thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

হস্তান্তরের ৩ মাসেই ভেঙে পড়লো ব্রিজ

২০১৯ আগস্ট ১৭ ১৯:৫৯:১৮
হস্তান্তরের ৩ মাসেই ভেঙে পড়লো ব্রিজ

কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি: কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার বড়ভিটা ইউনিয়নের পূর্ব ধনীরাম গ্রামের বাঘখাওয়ার চরে তিন মাস আগে নির্মাণকাজ শেষ করা সেতুটি ভেঙে পড়েছে। অনিয়ম আর নিম্নমানের কাজ করায় অ্যাপার্টমেন্ট ওয়াল ভেঙে ব্রিজটি হেলে পড়েছে।

পূর্ব ধনীরাম আবাসনগামী রাস্তায় মরাধরলার (নালা) ওপর ৪০ ফুট দৈর্ঘ্যের ব্রিজটি নির্মাণ করে উপজেলা দুর্যোগ ব্যবস্থাপনা বিভাগ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে ৩০ লাখ ৭৭ হাজার ৬৫৬ টাকা ব্যয়ে সেতুটি নির্মাণ করা হয়। কুড়িগ্রামের পুরনো স্টেশন এলাকার এটিএম দেলদার হোসেন টিটু নামের এক ঠিকাদার সেতুটি নির্মাণ করেন।

বাঘখাওয়ার চর এলাকাবাসীর অভিযোগ, ঠিকাদার উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তার যোগসাজশে নিম্নমানের সামগ্রী দিয়ে সেতুটি নির্মাণ করে। রড, সিমেন্ট, পাথর স্টিমেটের চেয়ে অনেক কম পরিমাণে ব্যবহার করেছে।

এলাকাবাসী সেলিম, আব্দুর রহমান, আব্দুর রশিদ, শহর আলী, সেফাত আলী, দেলবর, জয়নাল, শাহালম, এনামুল, মমিনুলসহ অনেকে জানান, ঢালাইয়ের সময় পাথর পরিষ্কার না করে কাদামাটিসহ ঢালাই করেছে। বালু ও পাথরের তুলনায় সিমেন্ট কম দিয়েছে। নিম্নমানের কাজের প্রতিবাদে ওই সময় এলাকাবাসী নির্মাণকাজ বন্ধ করে দিলেও উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা সবুজ কুমার গুপ্ত এসে কাজ বন্ধ না করার জন্য তাদের হুমকি দেন। এসময় স্থানীয়দের সঙ্গে ওই কর্মকর্তার বাগবিতণ্ডা হয়।

সেদিনের মতো কাজ বন্ধ থাকলেও পরবর্তীতে আবারও নিম্নমানের সামগ্রীতে ঢালাইয়ের কাজ করা হয়। ব্রিজের অ্যাপার্টমেন্ট ওয়াল, বিম ও ছাদসহ সব ধরনের ঢালাইয়ের সময় ভাইব্রেটর মেশিন ব্যবহার না করে শুধু বাঁশ দিয়ে কাজ শেষ করে ঠিকাদারসহ তাদের লোকজন।

স্থানীয়রা আরও বলেন, কয়েক দিন আগে ভার্টিক্যাল ওয়ালে ফাটল ধরেছে। কোরবানির ঈদের আগের দিন এটি ভেঙে পড়ে। যে কোনো সময় সম্পূর্ণভাবে ভেঙে পড়বে ব্রিজটি। এতে প্রাণহানিসহ ঘটতে পারে মারাত্মক দুর্ঘটনা। পূর্ব ধনীরাম আবাসনের ৯০টি পরিবারসহ বাঘখাওয়ার চরের প্রায় ৫০০ পরিবারের যাতায়াতের একমাত্র পথ এটি।

ব্রিজটি ভেঙে পড়ায় এখানকার মানুষগুলো পড়েছে চরম ভোগান্তিতে। তারা ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন, সাধারণ মানুষসহ স্কুল-কলেজগামী শিক্ষার্থীরাও চরম দুর্ভোগের শিকার হচ্ছে। দুর্ভোগ কমাতে সেতুটি ভেঙে পড়ায় স্থানীয়রা বাঁশ দিয়ে কোনো রকম চলাচলের উপযোগী করে তুলেছে। জনবসতি এলাকায় সেতু নির্মাণের মাধ্যমে সরকারি অর্থের অপচয় কার স্বার্থে করা হয়েছে।

স্থানীয় ইউপি সদস্য আব্দুল হামিদ জানান, সেতুটি নির্মাণ প্রাক্কলন অনুযায়ী হয়নি। ফলে ধসে পড়েছে।

ফুলবাড়ী উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা (পিআইও) সবুজ কুমার গুপ্ত জানান, সম্প্রতি বন্যায় সেতুটির নিচ থেকে মাটি সরে যাওয়ায় ক্ষতি হয়েছে।

এ বিষয়ে উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মাসুমা আরেফিন জানান, ব্রিজটি বন্যা নাকি নিম্নমানের কাজের কারণে ভেঙে পড়েছে সেই বিষয়টি নিশ্চিত হওয়ার জন্য তিন সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি করা হয়েছে। তারা তদন্ত করে রিপোর্ট দিলেই পরবর্তী পদক্ষেপ নেয়া হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/আগস্ট ১৭, ২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর