thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মে 24, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ৯ জিলকদ  1445

একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছেন না ইমরান খান

২০১৮ জুলাই ২৭ ১১:৩২:২৩
একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছেন না ইমরান খান

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনের চূড়ান্ত ফলাফল এখনও ঘোষণা না করা হলেও ইমরান খানের দল পিটিআই যে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছে না তা এরইমধ্যে নিশ্চিত হয়ে গেছে।

৯৫ শতাংশ ভোট গণনা শেষে পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ১১০টি আসনে জয় পেয়েছে পিটিআই। আর মাত্র ১৯টি আসনে ফলাফল ঘোষণা বাকি। যদি ওই ১৯টি আসনের সবগুলোতেও পিটিআই জয় পায়, তারপরও তাদের পাওয়া আসন সংখ্যা ১২৯টির বেশি হচ্ছে না। পাকিস্তানের সাধারণ নির্বাচনে কোনও দলকে নিরঙ্কুশ সংখ্যাগরিষ্ঠতা অর্জন করতে হলে ১৩৭টি আসনে জয়ী হতে হয়। একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা না পাওয়ায় ইমরান খানকে এখন ছোট দল কিংবা স্বতন্ত্র প্রার্থীদের সঙ্গে জোট করে সরকার গঠন করতে হবে।

পাকিস্তানের ৩৪২ আসনবিশিষ্ট জাতীয় পরিষদে সরাসরি নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয় ২৭২টি আসনে। বাকিগুলো সংরক্ষিত আসন। এরমধ্যে ৬০টি নারীদের জন্য ও বাকি ১০টি ধর্মীয় সংখ্যালঘু সম্প্রদায়ের জন্য সংরক্ষিত। বুধবার ২৭২টি আসনে নির্বাচনের কথা থাকলেও দুইটি আসনে ভোট স্থগিত করা হয়। নির্বাচনে একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পেতে একটি দলকে কমপক্ষে ১৩৭টি আসনে জয় নিশ্চিত করতে হবে। তবে বুধবার (২৫ জুলাই) রাত ২টার মধ্যে নির্বাচনের ফল পেয়ে যাওয়ার কথা থাকলেও এখন পর্যন্ত চূড়ান্ত ফল জানা যায়নি। বিলম্ব হওয়ার পেছনে যান্ত্রিক ত্রুটিকে কারণ হিসেবে দেখিয়েছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। তবে এরইমধ্যে নিজেকে বিজয়ী দাবি করে জাতির উদ্দেশে ভাষণ দিয়েছেন দেশটির সম্ভাব্য পরবর্তী প্রধানমন্ত্রী ইমরান খান। বিরোধীদের আনা কারচুপির অভিযোগ প্রত্যাখ্যান করেছেন তিনি। ঘোষণা দিয়েছেন, প্রয়োজনে ক্ষমতায় আসার পর এ নিয়ে নিরপেক্ষ তদন্ত করবেন।

শুক্রবার (২৭ জুলাই) সকাল পর্যন্ত পাকিস্তানের নির্বাচন কমিশন যে প্রাথমিক ফল জানিয়েছে, তাতে ইমরান খান একক সংখ্যাগরিষ্ঠতা পাচ্ছেন না। ইমরানের দলের পাওয়া ১১০টি আসনের পাশাপাশি ৬৩টি আসনে জয় পেয়ে দ্বিতীয় অবস্থানে রয়েছে পিএমএল-এন। পিপিপি পেয়েছে ৪২টি আসন। ২৫ জুলাই সাধারণ নির্বাচনের পাশাপাশি পাকিস্তানের চার প্রদেশেও প্রাদেশিক নির্বাচন হয়েছে। ৯৫ শতাংশ ভোট গণনা শেষে পাঞ্জাবের প্রাদেশিক নির্বাচনে পিটিআই পেয়েছে ১১৮টি আসন, পিএমএল-এন পেয়েছে ১২৭টি আসন আর পিপিপি পেয়েছে মাত্র ৬টি আসন। সিন্ধুর প্রাদেশিক নির্বাচনে পিটিআই পেয়েছে ২০টি আসন, পিএমএল-এন একটিও পায়নি, আর পিপিপি ৭১টি আসন পেয়েছে। খাইবার পাখতুণখোযাতে পিটিআই ৬৬টি আসনে জয় পেয়েছে। পিএমএল-এন পেয়েছে ৫টি ও পিপিপি পেয়েছে ৪টি আসন। এছাড়া বেলুচিস্তানে পিটিআই ৪টি, পিএমএল-এন একটি আসন পেয়েছে। সেখানে পিপিপি কোনও আসনে জয় পায়নি।

এদিকে শুরুতে ফল প্রত্যাখ্যান করলেও বৃহস্পতিবার (২৬ জুলাই) পিএমএল-এন’র নির্বাহী কমিটির একটি বৈঠক হয়েছে। দলের নেতা শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বৈঠকটি হয়। সেখানে সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়, পিএমএল-এন ‘শক্ত বিরোধী দল হিসেবে ভূমিকা পালন করবে।’ শাহবাজ শরিফ জানান, তারা তারা বিজয়ী প্রার্থীদেরকে অভিনন্দন জানিয়ে চিঠি পাঠাবেন। আর পরাজিত প্রার্থীদের কাছে পাঠানো হবে উৎসাহমূলক চিঠি। পিএমএল-এন সভাপতি শাহবাজ আরও জানান, ভোট কারচুপির বিরুদ্ধে সোচ্চার হবেন তারা। দলের পক্ষ থেকে নির্বাচন কমিশনের কাছে কারচুপির প্রমাণ সরবরাহ করা হবে বলেও জানান তিনি।

নির্বাচনের পরদিন বৃহস্পতিবার (২৬জুলাই) দিনের প্রথম কয়েক ঘণ্টায় ঘুরেফিরে আলোচনায় এসেছে ব্যাপক বিলম্ব আর কারচুপির অভিযোগ। নওয়াজ শরিফের মুসলিম লীগ আর বিলাওয়াল ভুট্টোর পাকিস্তান পিপলস পার্টিসহ শীর্ষ রাজনৈতিক দলগুলো ভোটে কারচুপির অভিযোগ এনে ফল প্রত্যাখ্যানের ঘোষণা দিয়েছে। পাকিস্তানের শীর্ষ ধারার রাজনৈতিক দল ‘পাকিস্তান মুসলিম লীগ’ (পিএমএল-এন), ‘পাকিস্তান পিপলস পার্টি’ (পিপিপি) এবং ‘মুত্তাহিদা পাকিস্তান মুভমেন্ট-পাকিস্তান’ (এমকিউএম-পি) নির্বাচনে কারচুপির অভিযোগ এনে প্রাথমিক ফলাফল প্রত্যাখ্যান করেছে। দলগুলো একসঙ্গে সংবাদ সম্মেলন করে নির্বাচনে অনিয়মের অভিযোগ এনেছে। তাদের পক্ষ থেকে মূলত পোলিং এজেন্টদের ভোটকেন্দ্রে থাকতে না দেওয়া ও তাদের হাতে ভোট গণনার পর পাওয়া ফল না দেওয়ার অভিযোগ তোলা হয়েছে।

পাকিস্তানের নির্বাচনি ব্যবস্থা অনুযায়ী, ভোট গণনার পর ফর্ম-৪৫ এ প্রার্থীদের নামের পাশে তারা কতটি করে ভোট পেলেন তা লিখে রাখেন প্রিসাইডিং অফিসাররা। এরপর ফর্মের স্ক্রিন শট নিয়ে তা রেজাল্টস ট্রান্সমিশন সিস্টেম নামের অ্যান্ড্রয়েড অ্যাপ্লিকেশনে আপলোড করেন তারা। এর মধ্য দিয়ে যথাযথ সময়ের মধ্যে নির্বাচন কমিশনে ফলাফল পাঠাতে পারেন নির্বাচনি কমকর্তারা। তবে শুরু থেকেই নির্বাচন কমিশন দাবি করে আসছে, যান্ত্রিক গোলযোগের কারণে ফল প্রকাশে বিলম্ব হচ্ছে। সূত্রকে উদ্ধৃত করে ডনের প্রতিবেদনে বলা হয়, রেজাল্টস ট্রান্সমিশন সিস্টেম অকার্যকর হয়ে পড়ায় এখন ফ্যাক্সের মাধ্যমে ফলাফল সংগ্রহ করতে হচ্ছে কমিশনকে। আর সে ফলাফলকে ম্যানুয়ালি একত্রিত করার প্রয়োজন পড়ছে। বিলম্বের কথা উল্লেখ করে নির্বাচন কমিশন সচিব বাবর ইয়াকুব সাংবাদিকদের বলেন, ‘আমরা আপনাদেরকে যথার্থ ফল জানাতে চাই। ফল হাতে পাওয়ার পর যত দ্রুত সম্ভব আমরা জানাব।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জুলাই ২৭, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর