ঐক্যফ্রন্ট ইশতেহার তৈরি করছে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : আগামী সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নির্বাচনী ইশতেহার প্রস্তুত করার কাজ শুরু করেছে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট। এর জন্য একটি ইশতেহার কমিটিও গঠন করা হয়েছে।

এই কমিটি বিএনপি চেয়ারপারসন খালেদা জিয়ার ঘোষিত ভিশন-২০৩০ রূপকল্প সামনে রেখে আগামী নির্বাচনী ইশতেহার তৈরি করবে।

মতিঝিলে ড. কামাল হোসেনের চেম্বারে মঙ্গলবার জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির এক বৈঠকে এ সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়।

বৈঠকে নির্বাচনী ইশতেহার তৈরির কমিটিতে বিএনপি থেকে সিনিয়র সাংবাদিক মাহফুজ উল্লাহ, গণফোরাম থেকে আ ও ম শফিক উল্লাহ, জেএসডি থেকে শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন, কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের অধ্যক্ষ ইকবাল সিদ্দিকী এবং নাগরিক ঐক্য থেকে ডা. জাহেদ উর রহমান রয়েছেন। এই কমিটির মূল দায়িত্বে থাকবেন গণস্বাস্থ্য কেন্দ্রের ট্রাস্টি ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী। এর বাইরে দেশের রাজনৈতিক ও নির্বাচনী পরিবেশ সম্পর্কে সংবাদমাধ্যমের সঙ্গে মতবিনিময় করারও সিদ্ধান্ত নেওয়া হয় বৈঠক থেকে।

বৈঠক শেষে ঐক্যফ্রন্টের মুখপাত্র ও বিএনপির মহাসচিব মির্জা ফখরুল ইসলাম আলমগীর জানান, একাদশ জাতীয় নির্বাচন এক মাস পিছিয়ে দেওয়া অত্যন্ত জরুরি। আশা করব, নির্বাচন কমিশন ঐক্যফ্রন্টের নেতাদের সঙ্গে আলাপ করে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করবে।

তফসিলের তারিখ আর পেছানো হবে না- প্রধান নির্বাচন কমিশনারের এমন বক্তব্যের বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, সিইসি স্পষ্ট করে বললে তো হবে না। যে সময় তফসিল ঘোষণা করা হয়েছে সে সময়টিতে বড়দিনের ছুটি থাকে। ওই সময় খ্রিষ্টান সম্প্রদায়ের লোকজন একটা উৎসবের আমেজে থাকেন। এ ছাড়া ইংরেজি নববর্ষ আসছে, সেটাও একটা বড় অনুষ্ঠান। তফসিলে একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচনের জন্য যে বিদেশি পর্যবেক্ষকদের আশা করছি সেই সুযোগও থাকছে না। এই তফসিলে জাতীয় ঐক্যফ্রন্ট ছাড়াও অন্যান্য রাজনৈতিক দল অত্যন্ত হতাশ হয়েছে। ফলে মনে করা হচ্ছে- কমিশন একটা সুষ্ঠু ও অবাধ নির্বাচন করার ব্যাপারে খুব একটা আগ্রহী নয়।

সূত্র জানায়, নির্বাচনী তফসিল পেছানোর দাবি সামনে রেখে আজ ড. কামাল হোসেনের নেতৃত্বে ফ্রন্টের সিনিয়র নেতারা নির্বাচন কমিশনে যাবেন। তাদের ওই দাবির সঙ্গে নির্বাচনী লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড না থাকা, সারাদেশে গায়েবি মামলা, গ্রেফতার, হয়রানি ছাড়াও ইভিএম ব্যবহারের বিষয়ে আলোচনা করবেন নেতারা। মঙ্গলবার রাতে এসব অভিযোগ ও দাবির একটি খসড়া প্রস্তুত করা হয়েছে। নির্বাচন কমিশনে যাওয়ার বিষয়টি অবহিত করার জন্য দুপুরে একটি চিঠি নিয়ে ফ্রন্টের নেতা শহীদ উদ্দিন মাহমুদ স্বপন নির্বাচন কমিশনে যান। চিঠিতে নির্বাচনের বিবিধ বিষয়ে আলোচনা করার জন্য বুধবার সময় চেয়েছেন তারা।

এর বাইরে ঐক্যফ্রন্টের স্টিয়ারিং কমিটির বৈঠকে একাদশ জাতীয় নির্বাচন ও বর্তমান রাজনৈতিক পরিস্থিতি তুলে ধরতে আগামী শুক্রবার জাতীয় সংবাদপত্রের সম্পাদকদের সঙ্গে মতবিনিময় করার সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়। ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামাল হোসেন এ মতবিনিময় করবেন। এরপর ইলেকট্রনিক মিডিয়ার প্রধানদের সঙ্গে মতবিনিময় করবেন তিনি। তবে কোনো দিনক্ষণ নির্ধারণ করা হয়নি।

মঙ্গলবারের বৈঠকে ঐক্যফ্রন্টের আসন বণ্টনের বিষয়ে আলোচনা উঠলেও তাতে তেমন গুরুত্ব দেওয়া হয়নি। আগামী কয়েক দিনের মধ্যে এ বিষয়ে সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে। এর আগে প্রত্যেক দল তাদের নিজ প্রার্থীদের মধ্যে মনোনয়ন ফরম বিতরণ ও তাদের প্রার্থীদের সাক্ষাৎকার পর্ব শেষ করতে চায়।

বৈঠক শেষে কৃষক শ্রমিক জনতা লীগের সভাপতি বঙ্গবীর আবদুল কাদের সিদ্দিকী বলেছেন, নির্বাচন কমিশন ঠিকভাবে চলছে না। কমিশন নির্বাচনের তারিখ সাত দিন পিছিয়েছে, সেটা অন্যায়। এটা তো সরকারের ও বিকল্পধারার আহ্বান ছিল। ঐক্যফ্রন্ট এক মাস সময় চেয়েছে।

জাতীয় ঐক্যফ্রন্টের শীর্ষ নেতা ড. কামালের সভাপতিত্বে বৈঠকে জেএসডির সাধারণ সম্পাদক আবদুল মালেক রতন, গণফোরামের সাধারণ সম্পাদক মোস্তফা মহসিন মন্টু, মোকাব্বির খান, জগলুল হায়দার আফ্রিক, জাতীয় ঐক্য প্রক্রিয়ার সুলতান মো. মনসুর আহমদ, গণস্বাস্থ্যের ডা. জাফরুল্লাহ চৌধুরী উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/নভেম্বর ১৩,২০১৮)