thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১২ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

যবিপ্রবি শিক্ষকদের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন

২০১৯ জানুয়ারি ১২ ২০:৩৪:৫১
যবিপ্রবি শিক্ষকদের ক্লাস পরীক্ষা বর্জন

যবিপ্রবি প্রতিনিধি:যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে হুমকির প্রতিবাদে অনিদিষ্টকালের জন্য ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিয়েছে শিক্ষক পরিষদ।

শনিবার দুপুরে হুমকিদাতার বিচার দাবিতে শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের মানববন্ধন শেষে এই ঘোষণা দেওয়া হয়।

শিক্ষক পরিষদের সাধারণ সম্পাদক নাজমুল হাসান বলেন, শিক্ষক পরিষদের সভাপতি অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে হুমকিদাতার বিচার না হওয়া পর্যন্ত আমরা ক্লাস ও পরীক্ষা বর্জনের ঘোষণা দিচ্ছি।

শিক্ষকরা ক্লাসে যাবে না। শনিবার বেলা ১২টার দিকে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনের সামনে মানববন্ধন কর্মসূচি পালিত হয়। শিক্ষকরা জানান, গত ৮ জানুয়ারি সন্ধ্যা ৬টা ২৪ মিনিটে যশোর জেলা ছাত্রলীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক আনোয়ার হোসেন বিপুল মোবাইল ফোনে বিশ্ববিদ্যালয়ের মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের অধ্যাপক ও শিক্ষক পরিষদের সভাপতি ইকবাল কবীর জাহিদকে অকথ্য ভাষা গালিগালাজ করেন। এসময় তিনি দেখে নেওয়ার হুমকিও দেন। হুমকি দেওয়ার পর তিনি ছাত্রলীগের কতিপয় নেতা- নেত্রীকে ব্যবহার করে বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিবেশ অশান্ত করে তুলেছে। এ ঘটনার প্রতিবাদে বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক পরিষদ, কমর্কর্তা কর্মচারীদের ব্যানারে মানববন্ধন কর্মসূচির আয়োজন করা হয়েছে।
শিক্ষকদের মানববন্ধন চলাকালে শেখ হাসিনা হল ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক হুমাইয়ারা আজমিরা এরিনের নেতৃত্বে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীরা বিক্ষোভ মিছিল করে। এসময় তারা শিক্ষকের অপসারণ দাবিতে স্লোগান দিতে থাকে।

হুমাইয়ারা আজমিরা এরিন দাবি করেন, ক্যাম্পাসে নৌকা পুড়িয়ে দেওয়া হয়েছে। এঘটনায় জড়িত অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদকে অপসারণের দাবি করছি।

অধ্যাপক ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, আনোয়ার হোসেন বিপুল নামে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা ফোনে আমাকে অকথ্য ভাষা হুমকি দিয়েছেন। তিনি আমাকে দেখে নেওয়ার হুমকি দেন। এর একদিন পরেই ক্যাম্পাসে ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের ব্যবহার করে আমার বিরুদ্ধে মিথ্যাচার করা হচ্ছে। শহর থেকে ওহি নাজিল করে, আমার ছাত্রদের আমার বিরুদ্ধে স্লোগান দিতে বাধ্য করা হয়েছে। ছাত্রদের নিরাপত্তা দেওয়া ক্ষমতা আমার নেই। এজন্য ছাত্ররা আমার বিরুদ্ধে স্লোগান দিচ্ছে।

তিনি দাবি করেন, যে নৌকা পোড়ানোর কথা বলা হচ্ছে, সেটি সঠিক নয়। নৌকা বাতাসে পড়ে যেতে পারে। র‌্যাগিং বিরোধী বিলবোর্ড টানানোত তারা ক্ষুব্ধ হয়েছে।

কেন হুমকি দেওয়া হলো; এ প্রসঙ্গে ইকবাল কবীর জাহিদ বলেন, টেন্ডারের মাধ্যমে শহীদ মশিয়ুর রহমান হলে নিম্নমানের চেয়ার টেবিল সরবরাহ করা হয়েছে। বিলে আমি আপত্তি করেছি। এতে ক্ষুব্ধ হয়ে আমাকে হুমকি দেওয়া হয়েছে।

দুপুরে সাংবাদিকদের ব্রিফকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. আনোয়ার হোসেন বলেন, একজন ছাত্রলীগ নেত্রীর নেতৃত্বে আজ যা ঘটেছে সেটি কোনভাবেই গ্রহণযোগ্য নয়। প্রতি বছর শিক্ষার্থী ভর্তির পরই বিশ্ববিদ্যালয় অশান্ত করা হয়। এবার করা হয়েছে। শহর থেকে বিশ্ববিদ্যালয় নিয়ন্ত্রণ করা হবে, এটা হতে পারে না। আনোয়ার হোসেন বিপুল নামে এক সাবেক ছাত্রলীগ নেতা মোবাইল ফোনে অকথ্য ভাষায় অধ্যাপক ইকবালকে হুমকি দিয়েছে। বিপুল কোনদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ছাত্র ছিল না। সে বহিরাগত। হুমকির বিষয়টি দুঃখজনক।
অধ্যাপক আনোয়ার হোসেন আরও বলেন, ক্যাম্পাসে গতবার নতুন শিক্ষার্থীদের র‌্যাগিং করা হয়েছে। এবার আমরা আগে থেকে র‌্যাগিং বিরোধী সচেতনতা পোস্টার করেছি। সেগুলো ছিড়ে ফেলা হয়েছে। তারা অভিযোগ করছে, নৌকা ভেঙে ফেলা কিংবা পোড়ানো হয়েছে। তাদের এই অভিযোগ সঠিক নয়। তাছাড়া নৌকা আওয়ামী লীগের নির্বাচনী প্রতীক। নির্বাচনের পর সেগুলো তো সরিয়ে নেওয়ার কথা। তারা যদি সত্যিকারের নৌকার সৈনিক হয়, তাহলে তাদেরই সরিয়ে ফেলা উচিত ছিল। আমি নিজে স্থানীয় সংসদ সদস্য কাজী নাবিল আহমেদকে বলেছি নৌকার পোস্টার, বিলবোর্ড সরিয়ে ফেলতে। তিনি বলেছেন, দলীয় নেতাকর্মীদের সরিয়ে ফেলতে নির্দেশ দিয়েছেন। এটা নিয়ে তো ইস্যু করার দরকার নেই।
তিনি আরও বলেন, আশা করি বিশ্ববিদ্যালয় চালু থাকবো। আমি শিক্ষকদের সঙ্গে বসবো। তারা ক্লাসে ফিরে যাবে, এটা আমার বিশ্বাস।

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ১২, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

শিক্ষা এর সর্বশেষ খবর

শিক্ষা - এর সব খবর