thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ২১ জুলাই 25, ৫ শ্রাবণ ১৪৩২,  ২৫ মহররম 1447

ফেলানী হত্যা: ৯ বছরেও মেলেনি ন্যায়বিচার

২০২০ জানুয়ারি ০৭ ১১:০৩:১৪
ফেলানী হত্যা: ৯ বছরেও মেলেনি ন্যায়বিচার

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: হাড়কাঁপানো এক শীতের সকাল। বাংলাদেশ-ভারত সীমান্তে উঁচু কাঁটাতারের বেড়ার সঙ্গে হাত-পা ছড়িয়ে উল্টো ঝুলে আছে ছোট্ট একটি মেয়ে। লাল জামা গায়ে, মাথার চুল ঝুঁটি বাঁধা। ২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি সকালের এমন একটি ছবি কাঁপিয়ে দিয়েছিল বিশ্ববিবেক। এর পর পেরিয়ে গেছে ৯ বছর। কিন্তু কুড়িগ্রামের ফুলবাড়ী উপজেলার অনন্তপুর সীমান্তে ভারতীয় সীমান্তরক্ষী বাহিনীর (বিএসএফ) গুলিতে কিশোরী ফেলানী হত্যার ন্যায়বিচারের আশাও যেন অলঙ্ঘনীয় এক কাঁটাতারের বেড়ায় ঝুলে আছে। দীর্ঘকাল অতিবাহিত হলেও আজ পর্যন্ত এ হত্যাকাণ্ডের সুবিচার মেলেনি। এ নিয়ে ক্ষুব্ধ ও হতাশ হলেও বিচারের আশা ছাড়েননি ফেলানীর বাবা নূরুল ইসলাম ও মা জাহানারা বেগম। কোনো একদিন মেয়ের হত্যার কাঙ্ক্ষিত বিচার মিলবে এ অপেক্ষায় দিন গুনছেন তারা।

২০১১ সালের ৭ জানুয়ারি ফুলবাড়ীর উত্তর অনন্তপুর সীমান্তের ৯৪৭ নম্বর আন্তর্জাতিক পিলারের পাশে মই বেয়ে কাটাতাঁর পার হচ্ছিল ফেলানী। বাবার সঙ্গে দেশে ফিরছিল সে। সে সময় টহলরত ভারতীয় চৌধুরীহাট ক্যাম্পের বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষ ফেলানীকে গুলি করে হত্যা করে।

নির্মম ওই হত্যাকাণ্ডের দুই বছর পর ২০১৩ সালের ১৩ আগস্ট ভারতের পশ্চিমবঙ্গের কোচবিহার জেলার বিএসএফের ১৮১ সদর দপ্তরে স্থাপিত জেনারেল সিকিউরিটি ফোর্সেস কোর্টে ফেলানী হত্যার বিচারকাজ শুরু হয়। ৫ সেপ্টেম্বর অভিযুক্ত বিএসএফ সদস্য অমিয় ঘোষকে নির্দোষ ঘোষণা করেন আদালত। রায় প্রত্যাখ্যান করে ১১ সেপ্টেম্বর ফেলানীর বাবা ভারতীয় হাইকমিশনের মাধ্যমে সে দেশের সরকারকে ন্যায়বিচারের আশায় পত্র দেন। ভারতের সুপ্রিমকোর্টে পরপর দুটি রিটও করা হয়। এর পর ২০১৪ সালের ২২ সেপ্টেম্বর পুনঃবিচার কার্যক্রম শুরু হলেও বিভিন্ন কারণে তা একাধিকবার স্থগিত হয়।

২০১৫ সালে বাংলাদেশের আইন ও সালিশ কেন্দ্র এবং ভারতের মানবাধিকার সুরক্ষা মঞ্চ (মাসুম) আরও একটি ক্ষতিপূরণ মামলা করে। ৩১ আগস্ট ভারতের জাতীয় মানবাধিকার কমিশন সে দেশের সরকারকে ফেলানীর পরিবারকে ক্ষতিপূরণ হিসেবে ৫ লাখ রুপি দিতে অনুরোধ করে। এর জবাবে সে দেশের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় ফেলানীর বাবা নুরুল ইসলামকে দায়ী করে বক্তব্য দেয়। এর পর ২০১৬ ও ১৭ সালে কয়েক দফা শুনানি পিছিয়ে যায়। পরে ২০১৮ সালের ২৫ জানুয়ারি শুনানির দিন ধার্য হলেও তা হয়নি এখনো।

ফেলানী হত্যা মামলার বাংলাদেশের প্রতিনিধি দলের সদস্য মানবাধিকার কর্মী, কুড়িগ্রাম জেলা জজকোর্টের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট আব্রাহাম লিংকন বলেন, ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টে বিচারাধীন ফেলানীর পরিবারের পক্ষ থেকে আনীত রিটে বিভিন্ন পক্ষ ইতোমধ্যে জবাব দাখিল করেছে বলে জেনেছি। ফলে এখন রিটটির চূড়ান্ত শুনানি হতে পারে বলে মনে হচ্ছে। বিচারের এমন ধীরগতি আর ভারত সরকারের অবহেলায় হতাশ ফেলানীর পরিবার। তবুও এখনও সঠিক বিচারের আশায় দিন গুনছেন তারা।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ০৭,২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর