thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

সাংবাদিক শিমুল হত্যায় মেয়র মিরুর জামিন

২০১৮ নভেম্বর ০৪ ২১:৩৫:৪৮
সাংবাদিক শিমুল হত্যায় মেয়র মিরুর জামিন

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: শাহজাদপুরে সমকালের প্রতিনিধি আবদুল হাকিম শিমুল হত্যা মামলার চার্জশিটভুক্ত প্রধান আসামি বরখাস্তকৃত মেয়র হালিমুল হক মিরুকে জামিন দিয়েছেন হাইকোর্ট।

এক জামিন আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম ও বিচারপতি মো. মোস্তাফিজুর রহমান সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ রবিবার রুল নিষ্পত্তি করে এ রায় দেন।

এদিকে উচ্চ আদালত থেকে মিরুর জামিন হয়েছে- সিরাজগঞ্জের শাহজাদপুরে এমন খবর ছড়িয়ে পড়লে এলাকার জনগণের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি হয়। মামলার বাদী সাংবাদিক শিমুলের স্ত্রী নুরুন্নাহার খাতুন ও তার পরিবারের সদস্যরা নিরাপত্তাহীনতায় ভুগছেন। নুরুন্নাহার কান্নাজড়িত কণ্ঠে বলেন, আমার দুই ছেলেমেয়ের নিরাপত্তা নিয়ে আমি শঙ্কিত। তারা একা একা স্কুলে যায়। মেয়র জেলখানা থেকে বের হয়ে যে কোনো ধরনের ঘটনা ঘটাতে পারেন।

হাইকোর্টের দেওয়া রায়ের বিরুদ্ধে সোমবার আপিল বিভাগের চেম্বার আদালতে আবেদন করা হবে জানিয়েছেন অ্যাটর্নি জেনারেল মাহবুবে আলম। তিনি বলেন, চাঞ্চল্যকর মামলার আসামি উচ্চ আদালত থেকে জামিন পেলে ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের শঙ্কিত হওয়ার কথা। বিষয়টি তিনি গুরুত্বসহকারে দেখবেন।

আদালতে আসামি মিরুর পক্ষে শুনানি করেন সিনিয়র অ্যাডভোকেট এএম আমিনউদ্দিন এবং আবদুল আলিম মিয়া জুয়েল। এ সময় বাদীর পক্ষে ব্যারিস্টার আব্দুল্লাহ আল মামুন ও রাষ্ট্রপক্ষে সহকারী অ্যাটর্নি জেনারেল ইউসুফ মাহমুদ মোরসেদ জামিন আবেদনের তীব্র বিরোধিতা করেন।

রায়ের পর ইউসুফ মাহমুদ জানান, আসামি মিরুকে কেন জামিন দেওয়া হবে তা জানতে চেয়ে সম্প্রতি রুল জারি করেন হাইকোর্টের সংশ্নিষ্ট বেঞ্চ। উভয়পক্ষের শুনানি শেষে রবিবার রায় দেন আদালত।

মামলায় শিমুলের স্ত্রীর পক্ষের আইনজীবী ব্যারিস্টার মামুন বলেন, আসামি মিরু বয়স্ক, বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত। তা ছাড়া বিচারের আগেই তিনি ২০ মাস জেলে আছেন এবং মামলার কোনো চার্জ গঠন হয়নি- এসব বিষয় বিবেচনায় আদালত তাকে স্থায়ী জামিন দিয়েছেন। এই রায়ের বিরুদ্ধে আপিল করা হবে বলে জানান তিনি। এর আগে একাধিক বেঞ্চ মিরুর জামিন আবেদন খারিজ করেন।

২০১৭ সালের ২ ফেব্রুয়ারি শাহজাদপুরে মেয়র মিরুর দুই ভাইয়ের সঙ্গে আওয়ামী লীগের আরেক গ্রুপের সংঘর্ষ হয়। এ ঘটনার খবর সংগ্রহ ও ছবি তুলতে গিয়ে সাংবাদিক শিমুল গুলিবিদ্ধ হন। পরদিন বগুড়া থেকে ঢাকায় আনার পথে মারা যান তিনি। এ ঘটনায় শিমুলের স্ত্রী বাদী হয়ে মেয়র মিরু ও তার সহোদর মিন্টু এবং উপজেলা আওয়ামী লীগ নেতা নাছিরসহ জ্ঞাত ১৮ এবং অজ্ঞাত আরও প্রায় ২২ জনসহ ৪০ জনের বিরুদ্ধে হত্যা মামলা করেন।

হত্যাকাণ্ডের তিন মাস পর গত বছরের ২ মে শিমুল হত্যা মামলার চার্জশিট দেয় পুলিশ। চার্জশিটে বলা হয়, মেয়র মিরুর গুলিতেই শিমুলের মৃত্যু হয়েছে। হত্যাকাণ্ডে মেয়র মিরুর লাইসেন্স করা শটগান ছাড়াও তার ভাই হাবিবুল হক মিন্টুর অবৈধ পাইপগান ব্যবহার করা হয়। মিরু ও মিন্টু দু'জনই ঘটনার দিন শিমুলকে লক্ষ্য করে গুলি ছোড়েন।

গত পৌনে দুই বছরেও শিমুল হত্যার বিচার শুরু হয়নি। আসামি পক্ষ বিভিন্ন অজুহাতে মামলার বিচারকাজকে বাধাগ্রস্ত করছে। সিরাজগঞ্জ অতিরিক্ত জেলা দায়রা জজ আদালতে আগামী ১২ ফেব্রুয়ারি এ মামলায় চার্জ গঠনের জন্য দিন ধার্য রয়েছে। চাঞ্চল্যকর হিসেবে মামলাটি দ্রুত বিচার আদালতে স্থানান্তরের জন্য গত ১৯ ফেব্রুয়ারি সিরাজগঞ্জ জেলা প্রশাসক কার্যালয় থেকে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ে অনুমোদনের জন্য পাঠানো হলেও আজ পর্যন্ত তা অনুমোদন দেওয়া হয়নি।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/নভেম্বর ০৪, ২০১৮)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর