thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৭ জমাদিউল আউয়াল 1446

 বাড়ছে রেমিট্যান্স, ডলার চাঙ্গা

২০১৮ অক্টোবর ০১ ১৪:৪৩:০৭
 বাড়ছে রেমিট্যান্স, ডলার চাঙ্গা

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : দেশের বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী অন্যতম খাত রেমিট্যান্স। প্রবাসী বাংলাদেশিদের পাঠানো এ রেমিট্যান্স জাতীয় উন্নয়নের সহায়ক হাতিয়ার। বাংলাদেশের জিডিপিতে এর অবদান ১২ শতাংশ। প্রবাসীদের পাঠানো এ অর্থ গতি সঞ্চার করছে গ্রামীণ অর্থনীতিতে। গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রার মান বাড়ছে।


অনেকেই জানেন দেশের প্রধান বৈদেশিক মুদ্রা অর্জনকারী খাত গার্মেন্টস শিল্প। কিন্তু বাস্তবে তার চেয়েও বেশি বৈদেশিক মুদ্রা আসে রেমিট্যান্সের মাধ্যমে। কারণ, পোশাক রপ্তানি করে পাওয়া বৈদেশিক মুদ্রার বড় একটা অংশ চলে যায় কাঁচামাল আমদানিতে। তাই বিশ্লেষকরা বলছেন, রেমিট্যান্স থেকে নিট আয় পোশাক শিল্পের চেয়ে তিনগুণ বেশি।

বিশ্বব্যাংকের এক হিসাবে দেখা গেছে, রেমিট্যান্স আহরণকারী দেশের মধ্যে দশম অবস্থানে রয়েছে বাংলাদেশ। আর দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আমাদের অবস্থান তৃতীয়। ভারত ও পাকিস্তান রয়েছে প্রথম ও দ্বিতীয় অবস্থানে। দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলোর মধ্যে আহরিত রেমিট্যান্সের ৫৮ দশমিক ৬০ ভাগ আহরণ করে ভারত। সেখানে বাংলাদেশের আহরণ ১১ দশমিক ৫২ শতাংশ।

বাংলাদেশ ব্যাংকের তথ্য অনুযায়ী, ২০১৪-১৫ অর্থবছরে দেশে রেকর্ড পরিমাণ রেমিট্যান্স আসে। ওই অর্থবছরে এক হাজার ৫৩১ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। পরের অর্থবছরে এক হাজার ৪৯৩ কোটি ডলার রেমিট্যান্স আসে। আর গত বছরে দেশে এক হাজার ৪৯৮ কোটি ১৭ লাখ ডলার রেমিট্যান্স এসেছে। প্রতিনিয়ত রেমিট্যান্স আসা বাড়ছে। মূলত আন্তর্জাতিক বাজারে জ্বালানি তেলের দাম এবং দেশে ডলারের দাম বেড়ে যাওয়ায় রেমিট্যান্স আয়ও বেড়েছে বলে মনে করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে বাংলাদেশ ব্যাংকের দাবি হুন্ডি প্রতিরোধে নেওয়া বিভিন্ন পদক্ষেপের কারণে ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স বেড়েছে।

আর্থিক খাত সংশ্লিষ্টরা বলছেন, চলতি বছরের শুরু থেকে পণ্য আমদানি বাড়ার কারণে বাজারে এখন ডলারের চাহিদা বেশি। সে কারণে ব্যাংকগুলো তাদের নিজেদের প্রয়োজনেই রেমিট্যান্স আনতে বেশি আগ্রহী। অন্যদিকে জ্বালানি তেলের দাম বাড়ায় মধ্যপ্রাচ্যের প্রবাসীদের আয় ভালো হওয়ায় এবং ডলারের বিপরীতে বেশি টাকা পাওয়ার কারণে প্রবাসীরাও ব্যাংকিং চ্যানেলে রেমিট্যান্স পাঠাচ্ছেন। এ ছাড়া হুন্ডি প্রতিরোধে বাংলাদেশ ব্যাংকের বেশকিছু উদ্যোগও কাজ করছে।

আন্তঃব্যাংক মুদ্রাবাজারে গতকাল প্রতি মার্কিন ডলার ৮৩ টাকা ৭৫ পয়সা দরে বিক্রি হয়েছে। আগের বছরের একই দিন এই দর ছিল ৮০ টাকা ৬০ পয়সা। এ হিসাবে গত এক বছরে আন্তঃব্যাংক লেনদেনে ডলারের দাম বেড়েছে প্রায় ৪ শতাংশ। আর রেমিট্যান্স পাঠিয়ে আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় এখন প্রায় ৫ শতাংশ বেশি টাকা পাচ্ছেন প্রবাসীরা।

দেশে প্রতিবছর যে পরিমাণ রপ্তানি আয় হয় তা দিয়ে আমদানি ব্যয় মেটানো সম্ভব হয় না। আমদানি ব্যয় ও রপ্তানি আয়ের ঘাটতি মেটানো হয় মূলত রেমিট্যান্স দিয়ে। দেশের মোট আমদানি ব্যয়ের ৪৫ শতাংশ মেটানো হয় রপ্তানি আয় থেকে। বৈদেশিক অনুদান ও প্রকল্প সহায়তা থেকে ১৯ শতাংশ ও বাকি ৩৬ শতাংশ মেটানো হয় প্রবাসীদের পাঠানো রেমিট্যান্স থেকে।

এক হিসাবে দেখা গেছে, গত অর্থবছরে (২০১৭-১৮) দেশে পাঁচ হাজার ৪৪৬ কোটি ডলারের পণ্য আমদানি হয়। যা আগের অর্থবছরের চেয়ে ২৫ দশমিক ২৩ শতাংশ বেশি। অন্যদিকে গত অর্থবছরে রপ্তানি বেড়েছে মাত্র ৫ দশমিক ৮১ শতাংশ। ওই অর্থবছরে রপ্তানি আয় হয়েছে তিন হাজার ৬৬৭ কোটি ডলার। আর পরপর দুই অর্থবছর কমার পর গত অর্থবছরে রেমিট্যান্স ১৭ দশমিক ৩০ শতাংশ বেড়েছে।

তবে বর্তমানে এক কোটির বেশি প্রবাসী বিশ্বের বিভিন্ন দেশে অবস্থান করছেন। রেমিট্যান্সের অর্ধেকের বেশি আসে মধ্যপ্রাচ্যের ছয় দেশ সৌদি আরব, সংযুক্ত আরব আমিরাত, কাতার, ওমান, কুয়েত ও বাহরাইন থেকে। তবে সম্প্রতি এসব দেশে প্রবাসী যাওয়ার হার কমে গেছে। জনশক্তি কর্মসংস্থান ও প্রশিক্ষণ ব্যুরো (বিএমইটি) তথ্য অনুযায়ী, ২০১৮ সালের প্রথম ছয় মাসে (জানুয়ারি-জুন) বাংলাদেশ থেকে জনশক্তি রপ্তানি হয়েছে তিন লাখ ৯২ হাজার ২৫০ জন। যা আগের বছরের একই সময়ের তুলনায় ২৫ শতাংশ কম।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/অক্টোবর ০১,২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

এর সর্বশেষ খবর

- এর সব খবর