thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

হলি আর্টিজান মামলার আসামিরা আদালতে

২০১৯ নভেম্বর ২৭ ১১:১৪:৪৮
হলি আর্টিজান মামলার আসামিরা আদালতে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: গুলশানের হলি আর্টিজান রেস্টুরেন্টে জঙ্গি হামলা মামলার রায় আজ। এরইমধ্যে মামলার আসামিদের আদালতে হাজির করা হয়েছে।

বুধবার সকাল ১০টা ১৫ মিনিটে প্রিজন ভ্যানে কারাগার থেকে তাদের ঢাকা মহানগর হাকিম আদালতে হাজির করা হয়।

ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের হাজতখানার ওসি মঈনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন।

এ মামলায় গত ১৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ ও আসামিপক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। এরপর ঢাকার সন্ত্রাসবিরোধী বিশেষ ট্রাইব্যুনালের বিচারক মো. মজিবুর রহমান রায় ঘোষণার এদিন ধার্য করেন।

চার্জ (অভিযোগ) গঠনের পর থেকে মোট ৫২ কার্যদিবসে সাক্ষ্যগ্রহণ ও যুক্তিতর্কসহ সব কার্যক্রম শেষে মামলাটি রায়ের পর্যায়ে পৌঁছে। জঙ্গি হামলার তিন বছর চার মাস ২৬ দিন পর চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায় ঘোষণা করা হচ্ছে।

হামলায় জড়িত সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি ‘মৃত্যুদণ্ড’ প্রত্যাশা করছে রাষ্ট্রপক্ষ। অপরদিকে আসামিপক্ষ থেকেও ‘ন্যায়বিচার’ প্রত্যাশা করা হচ্ছে।

জানতে চাইলে সংশ্লিষ্ট ট্রাইব্যুনালের সহকারী পাবলিক প্রসিকিউটর মো. গোলাম ছারোয়ার খান (জাকির) বলেন, চাঞ্চল্যকর এ মামলার রায়ের দিকে শুধু দেশবাসীই নয়, সারা বিশ্ব তাকিয়ে রয়েছে।

রাষ্ট্রপক্ষ আসামিদের বিরুদ্ধে আনা সব অভিযোগ প্রমাণে সক্ষম হয়েছে। তাই সব আসামির সর্বোচ্চ শাস্তি মৃত্যুদণ্ড প্রত্যাশা করছি। তিনি বলেন, আসামিদের অভিন্ন উদ্দেশ্য ছিল কূটনৈতিক এলাকায় হামলা করে বিদেশিদের হত্যা করা।

জানতে চাইলে আসামিপক্ষের আইনজীবী মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেন বলেন, রাষ্ট্রপক্ষ থেকে আদালতে যেসব সাক্ষী উপস্থাপন করা হয়েছে, তাতে আসামিদের বিরুদ্ধে অভিযোগ সন্দেহাতীতভাবে প্রমাণ হয়নি।

প্রতিটি সাক্ষীর বৈসাদৃশ্য রয়েছে। যা আদালতে তুলে ধরা হয়েছে। এমতাবস্থায় আদালতের কাছে আমরা ‘ন্যায়বিচার’ প্রত্যাশা করছি।

২০১৬ সালের ১ জুলাই গুলশানের হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলা চালিয়ে দুই পুলিশসহ দেশি-বিদেশি ২২ জনকে হত্যা করে জঙ্গিরা। পরে চিকিৎসাধীন অবস্থায় আরও দু’জনের মৃত্যু হয়।

এছাড়া হামলায় অন্তত ৩০ জন পুলিশ সদস্য আহত হন। ওই সময় আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর যৌথ অভিযান ‘অপারেশন থান্ডারবোল্ডে’ পাঁচ জঙ্গি নিহত হয়। অভিযানে এক জাপানি ও দুই শ্রীলংকানসহ ১৩ জনকে জীবিত উদ্ধার করা হয়।

জঙ্গি হামলার ঘটনায় ওই বছরের ৪ জুলাই গুলশান থানায় সন্ত্রাসবিরোধী আইনে মামলা করে পুলিশ। তদন্ত শেষে ২০১৭ সালের ২৩ জুলাই হামলায় জড়িত ২১ জনকে চিহ্নিত করে জীবিত আটজনের বিরুদ্ধে আদালতে চার্জশিট (অভিযোগপত্র) দাখিল করা হয়।

পুলিশের কাউন্টার টেরোরিজম অ্যান্ড ট্রান্সন্যাশনাল ক্রাইম ইউনিটের (সিটিটিসি) পরিদর্শক হুমায়ুন কবীর এ চার্জশিট দাখিল করেন। ঘটনায় জড়িত ‘চিহ্নিত’ বাকি ১৩ জন এরই মধ্যে বিভিন্ন অভিযানে নিহত হওয়ায় তাদের নাম চার্জশিট থেকে বাদ দেয়া হয়।

এরপর গত বছরের ২৬ নভেম্বর এ মামলায় আট আসামির বিরুদ্ধে চার্জ (অভিযোগ) গঠন করেন ট্রাইব্যুনাল। গত বছরের ৩ ডিসেম্বর এ মামলায় সাক্ষ্যগ্রহণ শুরু হয়ে চলতি বছরের ২৭ অক্টোবর শেষ হয়।

গত ৩০ অক্টোবর আত্মপক্ষ সমর্থনে আদালতের কাছে আট আসামি নিজেদের নির্দোষ দাবি করেন। এরপর চলতি মাসের ৬ নভেম্বর এ মামলায় যুক্তিতর্ক শুরু হয়।

৭ নভেম্বর রাষ্ট্রপক্ষ যুক্তিতর্ক উপস্থাপন শেষে সব আসামির মৃত্যুদণ্ড চান। আর ১৭ নভেম্বর এ মামলায় উভয়পক্ষের যুক্তিতর্ক শেষ হয়। মামলায় চার্জশিটভুক্ত ২১১ জন সাক্ষীর মধ্যে ১১৩ জনের সাক্ষ্যগ্রহণ হয়েছে।

হলি আর্টিজানে হামলার উদ্দেশ্য : হলি আর্টিজান বেকারিতে হামলার পেছনে জঙ্গিদের তিনটি উদ্দেশ্য ছিল। প্রথমত, কূটনৈতিক এলাকায় হামলা করে নিজেদের সামর্থ্য জানান দেয়া।

দ্বিতীয়ত, বিদেশি নাগরিকদের হত্যা করে নৃশংসতার প্রকাশ ঘটানো। তৃতীয়ত, দেশে বিদেশের গণমাধ্যমে ব্যাপক প্রচার পাওয়ার মাধ্যমে বহির্বিশ্বে বাংলাদেশের ভাবমূর্তি ক্ষুণ্ণ করা।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/নভেম্বর ২৭,২০১৯)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর