thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

শাই হোপের ব্যাটে চড়ে সিরিজে সমতায়  ওয়েস্ট ইন্ডিজ

২০১৮ ডিসেম্বর ১১ ২২:২৫:২১
শাই হোপের ব্যাটে চড়ে সিরিজে সমতায়  ওয়েস্ট ইন্ডিজ

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক : ওপেনার শাই হোপের ব্যাটিং নৈপুণ্যে সিরিজের দ্বিতীয় ওয়ানডেতে বাংলাদেশকে ৪ উইকেটে হারিয়েছে ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এই জয়ে তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা আনলো ক্যারিবীয়রা। ইনিংস শুরু করতে নেমে শেষ পর্যন্ত অপরাজিত ১৪৬ রানের নান্দনিক ইনিংস খেলেন হোপ। স্বীকৃতি স্বরূপ ম্যাচ সেরাও হোপ।

প্রথম ম্যাচের মত দ্বিতীয় ওয়ানডেতেও টস ভাগ্যে জয় পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে এবার ফিল্ডিং-এর সিদ্বান্ত নেয় তারা। ইনিংসের নবম বলেই প্যাভিলিয়নে ফিরেন ওপেনার লিটন দাস। তবে আউট হয়ে নয়, গোড়ালিতে ব্যাথা পেয়ে। ওয়েস্ট ইন্ডিজের ডান-হাতি পেসার ওশানে থমাসের বলে পায়ে ব্যাথা পেয়ে মাঠ ত্যাগ করেন লিটন। এরপর হাসপাতালেও গিয়েছেন তিনি। তবে বড় কোন ইনজুরিতে পড়েননি এই ডান-হাতি ব্যাটসম্যান। শেষ দিকে আবারো ব্যাট হাতে মাঠে নেমেছেন তিনি।

লিটনের জায়গায় উইকেটে গিয়ে চতুর্থ ওভারে রানের খাতা খোলার আগেই থমাসের বলে আউট হন ইমরুল কায়েস। ফলে দলীয় ১৪ রানে প্রথম উইকেট হারায় বাংলাদেশ।
তবে শুরুতে উইকেট হারানোর পরও আত্মবিশ্বাসে কোন ঘাটতি দেখাননি আরেক ওপেনার তামিম ইকবাল ও চার নম্বরে নামা মুশফিকুর রহিম। উইকেটে দ্রুতই সেট হয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলারদের উপর চড়াও হন তারা। প্রথম ১০ ওভারে বাংলাদেশের রান উঠে ১ উইকেটে ৪৭। ১৯তম ওভারেই দলের স্কোর শতরানে পৌঁছে দেন এ জুটি। ৫২ বলে ৪৪ রানে দাঁড়িয়ে হাফ-সেঞ্চুরির অপেক্ষায় ছিলেন মুশি। ৪৭ বলে ৩৯ রানে দাঁড়িয়ে ছিলেন তামিম।
হাফ-সেঞ্চুরির জন্য বেশিক্ষণ অপেক্ষা করতে হয়নি মুশফিককে। ২১তম ওভারেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৩২তম হাফ-সেঞ্চুরির দেখা পান তিনি। অর্ধশতক করতে সময় নেননি তামিমও। ২৩তম ওভারেই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের ৪৩তম হাফ-সেঞ্চুরি করেন তিনি। তবে হাফ-সেঞ্চুরি তুলেই থেমে যান তামিম। লেগ-স্পিনার দেবেন্দ্র বিশুকে সুইপ করে মারতে গিয়ে ডিপ-মিড উইকেটে ক্যাচ দেন তামিম। ৬৩ বলে ৪টি চার ও ১টি ছক্কায় ৫০ রান করেন তিনি। মুশফিকের সাথে ১১১ রানের জুটি গড়েন তামিম।
তামিমের বিদায়ের কিছুক্ষণ পর উইকেট পতনের তালিকায় নাম তুলেন তিনিও। থমাসের বলে শাই হোপের হাতে ক্যাচ দিয়ে আউট হওয়ার আগে ৮০ বল মোকাবেলা করে ৫টি চারে ৬২ রান করেন মুশফিক।
মুশফিক যখন বিদায় নেন তখন দলের স্কোর ১৩২। এসময় বড় জুটি খুবই প্রয়োজনীয় হয়ে পড়ে বাংলাদেশের। দলের প্রয়োজন মিটিয়েছেন সাকিব আল হাসান ও মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ। তবে তারা ছিলেন সর্তক। শুরুতে দেখেশুনে খেলে রানের চাকা সচল রেখেছিলেন তারা। এতে দলের স্কোর দু’শ রানের কাছাকাছি পৌঁছে যায়। তাই উইকেট হাতে থাকায় শেষ দশ ওভারে দলকে শক্তপোক্ত সংগ্রহ এনে দেয়ার লক্ষ্যে ছিলেন সাকিব ও মাহমুদুল্লাহ।
কিন্তু ৪১তম ওভারের তৃতীয় বলে সাকিব-মাহমুদুল্লাহ জুটিতে ভাঙ্গন ধরান ওয়েস্ট ইন্ডিজের অধিনায়ক রোভম্যান পাওয়েল। মাহমুদুল্লাহর আউটে চতুর্থ উইকেট হারায় বাংলাদেশ। ৫১ বলে ৩০ রান করেন মাহমুদুল্লাহ। এই জুটি দলকে উপহার দেন ৬১ রান।
মাহমুদুল্লাহর বিদায়ে উইকেটে যান সৌম্য সরকার। প্রথম ওয়ানডেতে দুর্দান্তভাবে ইনিংস শুরু করা সৌম্য এবার উইকেটের সাথে সেটই হতে পারেননি। থামসের শর্ট বলটি থার্ড ম্যান দিয়ে মারতে গিয়ে ক্যাচ আউট হন সৌম্য। মাত্র ৬ রান করেন তিনি।
এরপরই ক্রিজে আসেন আহত অবসর নেয়া লিটন। কিন্তু পরে ব্যাট হাতে নেমেও ভালো কিছু করতে পারেননি লিটন। ৫ রান নিয়ে মাঠ ছেড়ে শেষ পর্যন্ত ৮ রানে থামেন তিনি।
৪৬তম ওভারের শেষ বলে ষষ্ঠ ব্যাটসম্যান হিসেবে লিটন ফিরে গেলে শেষের ওভারগুলোতে রান করার দায়িত্ব বর্তায় ততক্ষনে ওয়ানডে ক্যারিয়ারে ৪০তম হাফ-সেঞ্চুরির স্বাদ নিয়ে নেওয়া সাকিবের উপর। কিন্তু ইনিংসের শেষ ৪ ওভার ব্যাট করতে পারেননি। লিটনের ফিরে যাবার ৬ বল পরই থামেন তিনি। ৪৭তম ওভারের শেষ বলে আউট হবার আগে ৬টি চার ও ১টি ছক্কায় ৬২ বলে ৬৫ রান করেন সাকিব। ব্যক্তিগত ৪৬ রানে নো-বলে জীবন পাওয়া সাকিব বোল্ড আউট হন কেমার রোচের বলে।
তবে শেষ ৩ ওভারে বাংলাদেশকে আহামরি রান এনে দিতে পারেননি অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা ও মেহেদি হাসান মিরাজ। শেষ ১৮ বলে অবিচ্ছিন্ন ১৬ রান যোগ করেন তারা। শেষ পর্যন্ত ৫০ ওভারে ৭ উইকেটে ২৫৫ রানের পুঁিজ পায় বাংলাদেশ। মাশরাফি ৬ ও মিরাজ ১১ রানে অপরাজিত ছিলেন। ওয়েস্ট ইন্ডিজের থমাস ৫৪ রানে ৩ উইকেট নেন।
জয়ের জন্য ২৫৬ রানের লক্ষ্যে শুরুটা ভালো করতে পারেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। ওপেনার চন্দরপল হেমরাজকে ৩ রানের বেশি করতে দেননি বাংলাদেশের অফ-স্পিনার মেহেদি হাসান মিরাজ। ইনিংসের দ্বিতীয় ও নিজের প্রথম ওভারেই উইকেট শিকার করেন তিনি।
দলীয় ৫ রানে প্রথম উইকেট হারানোর পর দলের হাল ধরেন আরেক ওপেনার শাই হোপ ও ড্যারেন ব্রাভো। বাংলাদেশ বোলারদের সামনে ব্যাকফুটেই ছিলেন তারা। ধীরলয়ে দলের ইনিংস বড় করতে থাকেন হোপ-ব্রাভো।তবে রান তোলার গতি ছিল মন্থর। ৯২ বলে ৬৫ রান যোগ করেন তারা। ২৭ রানে থাকা ব্রাভোকে বোল্ড করে বাংলাদেশকে ব্রেক-থ্রু এনে দেন বাংলাদেশের পেসার রুবেল হোসেন।
ব্রাভোর বিদায়ের পর আবারো বড় জুটি গড়ার চেষ্টা করেন হোপ ও মারলন স্যামুয়েলস। এই জুটিও বেশ দেখেশুনেই এগোতে থাকেন। জমে উঠে হোপ ও স্যামুয়েলসের জুটি। জুটি ভাঙ্গতে চিন্তায় পড়ে যান বাংলাদেশ অধিনায়ক মাশরাফি বিন মর্তুজা। ৩০তম ওভারের শেষ বলে মাশরাফিকে চিন্তা মুক্ত করেন দলের কাটার মাস্টার মুস্তাফিজুর রহমান। ২টি চার ও ১টি ছক্কায় ৪৫ বলে ২৬ রান করে মুস্তাফিজের শিকার হন স্যামুয়েলস।
১৩২ রানে তৃতীয় উইকেট হারানোর পরও চাপ অনুভব করেনি ওয়েস্ট ইন্ডিজ। কারন তখন রান তোলার কাজটা ভালোভাবেই করছিলেন হোপ। এক প্রান্ত আগলে ততক্ষনে ওয়ানডে ক্যারিয়ারের অষ্টম হাফ-সেঞ্চুরিও তুলে নেন হোপ।
হোপ এক প্রান্ত আগলে রাখলেও অন্যপ্রান্ত দিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের মিডল-অর্ডারে ডাবল ধাক্কা দেন বাংলাদেশের অধিনায়ক মাশরাফি ও রুবেল। ভয়ংকর হয়ে উঠার আগেই শিমরোন হেটমায়ারকে থামান রুবেল। ১০ বলে মাত্র ১৪ রান করেন হেটমায়ার।
হেটমায়ারের বিদায়ের পরের ওভারেই ওয়েস্ট ইন্ডিজে শিবিরে আঘাত হানেন মাশরাফি। প্রথম ম্যাচের মত এবারও ম্যাশের শিকার হয়েছেন ক্যারিবীয় দলপতি রোভম্যান পাওয়েল। ১ রান করেন তিনি।
৩ রানের ব্যবধানে ২ উইকেট হারিয়ে চাপে পড়ে যায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে চাপকে জয় করার চেষ্টা করেছেন হোপ ও রোস্টন চেজ। তাই জুটি গড়ার চেষ্টা করেন তারা। কিন্তু বেশি দূর যেতে পারেননি হোপ-চেজ। ৩২ বলে ২৮ রান যোগ করেন তারা। দু’জনের পথে বাধা হয়ে ছিলেন মুস্তাফিজ। ৯ রান করা চেজকে ফিরিয়ে জুটি ভাঙ্গেন মুস্তাফিজ।
চেজের বিদায়ের পর-পরই ওয়ানডে ক্যারিয়ারের তৃতীয় ও বাংলাদেশের বিপক্ষে প্রথম সেঞ্চুরি তুলে নেন হোপ। সেঞ্চুরির করার সময় সঙ্গী হিসেবে ক্রিজে পেয়েছেন কেমো পলকে। তিন অংকে পা দেয়ার পর পলকে নিয়ে টার্গেটের দিকে এগিয়ে যেতে থাকেন হোপ। শেষ ৩০ বলে জয়ের জন্য ৩৮ রানের সমীকরন পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। এরপর শেষ ১৮ বলে প্রয়োজন পড়ে ৩২ রান।
৪৮তম ওভারের প্রথম বলেই রুবেলকে ছক্কা মারেন সেঞ্চুরিয়ান হোপ। এতে ম্যাচের লাগাম নিজেদের দিকে টেনে নেয়ার ভালো সুযোগ পায় ওয়েস্ট ইন্ডিজ। তবে পরের পাঁচ ডেলিভারিতে মাত্র ৪ রান দেন রুবেল। শেষ বলে অবশ্য পলকে বিদায় দেয়ার সুযোগ পেয়েছিলো বাংলাদেশ। কিন্তু স্কয়ার লেগে ক্যাচ নেয়া সুযোগ হাতছাড়া করেন নাজমুল ইসলাম। তাই শেষ ১২ বলে জয়ের সমীকরন পায় ২২ রান।
৪৯তম ওভারে বল হাতে আক্রমনে আসেন মুস্তাফিজ। প্রথম দুই বলে একটি ওয়াইডসহ ৪ রান দেন ফিজ। তবে তৃতীয়, চতুর্থ ও শেষ বলে বাউন্ডারি আদায় করেন ওয়েস্ট ইন্ডিজের একমাত্র আশা হোপ। ফলে শেষ ৬ বলে ৬ রান দরকার পড়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের।
মাহমুদুল্লাহ’র শেষ ওভারের প্রথম চার বল থেকেই ৬ রান তুলে নিয়ে ওয়েস্ট ইন্ডিজের জয় নিশ্চিত করেন হোপ ও পল। ১২টি চার ও ৩টি ছক্কায় ১৪৪ বলে শেষ পর্যন্ত ১৪৬ রানে অপরাজিত থাকেন হোপ। ৩১ বলে কোন বাউন্ডারি-ওভার বাউন্ডারি ছাড়াই অপরাজিত ১৮ রান করেন পল। বাংলাদেশের মুস্তাফিজ-রুবেল ২টি করে ও মিরাজ-মাশরাফি ১টি করে উইকেট নেন।
আগামী ১৪ ডিসেম্বর সিলেটে অনুষ্ঠিত হবে সিরিজের তৃতীয় ও শেষ ওয়ানডে।
স্কোর কার্ড :
বাংলাদেশ ইনিংস :
তামিম ইকবাল ক রোচ ব বিশু ৫০
লিটন দাস ক হেটমায়ার ব পল ৮
ইমরুল কায়েস কে হোপ ব থমাস ০
মুশফিকুর রহিম ক হোপ ব থমাস ৬২
সাকিব আল হাসান বোল্ড ব রোচ ৬৫
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ ক হেটমায়ার ব পাওয়েল ৩০
সৌম্য সরকার ক বিশু ব থমাস ৬
মাশরাফি বিন মর্তুজা অপরাজিত ৬
মেহেদি হাসান মিরাজ অপরাজিত ১০
অতিরিক্ত (বা-১, লে বা-৩, নো-৫, ও-৯) ১৮
মোট (৭ উইকেট, ৫০ ওভার) ২৫৫
উইকেট পতন : ১/১৪ (ইমরুল), ২/১২৫ (তামিম), ৩/১৩২ (মুশফিকুর), ৪/১৯৩ (মাহমুদুল্লাহ), ৫/২০৮ (সৌম্য), ৬/২৩৪ (লিটন), ৭/২৩৯ (সাকিব)।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ বোলিং :
রোচ : ১০-০-৩৯-১ (ও-২, নো-১),
থমাস : ১০-০-৫৪-৩ (ও-৩, নো-২),
চেজ : ৩-০-২২-০ (ও-২),
পল : ১০-০-৬৮-১ (ও-১, নো-১),
বিশু : ১০-১-২৭-১ (নো-১),
পাওয়েল : ৭-০-৪১-১।
ওয়েস্ট ইন্ডিজ ইনিংস :
চন্দরপল হেমরাজ এলবিডব্লু ব মিরাজ ৩
শাই হোপ অপরাজিত ১৪৬
ড্যারেন ব্রাভো বোল্ড ব রুবেল ২৭
মারলন স্যামুয়েলস ক মুশফিক ব মুস্তাফিজ ২৬
শিমরোন হেটমায়ার ক অতি (নাজমুল) ব রুবেল ১৪
রোভম্যান পাওয়েল ক সৌম্য ব মাশরাফি ১
রোস্টন চেজ ক তামিম ব মুস্তাফিজুর ৯
কেমো পল অপরাজিত ১৮
অতিরিক্ত (লে বা-৫, নো-১, ও-৬) ১২
মোট (৬ উইকেট, ৪৯,৪ ওভার) ২৫৬
উইকেট পতন : ১/৫ (হেমরাজ), ২/৭০ (ব্রাভো), ৩/১৩২ (স্যামুয়েলস), ৪/১৫৫ (হেটমায়ার), ৫/১৫৭ (পাওয়েল), ৬/১৮৫ (চেজ)।
বাংলাদেশ বোলিং :
সাকিব আল হাসান : ১০-০-২৮-০,
মেহেদি হাসান মিরাজ : ৯-০-৩৯-১ (ও-১),
মুস্তাফিজুর রহমান : ১০-১-৬৩-২ (ও-২),
মাশরাফি বিন মর্তুজা : ১০-১-৫২-১ (ও-১, নো-১),
মাহমুদুল্লাহ রিয়াদ : ১.৪-০-১২-০,
রুবেল হোসেন : ৯-০-৫৭-২ (ও-১)।
ফল : ওয়েস্ট ইন্ডিজ ৪ উইকেটে জয়ী।
ম্যাচ সেরা : শাই হোপ (ওয়েস্ট ইন্ডিজ)।
সিরিজ : তিন ম্যাচের সিরিজে ১-১ সমতা।

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

খেলা এর সর্বশেষ খবর

খেলা - এর সব খবর