেষপর্যন্ত ৪-৩ ব্যবধানে জিতে সেরা আটে ফরাসিরা। জোড়া গোলে বিশ্বের নজর আরও একবার নিজের দিকে টেনে নেন কাইলিয়ান এমবাপে।

কোয়ার্টারে কোনো একক নৈপুণ্য খুঁজে পাওয়া যায়নি, বরং উরুগুয়ের বিপক্ষে দলগত এক ফ্রান্সের দেখা মেলে। এডিনসন কাভানিবিহীন উরুগুয়েকে রুখে দিতে একসঙ্গে আক্রমণে উঠে আবার একসঙ্গে নিচে নেমে খেলতে থাকে দলটি। দারুণ প্রদর্শনীর পর ফলাফল ২-০ গোলের জয়। ভারানের হেডে গোলের পর গ্রিজম্যানের দূরপাল্লার শট ঠেকাতে গিয়ে উরুগুয়ে গোলরক্ষক ফার্নান্দো মুসলেয়ারার ক্ষমার অযোগ্য ভুল করে বসেন, বিশ্বকাপ থেকে ছিটকে যায় উরুগুয়ে।

পরে সেমিফাইনালের ম্যাচ। কোয়ার্টার পর্যন্ত আধিপত্য থাকলেও বেলজিয়ামের বিপক্ষে একপ্রকার কোণঠাসা হয়ে থেকেও শেষপর্যন্ত জয়টা দেখে দেশমের দলই। নামি-দামি ফরোয়ার্ড থাকলেও দলকে জেতাতে এগিয়ে আসতে হয় স্যামুয়েল উমতিতিকে। ডিফেন্ডারের হেডেই সেমির মহাতরী পার হয়ে যায় ফ্রান্স।

ফাইনালে প্রতিপক্ষ পায় ক্রোয়েশিয়াকে। যারা নিজেদের ইতিহাসে প্রথমবার বিশ্বকাপ ফাইনালের মঞ্চে এসেছিল। ১৯৯৮ সালের চ্যাম্পিয়ন ফ্রান্স তাদের বিপক্ষে শুরুতে তল খুঁজে পেতে লড়লেও শেষ ফল উল্টোই হয়েছে! শিরোপা জিতেই মাঠ ছেড়েছে জিদানের উত্তরসূরিরাই। নিজেদের দ্বিতীয় বিশ্বকাপ ঘরে তুলেছে ক্রোয়েটদের ৪-২ গোলে হারিয়ে।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ১৫,২০১৮)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

খেলা এর সর্বশেষ খবর

খেলা - এর সব খবর