thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ২৬ নভেম্বর ২০২৪, ১১ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৪ জমাদিউল আউয়াল 1446

জাবিতে শৃঙ্খলা বিধিতে বিতর্কিত ধারা বাতিলের দাবি

২০১৯ জুলাই ০৮ ২১:৪৭:১৪
জাবিতে শৃঙ্খলা বিধিতে বিতর্কিত ধারা বাতিলের দাবি

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের (জাবি) ছাত্র শৃঙ্খলা অধ্যাদেশে সংযোজিত নতুন দুটি বিতর্কিত ধারা বাতিলের দাবিতে মানববন্ধন করেছে ক্যাম্পাসে কর্মরত বিভিন্ন গণমাধ্যমের সাংবাদিকেরা।

মানববন্ধনে বিশ্ববিদ্যালয় ছাত্র শৃঙ্খলা বিধি ৫ এর (ঞ) ও (থ) নং ধারাকে নিপীড়নমূলক ও স্বাধীনভাবে মত প্রকাশের অধিকার ক্ষুণ্ণ করে দাবি করে অনতিবিলম্বে তা বাতিলের জোরালো দাবি জানানো হয়।

সোমবার দুপুর আড়াইটায় বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় শহীদ মিনারের সামনে ‘জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে কর্মরত সাংবাদিকবৃন্দ’ ব্যানারে এ মানববন্ধন অনুষ্ঠিত হয়।

মানববন্ধনে সংহতি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক আনু মোহাম্মদ বলেন, শিক্ষার্থীদের আচরণবিধি অংশে উল্লিখিত ৫(ঞ) এবং ৫(থ) উপধারা দুটি বাংলাদেশের সংবিধানের অনুচ্ছেদ ৩৯ (চিন্তা ও বিবেকের স্বাধীনতা ও বাক স্বাধীনতা) এবং অনুচ্ছেদ ৪০ (পেশা বৃত্তির স্বাধীনতা) এর পরিপন্থী।’

দেশের খ্যাতিনামা এ অর্থনীতিবিদ বলেন, বিশ্ববিদ্যালয়ে এমন কোনো পরিস্থিতির উদ্ভব হয়নি যেখানে ঢালাওভাবে উপধারায় উল্লিখিত কর্মকাণ্ড সংঘঠিত হতে পারে। উপরন্তু, অসত্য, তথ্য বিকৃতি, আশালীন বার্তা বা অসৌজন্যতামুলক বার্তার কোনো সংজ্ঞা কিংবা ব্যাখ্যা না থাকার ফলে উপধারা দুটি নিপীড়নমূলক হয়ে উঠতে পারে এবং উঠবে এটাই স্বাভাবিক।’

বিশ্ববিদ্যালয় শাখা সমাজতান্ত্রিক ছাত্রফ্রন্টের সাধারণ সম্পাদক মোহাম্মাদ দিদার সংহতি জানিয়ে বলেন, ‘এটি দূরভিসন্ধিমূলক ধারা। যা শিক্ষার্থী ও সাংবাদিকদের প্রতিবাদী কন্ঠস্বরকে চেপে ধরতে সাহায্য করবে। অবিলম্বে ধারা দু’টি বাতিলের জোর দাবি জানাচ্ছি।’

সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি আশিকুর রহমান বলেন, ‘ এ ধারায় আমরা ডিজিটাল নিরাপত্তা আইনের প্রতিধ্বনি দেখতে পাচ্ছি। বিশ্ববিদ্যালয়ের যেসব নিবর্তনমূলক তৎপরতা রয়েছে সেগুলোর বিরুদ্ধে শিক্ষার্থীদের অভিব্যক্তিকে এটা সংকুচিত করবে। যেহেতু প্রশাসন তাদের মতো করেই সত্য-অসত্য প্রতিপাদন করবে। ফলে এটার অপব্যবহারের সম্ভাবনা রয়েছে।’

সাধারণ ছাত্র অধিকার পরিষদ জাবি শাখার সভাপতি শাকিলুজ্জামান বলেন, ‘বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন কোনো সাংবাদিককে শাস্তি দিতে পারে না। যদি কেউ মিথ্যা কিংবা বিকৃত তথ্যে প্রকাশ করেন, তাহলে বিশ্ববিদ্যালয়ের উচিত প্রচলিত আইনের মাধ্যমে প্রতিবাদ জানানো।’

জাবি সাংবাদিক সমিতির সভাপতি তারিক প্লাবন বলেন, ধারা দুটি সংযোজন করে প্রশাসন কর্তৃত্বপরায়ণ মানসিকতার পরিচয় দিয়েছে। এটা অনিয়ম-দুর্নীতির বিরুদ্ধে সোচ্চার গণমাধ্যমকর্মী ও প্রতিবাদী শিক্ষার্থীদের থামিয়ে দেয়ার প্রয়াস। বিশ্ববিদ্যালয়ের মতো মহান প্রতিষ্ঠানে এমন নিবর্তনমূলক নীতিমালা লজ্জাকর। প্রশাসনকে অবশ্যই এটি বাতিল করতে হবে।”

বিশ্ববিদ্যালয় সাংবাদিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক হাসান আল মাহমুদের সঞ্চালনায় মানববন্ধনে বিভিন্ন পত্রিকায় কর্মরত প্রায় অর্ধশতাধিক সাংবাদিক ও বিভিন্ন ছাত্র সংগঠনের নেতাকর্মীরা উপস্থিত ছিলেন।

গত ৫ এপ্রিল বিশেষ সিন্ডিকেট সভায় অনুমোদিত শৃঙ্খলা বিধিতে সংযুক্ত ৫-এর (ঞ) নম্বর ধারায় বলা হয়েছে: ‘কোনো ছাত্র/ছাত্রী অসত্য এবং তথ্য বিকৃত করে বিশ্ববিদ্যালয় সংক্রান্ত কোনো সংবাদ বা প্রতিবেদন স্থানীয়/জাতীয়/আন্তর্জাতিক প্রিন্ট ও ইলেক্ট্রনিক সংবাদ মাধ্যমে/সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রকাশ/প্রচার করা বা উক্ত কাজে সহযোগিতা করতে পারবে না।’

নতুন সংযুক্ত ৫-এর (থ) নম্বর ধারায় বলা হয়েছে: ‘বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনো ছাত্র/ছাত্রী, শিক্ষক, কর্মকর্তা, কর্মচারীর উদ্দেশে টেলিফোন, মোবাইল ফোন, ই-মেইল, ইন্টারনেটের মাধ্যমে কোনও অশ্লীল বার্তা বা অসৌজন্যমূলক বার্তা প্রেরণ অথবা উত্ত্যক্ত করবে না।’

সংশোধিত বিধিতে ধারা দুটি লঙ্ঘণ করার শাস্তির কথা বলা হয়েছে: ‘লঘু শাস্তি হিসেবে সর্বোচ্চ পাঁচ হাজার টাকা পর্যন্ত জরিমানা, সতর্কীকরণ এবং গুরু শাস্তি হিসেবে আজীবন বহিষ্কার, বিভিন্ন মেয়াদে বহিষ্কার, সাময়িক বহিষ্কার ও পাঁচ হাজার টাকার উর্ধ্বে যেকোনো পরিমাণ জরিমানা করা হবে।’

(দ্য রিপোর্ট/একেএমএম/জুলাই ০৮,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

শিক্ষা এর সর্বশেষ খবর

শিক্ষা - এর সব খবর