thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৮ ফেব্রুয়ারি 25, ২৬ মাঘ ১৪৩১,  ৯ শাবান 1446

মেয়র প্রার্থীদের কার কত সম্পদ?

২০২০ জানুয়ারি ০২ ১২:১৪:৩৪
মেয়র প্রার্থীদের কার কত সম্পদ?

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: আসন্ন ঢাকা উত্তর ও দক্ষিণ সিটি করপোরেশন (ডিএসসিস) নির্বাচনে মেয়র প্রার্থীরা রিটার্নিং অফিসারদের কাছে মনোনয়নপত্রের সঙ্গে দাখিল করা হলফনামায় সম্পদ ও দায়দেনার বিবরণী দিয়েছেন। পাঠকদের জন্য তুলে ধরা হলো আওয়ামী লীগ ও বিএনপির চার মেয়র প্রার্থীদের সম্পদের বিবরণ-

শেখ ফজলে নূর তাপস: আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী পেশায় আইনজীবী। আয়ের উৎস হিসেবে কৃষিখাতে ৩৫ হাজার টাকা, বাড়ি-অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়ায় ৪২ লাখ ৫০ হাজার ৩৯৮ টাকা, শেয়ার-সঞ্চয়পত্র/ব্যাংক আমানত ৭ কোটি ৮৫ লাখ ৪২ হাজার ৬৪৮ টাকা, আইন পেশায় প্রার্থীর বার্ষিক আয় ১ কোটি ৪৬ লাখ ৫০ হাজার টাকা ও চাকরি বাবদ ৬ লাখ ৬০ হাজার টাকা উল্লেখ করেছেন।

এছাড়া তার ওপর নির্ভরশীলদের আয় হিসেবে কৃষিখাতে ২২ হাজার ৪০০ টাকা, বাড়ি ভাড়ায় ১৪ লাখ ৭৬ হাজার ৩৮২ টাকা, ব্যবসায় ১ কোটি ৫৬ লাখ ৪৮৮ টাকা ও আমানত ৪৪ লাখ ১৯ হাজার ১২২ টাকা কথাও উল্লেখ করেছেন হলফনামায়।

ঢাকা-১০ আসন থেকে পদত্যাগ করে মেয়র পদের এই প্রার্থী অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নিজের নামে নগদ ২৬ কোটি তিন লাখ তিন হাজার ৫৫৭ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ৯৭ লাখ ২০৬ টাকা দেখিয়েছেন।

এছাড়া তার নিজের নামে ৩ হাজার ৭৫০ ইউএস ডলার ও স্ত্রীর নামে ৮ হাজার ৭০০ ইউএস ডলার বৈদেশিক মুদ্রা হিসেবে রয়েছে বলে উল্লেখ করেছেন।

তাপসের নিজের নামে ব্যাংক ও আর্থিক প্রতিষ্ঠানে জমাকৃত টাকা রয়েছে ১ কোটি ৫৩ লাখ ৭৭ হাজার ২০৭ টাকা এবং স্ত্রীর নামে ২ কোটি ৫৭ লাখ ৩১ হাজার ২৩৫ টাকা। নিজের নামে বন্ড এবং বিভিন্ন কোম্পানির শেয়ার রয়েছে ৪৩ কোটি ২৭ লাখ ৫৫ হাজার ৪০৪ টাকার এবং স্ত্রীর নামে ১২ লাখ ৫০ হাজার টাকা রয়েছে। নিজের নামে সঞ্চয়পত্র বা স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ রয়েছে ৩৫ কোটি ২২ লাখ টাকার এবং স্ত্রীর নামে রয়েছে ৩ কোটি ৮৫ লাখ টাকার মতো।

নিজের ও স্ত্রীর ৩ কোটি টাকার বেশি মূল্যমানের গাড়ি, দুজনের দেড় কোটি টাকা মূল্যমানের স্বর্ণালঙ্কার, ১০ লাখ টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী ও ১৭ লাখ টাকার আসবাবপত্র থাকার কথাও হলফনামায় জানিয়েছেন তাপস।

অন্যদিকে স্থাবর সম্পদ তাপস নিজের নামে সাড়ে ১০ কাঠা ও স্ত্রীর নামে ১১২ শতাংশ জমি, নিজের নামে ১০ কাঠা অকৃষি জমি ও স্ত্রীর নামে ১০ কাঠা অকৃষি জমি দেখিয়েছেন।

এছাড়াও তার নিজের নামে ৮ কোটি ৩৭ লাখ ২০ হাজার ৩১৩ টাকার মূল্যমানের আবাসিক/বাণিজ্যিক দালান রয়েছে তিনটি। আর স্ত্রী এবং নিজের নামে পৌনে চার কোটি টাকা মূল্যের তিনটি বাড়ি/ অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে তাপসের।

৪ কোটি ৬৭ লাখ ৯৬ হাজার ২৫০ টাকা দায়-দেনা রয়েছে, যা তিনি বাড়ি ভাড়া অগ্রীম হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

২০০২ ও ২০০৩ সালে তার বিরুদ্ধে দুটি মামলা হলেও খারিজ হয়েছে। তার শিক্ষাগত যোগ্যতা বার এট ল।

ইশরাক হোসেন: অবিভক্ত ঢাকার সর্বশেষ মেয়র সদ্য প্রয়াত বিএনপি নেতা সাদেক হোসেন খোকার ছেলে ইশরাক হোসেন বিএনপি প্রার্থী মনোনয়নপত্র দাখিল করেছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসসি (ইঞ্জিনিয়ারিং)।

পেশা হিসেবে ব্যবসাকে উল্লেখ করেছেন হলফনামায়। তিনি সাদেক ফাইন্যান্স ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, বুড়িগঙ্গা ইকুইটি ম্যানেজমেন্ট লিমিটেড, বুড়িগঙ্গা ইন্ডাস্ট্রিজ লিমিটেড ও দিগন্ত প্রকৌশলী লিমিটেডের পরিচালক। এছাড়া ডাইনামিক স্টিল কমপ্লেক্স লিমিটেডের শেয়ারহোল্ডার এবং ট্রান্স ও শিয়ানিক ট্রেডিংয়ের মালিকও ইশরাক। তার বিরুদ্ধে দুর্নীতি দমন কমিশনের দায়ের করা একটি মামলা (বিশেষ মামলা নং ১৩/২০১৯) বিচারাধীন।

হলফনামায় তিনি বাড়ি বা অ্যাপার্টমেন্ট ভাড়া ৭৮ হাজার ৩০০ টাকা, ব্যবসা থেকে আয় ৪ লাখ ২৪ হাজার টাকা, শেয়ার/আমানতের সুদ ৪ লাখ ২৫ হাজার ৮২৪ টাকা, চাকরি থেকে ৩৫ লাখ ৪৯ হাজার ৯৯৬ টাকা, অন্যান্য আয় হিসেবে ৪৬ লাখ ৮০ হাজার ৩৮৯ টাকা আয় দেখিয়েছেন।

অস্থাবর সম্পদ হিসেবে নগদ অর্থ ৩৩ হাজার ১০৯ টাকা, ব্যাংক এবং আর্থিকখাতে তার জমাকৃত টাকার পরিমাণ এক কোটি ৩৭ লাখ ১৮ হাজার ৬৩ টাকা, শেয়ারবাজারে দুই কোটি ৯৬ লাখ টাকা রয়েছে তার।

এছাড়াও পোস্টাল, সেভিংস সার্টিফিকেটসহ স্থায়ী আমানতে বিনিয়োগ ৪২ লাখ ১৩ হাজার ৫০০ টাকা, এক লাখ টাকার ইলেকট্রিক সামগ্রী এবং এক লাখ ৩১ হাজার ৪০০ টাকার আসবাবপত্র এবং অন্যান্য ২০ লাখ ২৪ হাজার টাকার অস্থাবর সম্পদ দেখিয়েছেন তিনি।

স্থাবর সম্পদ হিসেবে ইশরাক হোসেন ৩০ লাখ ২৫ হাজার ৬৫০ টাকা মূল্যের ৩৪.৫০ শতাংশ কৃষি জমি, ৩২ লাখ ৫৬ হাজার ৮০০ টাকা মূল্যের ২৯.০৯ শতাংশ অকৃষি জমি, আবাসিক ও বাণিজ্যিক এবং অ্যাপার্টমেন্ট মিলিয়ে ১৫ লাখ ৬৯ হাজার ৭৪ টাকার সম্পদ দেখিয়েছেন।

তার দেনার পরিমাণ ৬৫ লাখ ৪৬ হাজার ৭৪৩ টাকা।

আতিকুল ইসলাম : গত বছরের ২৮ ফেব্রুয়ারি উত্তর সিটির উপনির্বাচনে মেয়র নির্বাচিত হন আওয়ামী লীগের আতিকুল ইসলাম। সেই সময়ে তাঁর গৃহঋণ ছিল এক কোটি ১০ লাখ ৭৫ হাজার টাকার। এবার তাঁর নামে আইএফআইসি ব্যাংকে ৯৮ লাখ ৮৯ হাজার টাকা ঋণ রয়েছে। সেই সময়ের মতো নিজের নামে বাড়ি থাকার বিষয়টি হলফনামায় উল্লেখ করেছেন। তবে এবার তাঁর গাড়ি নেই। আওয়ামী লীগের এ প্রার্থী পেশায় একজন ব্যবসায়ী। তাঁর ১৬টি ব্যবসাপ্রতিষ্ঠান রয়েছে। বিকম ডিগ্রিধারী আতিকুল ইসলামের নামে বর্তমানে বা অতীতে মামলা হয়নি। তাঁর বার্ষিক আয় এক কোটি ২৯ লাখ ৬৮ হাজার টাকা। আয়ের উৎস হচ্ছে—কৃষি খাত, ব্যবসা, বাড়িভাড়া, মৎস্য চাষ ও ব্যাংক সুদ। আতিকুল ইসলামের অস্থাবর সম্পদ চার কোটি ৮৬ লাখ ৬৯ হাজার টাকা ও স্থাবর সম্পদের মূল্যমান ১৩ কোটি ৯৭ লাখ ৯২ হাজার টাকা। তাঁর ব্যবসাপ্রতিষ্ঠানের নামে বিভিন্ন ব্যাংকে ৫৯১ কোটি ছয় লাখ টাকা ঋণ রয়েছে।

তাবিথ আউয়াল : পেশায় ব্যবসায়ী বিএনপির মেয়র প্রার্থী তাবিথ আউয়ালের অস্থাবর সম্পদের পরিমাণ ৪৫ কোটি ৬০ লাখ আট হাজার টাকা। এর বাইরে স্থাবর সম্পদের মধ্যে রয়েছে ৪ দশমিক ২৪ একর কৃষিজমি, ১৬ দশমিক ৪৮ একর অকৃষি জমি, দশমিক ৫৬ একর অন্যান্য জমি রয়েছে। এ ছাড়া রয়েছে ৯২৪ ও এক হাজার ৪৩ বর্গফুট আয়তনের দুটি অ্যাপার্টমেন্ট রয়েছে তাঁর। বিভিন্ন ব্যাংক থেকে তাঁর প্রতিষ্ঠানগুলোর নামে ঋণ নেওয়া হয়েছে ৩০২ কোটি ৪৫ লাখ টাকা। তিনি ৩৭টি প্রতিষ্ঠানের মালিকানায় রয়েছেন। শিক্ষাগত যোগ্যতা এমএসসি। তাঁর বার্ষিক আয় চার কোটি ১২ লাখ ৭৩ হাজার টাকা। বর্তমানে তাঁর নামে কোনো মামলা নেই, অতীতেও ছিল না।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ০২,২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর