গল্প
বিয়ে

নাজমা আলী
একটা পুরোনো বট গাছের গোড়ায় বসে, প্রতি সন্ধ্যায় ধূপ ও মোম জ্বালিয়ে প্রার্থনা করে বাসন্তী। তারপর মাগরিবের নামাজ পড়তে বসে।
সপ্তাহে একদিন নফল রোজা রেখে, মগড়া নদীতে সলতা বাতি জ্বেলে জলে ভাসায়। এটা নদী ও পীর আওলিয়াদের জন্য। এবং নদীর পীর বাবার কাছে প্রার্থনা করে মেয়েটি বলে, 'বাবা তুমি সহায় থেকো আসন্ন বিপদের গন্ধ পাচ্ছি বাবা!'
'নদী ও বট গাছ' মেয়েটির মনে ভরসার প্রদীপ। বট গাছটির কাছে মেয়েটি আশ্রয় ও আশ্বাস দুটোই কামনা করে; আবার নদীর জল ও স্রোতের সলতা বাতির আলো মেয়েটির মনে বিপদ থেকে মুক্তি পাবার দৃঢ় বিশ্বাস। কিন্তু সে তার ঈশ্বরকে উপেক্ষা করে নয়? কারণ সে পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়ে ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা চেয়ে বিপদ থেকে মুক্তি পাবার কামনা করে থাকে।
তবে ওকে অন্যগ্রহের প্রাণি বলা যাবে না। চমৎকার সারল্য মিশে আছে মেয়েটির দেহ মনে।
কিন্তু মেয়েটি সত্যি কী অদ্ভুত দার্শনিক হয়ে গেলো! যা ভেবে মনে মনে ভয় পেয়ে যায়; এবং বলেও এটা ওটা সরাসরি বাস্তব ও চিরকালের বিচ্ছেদ ঘটে যায়!
সে স্কুলে অষ্টম শ্রেণির শিক্ষার্থী। চৌদ্দো বা পনেরো বছর বয়স।
এই যে চৌদ্দো বছরের বাসন্তী। সর্বক্ষণ মনে দ্বিধা ও সংশয়!
কী হয়েছে তার?
তবে সত্যি একদিন তার ছোট বোন হলুদির বিয়ের মেহমান চলে এলো। তাদের আত্মীয় হয় ছেলে। ছেলেটা হলুদিকে এক নজর দেখেই প্রেমে পাগল প্রায়!
সপ্তাহের মধ্যে বিয়ে ঠিক হয়ে গেলো। এক লক্ষ টাকা যৌতুক দেয়া হলো!
বর আসার দিনও ধার্য হয়ে গেলো! তবে শুভক্ষণের মধ্যে একদিন ছেলেটি আসে বাসন্তীদের বাড়িতে।
নায়কের মতো চেহারার এই সুদর্শনকে দেখে যে কোনো মেয়েই মন দিয়ে বসবে।
বাসন্তী কালো।
হলুদি সুন্দরী ও সুচতুর।
দুবোন যমজ না হলেও পিঠাপিঠি। এক বছরের ছোটো-বড়ো।
তাই বড়ো বোনের চেয়ে ছোট বোনটি বয়সে ছোট হলেও চেহারায় বড়ো।
কিন্তু বাসন্তীকে নিয়ে কেউ ভাবে না। বাসন্তী কালো বলে তাকে আত্মীয় ছেলের পছন্দ নয়। অবহেলাও আছে।
মানবাধিকার লঙ্ঘনের ঘটনা ঘটেছে বাসন্তীর মনে; এ বিচার চাইবার প্রাথমিক আলয় বট গাছটি। এবং মগড়া নদী।
মেয়েটি সকাল ও সন্ধ্যায় ছুটে বট গাছ ও নদীর কাছে। এবং কথা বলে গভীর গহীন অন্ধকারে, যখন তার বুক ফাটা কান্নায় চোখ জলে ভাসে নদীর ও বট গাছটির গোঁড়ায়!
আচ্ছা যাহোক, বিয়ের মাত্র চার দিন বাকী।
..."ও থালাটা মেঝে থেকে তাড়াতাড়ি তুলে নেয়। মনে মনে বলে, 'কী ব্যাপার! এ তো অলক্ষুণে কাজ! এ সময়ে এমন কেনো হলো? আজ তো বট গাছের গোঁড়ায় ধূপ ও মোম জ্বালিয়ে দেয়ার কথা! কিন্তু আমার তো পিরিয়ড সমস্যা! এ নাপাক শরীরে কি ইবাদত কবুল হবে? এতে পাপও তো হতে পারে! তার মানে বাবা আমার সাথে রাগ করেছেন? এখানে আমার থাকার তো কথা নয়? আমি এখনি বাসায় যাচ্ছি!'...
বাসন্তী আগের মতোই বট গাছের গোঁড়ায় ধূপ ও মোম জ্বালিয়ে প্রার্থনা করে। রোজা রেখে মগড়া নদীতে সলতা বাতি জ্বেলে জলে ভাসায়। তবে এখন ওর প্রার্থনার বিষয় হলো, 'বাবা আমার ছোটো বোনটির ভালোয় ভালোয় যেনো বিয়ে হয়ে যায়। স্বামীর বাড়িতে সুখ শান্তিতে যেনো বসবাস করে। এবং সে যেনো সব সময় ভালো থাকে।'
এ যেনো দারুণ ক্ষমা!
ওদের ওখানের বট গাছটা বাসন্তীর দাদার-দাদার আমলের। এবং এই পুরনো বটটি সমস্ত মায়া, মমতার ছায়ার বাদশা। পরম বিশুদ্ধ আর্যসন্তান। কিন্তু বাসন্তী গাছটিকে পুজো করে। তার ধূপের গন্ধে সন্ধ্যা বেলাটি সমগ্র এলাকায় বিমোহিত করে! পুজো শেষে প্রার্থনায় বসে।
ঠিক এভাবে বট গাছের গোঁড়ায় ধূপ ও মোম জ্বালিয়ে বাসন্তী রোজ প্রার্থনা করে।
বিয়ের মাত্র দুদিন বাকী।
আর বাসন্তীর মনে কী নিদারুণ সংশয়! ভয় কেবল সর্বদা, 'আমার বোনের বিয়েটা হবে তো!'
এদিকে বিয়ের আয়োজনে সবাই ব্যস্ত। বাসন্তীও। তবে সে প্রার্থনা ভুলে যায় না, তো!
হলুদি বায়না ধরে, 'মা আমিই আমার বিয়ের বাজার করবো। আমার পছন্দের গহনা অন্যান্য শাড়ির কেনাকাটা আমিই করবো।'
মা রাজি হয়ে বলেন, 'বেশ তো, যাবি তো যা!'
ছোটো বোন মার্কেটে যাবে, নিজ বিয়ের কেনাকাটা করতে। কারো আপত্তি নেই। কিন্তু বাসন্তী মনে মনে নিষেধ করে, 'নাহ! ও কোথাও যাবে না, মার্কেট তো দূরের কথা!'
হায়, বাসন্তী কাউকেই এ কথা মুখ ফুটে বলেনি! মনের কথা মনে চাপা উত্তেজনা নিয়ে-
বাসন্তী বিশেষ একটা কাজে বিকেলে চলে যায় মামার বাসায়। সন্ধ্যায় ফিরবে বলেও সে ফিরতে পারেনি। ওর ছোটো মামি জোর করে রেখে দেয়। এবং বলে, 'এখন থাকো, রাতে আমরা একেবারে চলে যাবো।'
বাসন্তী 'না' টা আর করতে পারেনি। ওর মুখে কে যেনো তালা ঝুলিয়ে দিয়েছে!
কোনো কথা বলা যাবে না। বাসন্তী চুপ হয়ে গেছে, কেমন উদ্ভট মিথ আচরণ ওর!
সন্ধ্যায় ওর হাত থেকে কাসার থালা পড়ে ঝনঝনানি রক্তাক্ত শ্লোগান তুলে!
ও থালাটা মেঝে থেকে তাড়াতাড়ি তুলে নেয়। মনে মনে বলে, 'কী ব্যাপার! এ তো অলক্ষুণে কাজ! এ সময়ে এমন কেনো হলো? আজ তো বট গাছের গোঁড়ায় ধূপ ও মোম জ্বালিয়ে দেয়ার কথা! কিন্তু আমার তো পিরিয়ড সমস্যা! এ নাপাক শরীরে কি ইবাদত কবুল হবে? এতে পাপও তো হতে পারে! তার মানে বাবা আমার সাথে রাগ করেছেন? এখানে আমার থাকার তো কথা নয়? আমি এখনি বাসায় যাচ্ছি!'
এগুলো বলেই ও চলে যাবার জন্যে বাসা থেকে বের হয়। কিন্তু মামি জোর করে বলে, 'আর এক ঘণ্টা থাকো; তোমার মামা এলেই চলে যাবো।'
ও ঢোক গিলে বলে, 'মামি আমার মন বড়ো অস্থির লাগছে! আমার কিছুই ভালো লাগছে না, এই দেখুন আমার গায়ে কী জ্বর চলে আসছে! প্লিজ মামি, আমায় যেতে দিন!'
মামি হেসে বলে, 'একটা ওষুধ দিচ্ছি খেয়ে নাও। এবং একটু বিশ্রাম করো, তোমায় কিছুতেই যেতে দেবো না!'
বাসন্তী অপারগ।
ও বিছানায় শুয়ে এপাশ-ওপাশ করে। ভাবে একটু ঘুম হলে হয়তো ভালো হতো। কিন্তু ঘুম আসছে না।
মামি ওর মাথায় হাত বুলিয়ে দেয়৷ ফ্যানের হালকা বাতাসে ও তন্দ্রাঘোরে যায়।
ও তন্দ্রাঘোরে বলে, 'আমি আর বট গাছের গোঁড়ায় ধূপ ও মোম জ্বালিয়ে প্রার্থনা করবো না। বট বাবা আমায় বুঝে না।'
আর অভিশাপ দেয়, 'বট গাছ তুই ধ্বংস হ!'
ও কী যা তা বলছে! মামি শুনে মুচকি হাসে। মনে মনে বলেন, 'মেয়েটি বিধ্বস্ত! আর সত্যি পাগল একটা মেয়ে! কীসের বট গাছের পুজো করে? আবার রোজা রাখে, কী অন্ধত্ব উন্মাদ মেয়ে!'
মামি ওকে জড়িয়ে ধরে। এবং আস্তে করে বলেন, 'এবার চুপটি করে ঘুমোও তো মা!'
বাসন্তী ঘুমঘোরে বলে, 'না না মামি আ আমি আর এসব করবো না; বট গাছের পুজো...!
রাত বারোটা।
.."ছেলেটি আসে বাসন্তীর সামনে। এবং ওর পাশে বসে। কতোগুলো হলুদ দাঁত খিঁচিয়ে হাসে ছেলেটা। ও টের পায়, ছেলেটা অটিস্টিক বাচ্চাদের মতো; আচরণও তাই। দুনিয়ার বিশাল গোঁফ। নাক ডুবিয়ে আছে অনেক অংশ জুড়ে। পায়ের আঙুলে হলুদ রঙ মাখানো, চাষা গেঁয়োর মতো।...
দরজা খোলার জন্য কে যেনো জোরে ধাক্কাচ্ছে! বাসন্তী লাফিয়ে জাগে। কিন্তু মামি দরজা খুলে দেয় আগেই।
বাসন্তীর কাকাত ভাই সবুজ ও ছোট কাকা, হুড়মুড়িয়ে ঘরে প্রবেশ করে। এবং হাপিশ-তাপিস করে বলে, 'হলুদিকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না! ও মার্কেটে যাবে বলে বেরিয়ে ছিলো আর ফিরে নি। আমরা সারা মার্কেট তন্নতন্ন করে খুঁজেছি, কোথাও পাইনি!'
বাসন্তী চিৎকার করে বলে, 'হলুদিকে কোথাও খুঁজে পাচ্ছি না মানে? ওকে কেউ ধরে নিয়ে গেছে?'
ছোট কাকা বলে, 'মনে হয় এমনই! মরল বাড়ির সবাই উধাও, ওদের বড়ো ছেলেটাও বাড়ি নেই।'
বাসন্তী চিৎকার করে কাঁদে!
আর বলে, 'তুই কী করলি রে হলুদি!'
হলুদির ঘটনার প্রায় তিন মাস পর।
বাসন্তী এখন আর বট গাছটির সেবা ও পুজো করে না। ধূপের গন্ধ ছড়িয়ে সন্ধ্যা প্রদীপ আর জ্বালায় না। তবে নফল রোজা রাখে। মগড়া নদীতে সলতা বাতি জ্বালিয়ে বাতি ভাসায়। তাও নিয়মিত নয়, তবে মাঝেমধ্যে এসে দাঁড়ায় নদীর জলে পা ডুবিয়ে রাখতে।
আবার শুরু হয় বাসন্তীর বিয়ের আয়োজন। কিন্তু বাসন্তী কোনো বিয়েতেই রাজি হয় না। মাকে হাজারবার নিষেধ করার পরও। বাসন্তীর জন্যে দিনে পাঁচটি করে বিয়ের পাত্র আসে দেখতে। শুরু হয় বাসন্তীর বিয়ের আয়োজন নামে অমানুষিক নির্যাতন ও অপমান।
রোজ এভাবে চলতে থাকে বিয়ের মেহমান আসা-যাওয়ার মহড়া। বাসন্তীও বেশ আছে ঘৃণাভরা মন নিয়ে।
ও ভাবতে পারে না, যে একটা স্কুল পড়ুয়া মেয়েকে ওরা কীভাবে বিয়ে দেয়ার প্রচেষ্টা করে!
একশো আটানব্বই তলায় রয়েছে এমন একটা বিয়ে প্রোগ্রাম, যদিও নাট্যোৎসব ও আয়োজকদের রীতিমতো গবেষণা জীবন নিয়মের দাস হিসেবে কাজ করতে পারে ; তবুও বাসন্তী আশায় বাঁচে, যে এই বিয়েও ভেঙে যাবে। কিন্তু সম্ভব নয়। বাসন্তী কোনো উপায়ও খুঁজে পাচ্ছিলো না।
অন্য বিয়েগুলো হয়ে যাওয়ার পথে ভেঙেছে, আর এটা আঠা কষে লেগে আছে যেনো!
তারিখ হলো মেয়েকে আংটি পরাবে।
মাকে পা জড়িয়ে ধরে বললো, 'প্লিজ মা! বিয়েটা ভেঙে দাও।'
মা জোর করে পা সরিয়ে দাঁড়ায়। সন্ধ্যার সময় মাগরিবের নামাজ পড়তে বসে। এখন যদিও সে বট গাছের গোঁড়ায় ধূপ ও মোম জ্বালিয়ে প্রার্থনা করে না। তবে নফল রোজা রেখে মগড়া নদীতে সলতা বাতি জ্বেলে জলে ভাসায়। নামাজ পড়ে।
বিশেষ করে মাগরিবের নামাজ শেষে,
মোনাজাতে আল্লাহকে প্রশংসা করে বলে, 'হে প্রভু। এদিকে তাকাও। এখানে আমি তোমার বিশাল দুনিয়াতে একা! একটু মেহেরবানি করে আমার বিয়েটা ভেঙে দাও! তুমি আমায় সাহায্য করো, প্রভু! আমিন।'
মোনাজাত করে অনেক কেঁদেছে। ওর কথাগুলো শুনে মাও হতবিহ্বল!
কিন্তু কাকার সাথে সমালোচনা করে বলছে, 'আরে ইডিয়ট! ও ঈশ্বরের কাছে প্রার্থনা করেছে। এবং বলে আমার বিয়েটা ভেঙে দাও ঈশ্বর ..! হা হা হা!'
এই কথাগুলো শুনে বাসন্তীর ভীষণ ঘৃণা লাগছে। মা কি ভিলেন?
মনে, মনে আরও জেগে ওঠে বাসন্তী।
'আমায় জোর করে বিয়ে দেবার চেষ্টা আরও ইনসাল্ট করে!
আচ্ছা দেখি, ওরা কীভাবে বিয়ে দেয়!' এ কথা বাসন্তী বলে।
পরদিন বরপক্ষ এলো। এলোনা সেই আংটি। আংটিবদলের থেকে বেঁচে গেলো বাসন্তী।
কিন্তু এটা ভুল করে রেখে এসেছে, বরপক্ষ বললো।
মেয়েপক্ষ বললো কোনো সমস্যা নেই। সব কিছু পাকাপোক্ত করে যান।
যান্ত্রিক আওয়াজ শোনা যাচ্ছে, ছেলের মামার গলায়। তিনি একজন ব্যক্তি, যে বউ দেখেননি।
ছেলের মামা বলে, 'মেয়েটা কোথায়? নিয়ে আসুন একটু করে কথা বলে নিই।'
বাসন্তীও একটু করেই মামার সামনে কাশি কাশি গলায় বসে গেলো! একটু বাকা ও বোকা বানানোর জন্য চেষ্টা করলো সে। জিজ্ঞেস করলেন, 'তোমার নাম কি মা?'
বাসন্তী শুনেনি এমন ভান করে বললো, 'কাম? হ্যাঁ কাম হলো কাজ করা, আমরা কাজকে কাম বলি!
মামা: না মা, 'তোমার নাম বলো!'
বাসন্তী: 'বাবার নাম?? হ্যাঁ বাবার নাম নলেল চৌধুরী! '
মামা: না না মা, 'তোমার নামটা লিখো তো!'
এই বলে এক টুকরো কাগজ ও কলম দিলো। ও হাতে কাগজটি পেয়ে মনে মনে বেজায় খুশি!
..."বাসন্তীর মা স্কুলে যেয়ে বাসন্তীকে ডেকে আনবে বলে হেড শিক্ষকের অফিস কক্ষে আলোচনার জন্যে প্রবেশ করে। বাসন্তী খবর পেয়ে হেড শিক্ষকের রুমে আসে। বাসন্তীর জীবন বৃত্তান্ত সব বলে রাখে হেড শিক্ষকের কাছে। এবং আরও কিছুক্ষণ পর আসে নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সমাজকর্মী সংগঠনের লোকজন। সকলের আগমন দেখে মা হতবিহ্বল হয়ে গেলো! মায়ের অপরাধ বুঝতে পেরেছে এমন স্বীকারোক্তি করে, মা বাসন্তীর বিয়ে ভেঙে দেয়। এবং প্রতিজ্ঞা করে, বাল্যবিবাহের এমন কুফলে আর পা দিবে না।...
কাগজে লেখে, 'যদি বাঁচতে ইচ্ছে হয়, তবে এখনি ফুটেন। আপনি জানেন না? এখনও আমার আঠারো হয়নি। তাই এটা বাল্যবিবাহ। এই প্রতিরোধে একাধিক দেশে বাল্যবিবাহ সম্পর্কে আইন প্রচলিত আছে। বাল্যবিবাহ ও যৌতুক দেয়া নেয়া দণ্ডনীয় অপরাধ। এতে সশ্রম কারাদণ্ড ও জরিমানা উভয়ই আছে।
আমি এ বিয়েতে রাজি নই, আপনি বুঝতেছেন না কেনো?"
বাসন্তী কাগজটি লোকটিকে দিয়ে ওর ঘরে চলে যায়।
কিন্তু ওর লেখা পড়ে মামা শ্বশুর খুবই বিব্রতবোধ করছেন। কী হয়েছে জানতে চেয়ে বাসন্তীর মা বলে,'মাঠে হাল চাষ করবো আমি,আর বলদকে জিজ্ঞেস করে নেবো? যে বলদ তুই আজ হাল চাষে যাবি?' মেয়েরা বলদ!
মেয়েরা ইতুপূজা সম্পর্কে বিস্তারিত বলার পক্ষে সম্ভাব্য জজ।
মা বকে, 'হাতের চেয়ে আম মোটা হওয়া চলবে না! তোমার ছোট বোন পালিয়েছে, তোমাকে ঘরে রাখা যাবে না!'
বাসন্তী ঘরে কোণঠাসা হয়ে গেলো! আপনাকে খুব অসহায় রাবণের মতো মনে হয়। লক্ষ্মণ বিভীষণের সহায়তায় মেঘনাদকে বদ করতে আসে যেমন চুপিসারে, তেমনি মায়ের সহায়তায় বাসন্তী বদ হতে যাবে বিয়ে নামে তরবারির আঘাতে!
পরদিন বরপক্ষ আবার এলো।
এলো সাথে বর। বাসন্তী স্কুলে। সন্ধ্যায় আংটিবদলের পালা।
বসার ঘরে সবাই অপেক্ষায় বাসন্তীর।
মা বকে-ঝকে জোর করে বাসন্তীকে ধরে নিয়ে আসে বসার ঘরে।
বাসন্তী বসে।
ছেলেটি আসে বাসন্তীর সামনে। এবং ওর পাশে বসে। কতোগুলো হলুদ দাঁত খিঁচিয়ে হাসে ছেলেটা। ও টের পায়, ছেলেটা অটিস্টিক বাচ্চাদের মতো; আচরণও তাই। দুনিয়ার বিশাল গোঁফ। নাক ডুবিয়ে আছে অনেক অংশ জুড়ে। পায়ের আঙুলে হলুদ রঙ মাখানো, চাষা গেঁয়োর মতো।
ছেলেটা কথা বলবে এমন সময় বাধা দিয়ে মামা বলেন, 'আংটি বদল করো।'
কিন্তু অটিস্টিক বাচ্চাদের মতো হেসে ছেলেটা বলে, 'মামা আমি তো আংটিটা হারিয়ে ফেলছি! মা বলেছেন বউ দেখে টাকা দিয়ে দিতে!'
মামা দাঁত নিসপিস করে। গাধাটি এতোক্ষণ সীমানা ছাড়ায়ে গেছে!
আজও আংটি বদল হলো না। মেহমান চলে গেলো। তবে বিয়ে ঠিকই হলো!
পরদিনে,
বাসন্তী স্কুলে।
এদিকে বিয়ের মেহমান আসে। ওরা ঘরোয়া পরিবেশে বিয়ে পড়িয়ে মেয়ে নিয়ে যাবে।
বাসন্তীর মা স্কুলে যেয়ে বাসন্তীকে ডেকে আনবে বলে হেড শিক্ষকের অফিস কক্ষে আলোচনার জন্যে প্রবেশ করে। বাসন্তী খবর পেয়ে হেড শিক্ষকের রুমে আসে। বাসন্তীর জীবন বৃত্তান্ত সব বলে রাখে হেড শিক্ষকের কাছে। এবং আরও কিছুক্ষণ পর আসে নারী ও শিশু বিষয়ক সম্পাদক ও সমাজকর্মী সংগঠনের লোকজন। সকলের আগমন দেখে মা হতবিহ্বল হয়ে গেলো! মায়ের অপরাধ বুঝতে পেরেছে এমন স্বীকারোক্তি করে, মা বাসন্তীর বিয়ে ভেঙে দেয়। এবং প্রতিজ্ঞা করে, বাল্যবিবাহের এমন কুফলে আর পা দিবে না।
এক সপ্তাহ পর...
বাসন্তী নিয়মিত স্কুলে যায়। এক সন্ধায় মা বাসন্তীর কাছে জানতে চাইলো, 'ওই যে সুন্দর ও সুদর্শন যুবকটিকে তোর পছন্দ?'
বাসন্তী অন্ধকার দেখে।
বাসন্তী ধীরে ধীরে এগিয়ে চুপিচুপি মাকে বলে, দেখো মা! হলুদির বিয়ের ঘটনা ভুলতে পারি না। হলুদি এক লক্ষ যৌতুকওয়ালা সুন্দর ও সুদর্শন যুবককে বিয়ে না করে বিয়ে করেছে একটা গ্রাম্য অশিক্ষিত কালো ও বয়স্ক ছেলেকে! তাও পালিয়ে! কিন্তু আমিও কি দোষী? আচ্ছা ওই ছেলে দুদিন পর এসে বলে সে আমায় বিয়ে করবে। রান্নাঘরে ছেলেটি আমার গা ঘেঁষে দাঁড়িয়ে ঠিক সূর্যের আনমন রশ্মি আমার মাথা ও সমস্ত শরীর কামনায় পিষ্ট করে আমায় বলে, 'তুমি আমায় বিয়ে করবে?'
ছেলেটির শরীরের ঘামের গন্ধ আমার নাকে এসে ঢাকা পড়ে হৃদয়ের গভীরে!
কিন্তু সেই যে গেলো আর এলো না!
আমার ছোটো বোন হলুদি পালিয়েছে বলে, সে আমায় প্রেম ভিক্ষা-বৃত্তির ব্যবস্থা করে; তারপর চরম প্রতিশোধে বলে গেলো, 'তুমি আমায় বিয়ে করবে?
কেনো মা, সে এমন কথা কেনো বললো? বলতে পারো মা ?'
মা নির্বাক।
(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/০৪,২০১৯)
পাঠকের মতামত:

- কালো টাকা সাদা করার সুযোগ, বাজেটের লক্ষ্য পরিপন্থি: ড. ফাহমিদা
- গাজায় গণহত্যা নয় যুদ্ধাপরাধ করেছে ইসরায়েল: ম্যাথু মিলার
- বাজেটে পুঁজিবাজার উন্নয়নে সহায়ক নীতিমালা রয়েছে: ডিএসই
- সরকারি চাকরিতে বাধ্যতামূলক হচ্ছে এনআইডি : ইসি
- জুলাই সনদে কী থাকবে তা এখনই নির্ধারণ করতে হবে: আলী রিয়াজ
- সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পর্যালোচনায় উচ্চপর্যায়ের কমিটি হচ্ছে: আইন উপদেষ্টা
- ১১৭৪ কোটি টাকার ঋণ জালিয়াতি : সালমান এফ রহমানের নামে দুই মামলা
- সেপ্টেম্বরের মধ্যে ৭ শতাংশে নামবে মূল্যস্ফীতি : গভর্নর
- এবারের বাজেট সম্পূর্ণ বাস্তবায়ন হবে: পরিকল্পনা উপদেষ্টা
- আমরা ক্ষমতা নিইনি, দায়িত্ব নিয়েছি: অর্থ উপদেষ্টা
- নাইজেরিয়ায় ভয়াবহ বন্যায় ৭ শতাধিক মানুষের প্রাণহানির শঙ্কা
- ব্রিফকেসবিহীন বাজেট যেসব কারণে ব্যতিক্রম
- ধ্বংসপ্রাপ্ত পুঁজিবাজারে গতি ফেরাতে কার্যক্রম চলমান: অর্থ উপদেষ্টা
- জুলাইয়ের মধ্যে সংস্কার ও ডিসেম্বর-এপ্রিলে নির্বাচন চায় জামায়াত
- ঐকমত্যের মাধ্যমে জুলাই সনদ ঘোষণার অঙ্গীকার প্রধান উপদেষ্টার
- সারা দেশে ২৫২ বিচারককে একযোগে বদলি
- কালোটাকা সাদা করার সুযোগ সংবিধানের সুস্পষ্ট লঙ্ঘন: টিআইবি
- বাজেটের টাকা আসবে কোথা থেকে, যাবে কোথায়
- একনজরে ২০২৫-২৬ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেট
- নির্বাচন ডিসেম্বরের পরে যাওয়ার একটিও কারণ নেই: সালাহউদ্দিন আহমেদ
- বৃষ্টির পরেও ঢাকার বাতাস সংবেদনশীলদের জন্য ‘অস্বাস্থ্যকর’
- ট্রেনে ফিরতি যাত্রা : আজ বিক্রি হবে ১২ জুনের টিকিট
- গাজায় হত্যাযজ্ঞ চলছেই, নিহত ছাড়িয়ে গেল ৫৪ হাজার ৪০০
- প্রস্তুত হাট, আসছে গরু-অপেক্ষা ক্রেতার
- ডিএসসিসি বোর্ডের মেয়াদ শেষ, ইশরাকের শপথে অনিশ্চয়তা
- ৭ লাখ ৯০ হাজার কোটি টাকার বাজেট পেশ আজ
- মেজর সিনহা হত্যা: ওসি প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ডের রায় বহাল
- নতুন ৩ ডিপোজিট প্রডাক্ট এনেছে আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংক
- আল-আরাফাহ্ ইসলামী ব্যাংকের এজিএম ১৪ আগস্ট
- সমন্বয় বাড়িয়ে আর্থিক বিবরণীর মানোন্নয়নে ৩ সংস্থাকে দিকনির্দেশনা
- গাজায় ত্রাণ নিতে আসা ফিলিস্তিনিদের ওপর গুলি, নিহত ৩১
- বাংলাদেশ দলকে অভ্যর্থনা জানিয়ে বন্ধুত্বের বার্তা দিলেন পাকিস্তানের প্রেসিডেন্ট
- ভূমিধসের শঙ্কা, লামায় ৬০ রিসোর্ট বন্ধ ঘোষণা
- উপদেষ্টা পরিষদ ছাত্রদের ভুল পথে পরিচালিত করছে : হাফিজ
- নিবন্ধন ফিরে পাওয়ার রায়ের মাধ্যমে ন্যায় বিচার নিশ্চিত হলো : জামায়াত আমির
- হাসিনার বিরুদ্ধে আনুষ্ঠানিক অভিযোগ দাখিলে যা বলল প্রসিকিউশন
- অভিযোগ আমলে নিয়ে শেখ হাসিনার বিরুদ্ধে গ্রেপ্তারি পরোয়ানা
- নির্বাচন আগেও হতে পারে, ৩০ জুনের পরে যাবে না: প্রেস সচিব
- দেশের ইতিহাসে দ্বিতীয় সর্বাধিক রেমিট্যান্স এলো মে মাসে
- যে শর্তে মার্কিন যুদ্ধবিরতি প্রস্তাবে সম্মতি দিল হামাস
- ডিএসইতে পিই রেশিও কমেছে ৩.৭১ শতাংশ
- সিঙ্গাপুর ম্যাচ নিয়ে আত্মবিশ্বাসী বাংলাদেশ, বলছেন রহমত মিয়া
- শেখ হাসিনার বিচার ট্রাইব্যুনাল থেকে সরাসরি সম্প্রচার হবে: প্রসিকিউটর
- জামায়াতকে নয়, ইসলামকে ক্ষমতায় আনতে চাই: শফিকুর রহমান
- দেশে ফিরেছেন প্রধান উপদেষ্টা
- করিডোর ইস্যুতে সরকারের অবস্থান জানতে চাইল বিএনপি
- নির্বাচন নিয়ে ‘ব্ল্যাকমেইল’ করা যাবে না: মির্জা আব্বাস
- বিএনপিকে যমুনায় ডেকেছেন প্রধান উপদেষ্টা
- এবারের বাজেটে নতুন কোনো চমক থাকছে না: দেবপ্রিয়
- আইসিসির হস্তক্ষেপের আশায় আছেন ফারুক
- নতুন কাউন্সিলর বুলবুল, অনুমোদন দিল বিসিবি
- ইসরাইলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে গাজায় যাচ্ছেন গ্রেটা থুনবার্গ
- ঈদের ছুটিতে এটিএম বুথে পর্যাপ্ত টাকা রাখার নির্দেশ
- জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ৬ সমঝোতা স্মারক সই
- দুর্বল হয়েছে গভীর নিম্নচাপ
- জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ফুলেল শ্রদ্ধা
- জিয়াউর রহমানের আজ ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী
- নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে: মির্জা আব্বাস
- দাম বেড়েছে সবজির, মুরগিতে স্বস্তি
- বাজেটে পুঁজিবাজারের জন্য ইতিবাচক পদক্ষেপ নেওয়া হবে: ড. আনিসুজ্জামান
- সব ধরনের নৌযান চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
- সিনহা হত্যা: হাইকোর্টের রায় ২ জুন
- যুক্তরাষ্ট্র থেকে তুলা ও তেল আমদানি বাড়াতে চায় বাংলাদেশ
- উপকূলীয় ১৬ জেলায় ৪ ফুট উচ্চতার জলোচ্ছ্বাসের শঙ্কা
- ইশরাকের বিষয়ে আদালতের রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি
- ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব : তারেক রহমান
- "খুব শিগগিরই গণতন্ত্র পুনঃপ্রতিষ্ঠিত দেখতে পাব, এই হোক অঙ্গীকার"
- বিনিয়োগকারীদের সঙ্গে ড. আনিসুজ্জামানের বৈঠক আজ
- সচিবালয়ে সপ্তাহে দুই দিন দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
- ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- এই সরকার স্টারলিংক এনেছেন আরাকান আর্মির জন্য: মির্জা আব্বাস
- চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র
- আবারো বিসিবি সভাপতি বদলের জোর গুঞ্জন
- অভিন্ন চ্যালেঞ্জ মোকাবিলায় এশিয়ার দেশগুলোকে একসঙ্গে কাজ করার আহ্বান
- বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
- গভীর রাতে ভূমিকম্পে কেঁপে উঠল ঢাকা
- ঢাকায় ঝুম বৃষ্টি, চট্টগ্রামে পাহাড় ধসের শঙ্কা
- জিয়াউর রহমানের আজ ৪৪তম শাহাদতবার্ষিকী
- শিবির ছাত্ররাজনীতির পরিবেশকে ‘বিষাক্ত’ করে তুলেছে: উমামা ফাতেমা
- নির্বাচন ডিসেম্বরের মধ্যেই করতে হবে: মির্জা আব্বাস
- বরিশালের অভ্যন্তরীণ রুটে লঞ্চ চলাচলে নিষেধাজ্ঞা
- জাপানের উদ্দেশে ঢাকা ছেড়েছেন প্রধান উপদেষ্টা
- ডিসেম্বরের আগেই নির্বাচন হওয়া সম্ভব : তারেক রহমান
- এবার ঢাবিতে মশাল মিছিলে উত্তেজনা, শিক্ষার্থীদের ‘ভুয়া ভুয়া’ দুয়োধ্বনি
- দুর্বল ব্যাংকগুলো একীভূত করার আগে নিয়ন্ত্রণে নেবে সরকার: গভর্নর
- এই সরকার স্টারলিংক এনেছেন আরাকান আর্মির জন্য: মির্জা আব্বাস
- ইসরাইলের বিরুদ্ধে আওয়াজ তুলতে গাজায় যাচ্ছেন গ্রেটা থুনবার্গ
- সচিবালয়ে সপ্তাহে দুই দিন দর্শনার্থী প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা
- ঢাকাসহ ৯ অঞ্চলে ৮০ কিমি বেগে ঝড়ের আভাস
- ইশরাকের বিষয়ে আদালতের রায় পরীক্ষা-নিরীক্ষা করে সিদ্ধান্ত নেবে ইসি
- দুর্বল হয়েছে গভীর নিম্নচাপ
- সুস্পষ্ট লঘুচাপটি ঘণীভূত হয়ে নিম্নচাপে পরিণত
- চীনা শিক্ষার্থীদের ভিসা বাতিল করবে যুক্তরাষ্ট্র
- পুতিন ‘আগুন’ নিয়ে খেলছেন: ট্রাম্প
- প্রস্তুত হাট, আসছে গরু-অপেক্ষা ক্রেতার
- নির্বাচন আগেও হতে পারে, ৩০ জুনের পরে যাবে না: প্রেস সচিব
- জিয়াউর রহমানের সমাধিতে বিএনপির নেতাকর্মীদের ফুলেল শ্রদ্ধা
- সিনহা হত্যা: হাইকোর্টের রায় ২ জুন
- উপদেষ্টা পরিষদ ছাত্রদের ভুল পথে পরিচালিত করছে : হাফিজ
- জাপানের সঙ্গে বাংলাদেশের ৬ সমঝোতা স্মারক সই
সাহিত্য এর সর্বশেষ খবর
সাহিত্য - এর সব খবর
