শাহনাজের দুই মেয়ের দায়িত্ব নিল উবার

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: মোটরসাইকেল হারানোর পর দ্রুত সময়ের মধ্যে ফিরে পেয়ে আলোচনায় আসেন উবারের চালক শাহনাজ আক্তার।

উবারের অধীনে মোটরসাইকেল চালিয়ে সংসার চালানোর পাশাপাশি দুই মেয়ের লেখাপড়ার খরচও বহন করতে হয় শাহনাজকে। এবার তার দুই মেয়েকে এক বছরের শিক্ষা বৃত্তি দেওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে উবার। এজন্য ‘জেনারেশন নেক্সট’ নামে একটি উদ্যোগ চালু করেছে এই প্রতিষ্ঠানটি। এর আওতায় শাহনাজের দুই মেয়ের লেখাপড়ায় সহায়তা করা হবে।

সোমবার (২২ জানুয়ারি) এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে এ তথ্য জানিয়েছে উবার। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়— ‘জেনারেশন নেক্সট’ শুরু হতে যাচ্ছে শাহনাজ আক্তারকে দিয়ে, তার দুই মেয়ের জন্য অন্তত এক বছরের বৃত্তির ব্যবস্থা করা হয়েছে। উবার সবসময়ই ড্রাইভার-পার্টনারদের আরও উন্নত জীবন দেওয়ার জন্য সচেষ্ট। উবারের চালকরা যেন তাদের পরিবারের জন্য আরও নিশ্চিত ভবিষ্যৎ গড়ে তুলতে পারেন, এই লক্ষ্যে জেনারেশন নেক্সস্ট উদ্যোগটি গ্রহণ করা হয়েছে। এর মাধ্যমে বিভিন্ন সুযোগ-সুবিধা দেওয়ার পাশাপাশি নির্বাচিত চালক ও পার্টনারদের পরিবারের জন্য স্কুল বৃত্তির ব্যবস্থা করবে উবার।

পুলিশ সূত্রে জানা যায়, পার্ট-টাইম কাজের প্রস্তাব দিয়ে শাহনাজের বাইকটি ছিনতাই করেছিল এক চালক। এর আগে ১০ জানুয়ারি মিরপুরের শ্যামলী এলাকায় জনির সঙ্গে শাহনাজের পরিচয় হয়। এ সময় জনি নিজেকে পাঠাও চালক বলে পরিচয় দেয়। সে শাহনাজকে একটি স্থায়ী চাকরির ব্যবস্থা করে দিতে পারবে বলে জানায়। তার কথায় আশ্বস্ত হলে সে ১৫ জানুয়ারি দুপুর ১২টার সময় শাহনাজকে খামারবাড়ি এলাকায় আসতে বলেন। তার কথামতো স্কুটি নিয়ে যথাসময়ে সেখানে এলে হঠাৎ সে শাহনাজের স্কুটিতে উঠে বসে। এরপর তার অনুরোধে বিমানবন্দর এলাকাসহ রাজধানীর বিভিন্ন স্থানে ঘোরাঘুরি করে ফের মানিক মিয়া এভিনিউয়ের রাজধানী উচ্চবিদ্যালয়ের সামনে আসে তারা। এরপর একটি টং দোকানে জনির সঙ্গে চা খান শাহনাজ। এ সময় জনি স্কুটি চালানোর ইচ্ছা প্রকাশ করলে শাহনাজ তাকে অনুমতি দেন। এরপর চালানোর নামে কৌশলে জনি স্কুটিটি ছিনতাই করে পালিয়ে যায়। তবে পুলিশের দ্রুত তৎপরতায় বাইকটি ফিরে পান তিনি।

জানা গেছে, শাহনাজ ঢাকার এক দরিদ্র পরিবারে বড় হয়েছেন। স্বামী দায়িত্ব পালন না করায় দুই মেয়েকে নিয়ে আলাদা থাকেন তিনি। তার এক মেয়ে নবম শ্রেণিতে এবং আরেকজন প্রথম শ্রেণিতে পড়ছে।

শাহনাজ আক্তার বলেন, ‘উবারের এই উদ্যোগ আমাকে ভীষণভাবে সাহায্য করবে। ইতোমধ্যে মিরপুর বাংলা উচ্চ মাধ্যমিক বিদ্যালয় এবং আরবান প্রিপারেটরি স্কুলের সঙ্গে কথা বলে সব ব্যবস্থা করে ফেলেছে উবার কর্তৃপক্ষ। যেহেতু তাদের (মেয়েদের) স্কুলের দায়ভার উবার নিয়েছে, তাই এই অর্থটুকু আমি আমার মেয়েদের ভবিষ্যতের জন্য জমাতে পারবো। একই সঙ্গে তাদের পড়াশুনাটাও নির্বিঘ্নে চালিয়ে যেতে পারবো।’

(দ্য রিপোর্ট/এমএসআর/জানুয়ারি ২২, ২০১৯)