thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২৫ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৩ জমাদিউল আউয়াল 1446

সুবর্ণচরে গণধর্ষণের মূল নির্দেশদাতাসহ গ্রেফতার ২

২০১৯ জানুয়ারি ০৩ ০৯:২৩:৩৬
সুবর্ণচরে গণধর্ষণের মূল নির্দেশদাতাসহ গ্রেফতার ২

নোয়াখালী প্রতিনিধি : নোয়াখালীর সুবর্ণচরে গৃহবধূ গণধর্ষণের ঘটনায় মূল নির্দেশদাতা ইউপি সদস্য রুহুল আমিনসহ আরও দুজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এ নিয়ে এ ঘটনায় পাঁচজনকে গ্রেফতার করা হল।

বৃহস্পতিবার (৩ জানুয়ারি) ভোর ৫টার দিকে সদর উপজেলার চরওয়াফদা ইউনিয়ের ৪নং ওয়ার্ড ও সেনবাগ থেকে ইটভাটা থেকে তাদের গ্রেফতার করা হয়।

তারা হলেন- সুবর্ণচর ইউপি সদস্য রুহুল আমিন (৩৩) খোরশেদ নেতার ছেলে ও বেছু (২৮) আবুল কাশেমের ছেলে। তাদের বাড়ি একই এলাকায়।

এর আগে এ ঘটনায় গৃহবধূর স্বামী অভিযোগ করলে সোমবার লক্ষ্মীপুর থেকে আবদুল মন্নানের ছেলে ও আওয়ামী লীগ কর্মী স্বপন (৩০) এবং মঙ্গলবার রাতে চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামের আহাম্মদ উল্লাহর ছেলে বাদশা আলমকে (৩৫) গ্রেফতার করে পুলিশ।

এরপর বুধবার দুপুরে মামলার প্রধান আসামি একই গ্রামের ইসমাইলের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী মো. সোহেলকে (৩৫) কুমিল্লা জেলার অজ্ঞাত স্থান থেকে গ্রেফতার করে পুলিশ।

চরজব্বর থানার ওসি নিজমউদ্দিন জানান, ভোর ৫টার দিকে সদর উপজেলার চরওয়াফদা ইউনিয়ের ৪নং ওয়ার্ড থেকে রুহুল আমিনকে গ্রেফতার করা হয়। একই সময় সেনবাগ ইটভাটা থেকে বেছু গ্রেফতার হয়।

এদিকে এ ঘটনা তদন্তে নোয়াখালীতে জাতীয় মানবাধিকার কমিশন এবং আইন ও সালিশ কেন্দ্রের দুটি তদন্ত দল বুধবার তদন্ত শুরু করেছে।

ধানের শীষে ভোট দেয়ার জের ধরে রোববার রাত ১১টার দিকে সুবর্ণচর উপজেলার চরজুবলি ইউনিয়নের মধ্যম বাগ্যা গ্রামে সিএনজি চালকের স্ত্রী (৪০) গণধর্ষণের শিকার হন।

এ সময় আওয়ামী লীগ ও যুবলীগের সন্ত্রাসীরা গৃহবধূর স্বামী, ছেলে ও মেয়েকে পিটিয়ে আহত করে। ঘটনার পরপরই গোপনে গৃহবধূ ও আহতদের নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে।

হাসপাতালে গৃহবধূর দাবি, নৌকার সমর্থকদের সঙ্গে বাগবিতণ্ডার জেরে তিনি ধর্ষণের শিকার হয়েছেন। তবে স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতারা এ ঘটনার সঙ্গে দলীয় সম্পৃক্ততার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন।

এলাকাবাসী জানান, নোয়াখালী-৪ (সদর ও সুবর্ণচর) আসনে বিএনপি প্রার্থী মোহাম্মদ শাহজাহানের ধানের শীষ প্রতীকে রোববার সকাল ১০টায় ভোট দেন ওই গৃহবধূ।

এ কারণে আওয়ামী লীগের ক্যাডাররা প্রচণ্ড ক্ষুব্ধ হয়। এরপর ওইদিন রাত ১১টার দিকে গৃহবধূর বাড়িতে প্রবেশ করে তারা তিনজনকে মারধর এবং বেঁধে রেখে গৃহবধূকে গণধর্ষণ করে। এরপর ঘটনাটি কাউকে না বলতে এবং মামলা না করতে প্রাণনাশের হুমকি দিয়ে তারা পালিয়ে যায়।

ধর্ষকরা হল- একই গ্রামের মো. তোফায়েলের ছেলে আওয়ামী লীগ কর্মী ও সন্ত্রাসী মোশাররফ হোসেন, ইসমাইলের ছেলে সোহেল, আবুল কাশেমের ছেলে বেচু, আবুল কালামের ছেলে সোহেল, আবদুল মন্নানের ছেলে স্বপন, ইউছুপের ছেলে আনোয়ার, নুরুল হকের ছেলে আমীর হোসেন, বাগন আলী ওরফে ইসমাইলের ছেলে মো. হানিফ, টোকাইর ছেলে ছালাউদ্দিন, খোরশেদের ছেলে ইউনিয়ন পরিষদ সদস্য রুহুল আমিন, আবুল কালামের ছেলে সোহেল, আহমদ উল্লাহর ছেলে বাদশা।

ঘটনার পর গৃহবধূ ও আহতদের গোপনে গভীর রাতে নোয়াখালী জেনারেল হাসপাতালে ভর্তি করা হয়।

সোমবার রাতে হাসপাতালের গাইনি বিভাগের চিকিৎসক মমতাজ বেগম, সিনিয়র নার্স সাজেদা বেগম জানান, গৃহবধূকে ধর্ষণ করার আলামত পাওয়া গেছে। তার অবস্থা আশঙ্কাজনক।

এ ঘটনায় একই গ্রামের ইউনিয়ন পরিষদ (ইউপি) সদস্য রুহুল আমিন, মোশাররফ হোসেন, বাদশা, সোহেল, হেঞ্জু, সোহেল, বেচু, জসিম, স্বপন, মো. হানিফ, আবুল, আনোয়ার, আমির হোসেনসহ ১২ জনকে আসামি করে গৃহবধূর স্বামী প্রথমে থানায় অভিযোগ এবং পরে মামলা করেন।

গৃহবধূর স্বামী অভিযোগ করে বলেন, অভিযুক্তরা গ্রামে ঘোরাফেরা করলেও পুলিশ তাদের গ্রেফতার করছে না।

চরজব্বর থানার ওসি নিজাম উদ্দিন জানান, সিএনজিচালকের স্ত্রীর গণধর্ষণের ঘটনায় থানায় মামলা হয়। তিন দিনে তিন ধর্ষককে পুলিশ গ্রেফতার করেছে। অন্যদের গ্রেফতারের চেষ্টা চলছে।

পুলিশ সুপার মো. ইলিয়াছ শরীফ বলেন, মামলা হওয়ার পর সোমবার একজনকে গ্রেফতার করেছে পুলিশ। এরপর মঙ্গলবার রাতে একজনকে এবং বুধবার দুপুরে কুমিল্লা থেকে আরেকজনকে গ্রেফতার করা হয়।

(দ্য রিপোর্ট/এনটি/জানুয়ারি ০৩, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর