thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২ মে 24, ১৯ বৈশাখ ১৪৩১,  ২৩ শাওয়াল 1445

শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরতে বললেন দিয়ার বাবা

২০১৮ আগস্ট ০২ ১৬:৪৭:২১
শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরতে বললেন দিয়ার বাবা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ‘প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা আমাকে আশ্বাস দিয়েছেন, আমার মেয়ে হত্যার বিচার পাব। তিনি আমাকে সান্ত্বনা দিয়েছেন। স্বরাষ্ট্রমন্ত্রীও বলছেন, কঠোর শাস্তি হবে হত্যাকারীর। আন্দোলনরত ছাত্রদের আমি বলবো, বাবারা তোমরা যারা রাস্তায় কষ্ট করছো, তোমরা ঘরে ফিরে যাও।’

আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি এই আহ্বান জানিয়েছেন ২৯ জুলাই বাসচাপায় নিহত শিক্ষার্থী দিয়া খানম মিমের বাবা জাহাঙ্গীর আলম।

বৃহস্পতিবার প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ে তাকে নিয়ে যাওয়া হয়। সেখানে শেখ হাসিনার সঙ্গে তার সাক্ষাৎ হয়। এরপর সাংবাদিকদের সঙ্গে কথার বলার সময় জাহাঙ্গীর আলম এ আহ্বান জানান।

জানা গেছে, বৃহস্পতিবার বেলা ১১টায় প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয় থেকে একটি গাড়ি এসে মিমের মা রোকসানা বেগম, বাবা জাহাঙ্গীর আলম, বড় বোন রোকেয়া খানম রিয়া ও ছোট ভাই পঞ্চম শ্রেণির শিক্ষার্থী রিয়াদুল ইসলাম আরাফাতকে নিয়ে যায়।

প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করতে যান একই দুর্ঘটনায় নিহত শিক্ষার্থী আবদুল করিমের পরিবারের সদস্যরাও। আবদুল করিমের বোনও একই আহ্বান জানান আন্দোলনরত শিক্ষার্থীদের প্রতি।

সেখানে প্রধানমন্ত্রী শোকাহত দুই পরিবারকে সান্ত্বনা দেন এবং প্রত্যেক পরিবারকে ২০ লাখ টাকার পারিবারিক সঞ্চয়পত্র অনুদান দেন। এ সময় প্রধানমন্ত্রীর সঙ্গে ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামালও।

২৯ জুলাই দুপুরে রাজধানীর বিমানবন্দর সড়কের কুর্মিটোলা জেনারেল হাসপাতালের সামনে এমইএস বাস স্ট্যান্ডে জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের চালকের রেষারেষির ফলে একটি বাসের চাকায় পিষ্ট হয়ে দুই শিক্ষার্থী নিহত হয়। একই ঘটনায় আহত হয় ১০-১৫ জন শিক্ষার্থী।

নিহত দুই শিক্ষার্থী হলো- শহীদ রমিজউদ্দিন ক্যান্টনমেন্ট কলেজের একাদশ শ্রেণির ছাত্রী দিয়া খানম মিম ও বিজ্ঞান বিভাগের দ্বাদশ শ্রেণির ছাত্র আব্দুল করিম রাজিব।

এ ঘটনায় দিয়ার বাবা রবিবারই ক্যান্টনমেন্ট থানায় একটি মামলা করেন। দুই শিক্ষার্থী নিহত হওয়ার পর থেকেই নিরাপদ সড়কের দাবিতে আন্দোলন করে আসছেন শিক্ষার্থীরা। তাদের আন্দোলনে বৃহস্পতিবার পঞ্চম দিনেও স্থবির হয়ে রয়েছে ঢাকা। নিরাপত্তাহীনতার অজুহাতে ঢাকা শহরের সব রুটে বাস চলাচল বন্ধ রেখেছেন পরিবহন মালিকরা।

এমন আন্দোলনের পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার জাবালে নূর পরিবহনের দুই বাসের রেজিস্ট্রেশন বাতিল করে বাংলাদেশ সড়ক পরিবহন কর্তৃপক্ষ (বিআরটিএ)।

শিক্ষার্থীরা নয় দফা দাবি জানিয়েছিল। দাবিগুলো হলো- দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় দায়ী বেপরোয়া ড্রাইভারকে ফাঁসি দিতে হবে, নৌ-পরিবহন মন্ত্রীকে নিঃশর্ত ক্ষমা চাইতে হবে, শিক্ষার্থীদের চলাচলে এমইএস ফুটওভার ব্রিজ বা বিকল্প নিরাপদ ব্যবস্থা গ্রহণ করতে হবে, প্রত্যেক সড়কের দুর্ঘটনাপ্রবণ এলাকায় স্প্রিড ব্রেকার দিতে হবে, সড়ক দুর্ঘটনায় নিহত ছাত্র-ছাত্রীদের দায়ভর সরকারকে নিতে হবে, শিক্ষার্থীরা বাস থামানোর সিগন্যাল দিলে- থামিয়ে তাদেরকে নিতে হবে, শুধু ঢাকা নয়, সারা বাংলাদেশের শিক্ষার্থীদের জন্য হাফ ভাড়ার ব্যবস্থা করতে হবে, ফিটনেসবিহীন গাড়ি রাস্তায় চলাচল বন্ধ ও লাইসেন্স ছাড়া চালকরা গাড়ি চালাতে পারবেন না এবং বাসে অতিরিক্ত যাত্রী নেয়া যাবে না।

তাদের এই দাবিগুলো যৌক্তিক উল্লেখ করে স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল বুধবার বলেন, দাবিগুলো বাস্তবায়নে পর্যায়ক্রমে ব্যবস্থা নেয়া হচ্ছে। একইসঙ্গে শিক্ষার্থীদের ঘরে ফিরে যাওয়ার আহ্বান জানান তিনি।

আর এমন পরিস্থিতির মধ্যে সড়ক পরিবহন আইনের খসড়ার ভেটিং (পরীক্ষা-নিরীক্ষা) সম্পন্ন করার কথা জানিয়েছে আইন মন্ত্রণালয়। একই সঙ্গে এ সংক্রান্ত নথি সড়ক পরিবহন ও সেতু মন্ত্রণালয়ে পাঠানো হচ্ছে। বুধবার আইন, বিচার ও সংসদবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের জনসংযোগ কর্মকর্তা রেজাউল করিম এ তথ্য জানান।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/আগস্ট ০২, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর