thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৭ জমাদিউল আউয়াল 1446

উত্তরে লড়াই জমেছে, দক্ষিণে তাপস এগিয়ে

২০২০ জানুয়ারি ১৭ ২০:০৩:১০
উত্তরে লড়াই জমেছে, দক্ষিণে তাপস এগিয়ে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: ঢাকা সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনের প্রচার প্রচারণা এখন তুঙ্গে। এক সপ্তাহের বেশি সময় ধরে প্রচার প্রচারণা বিশ্লেষণ, ভোটারদের মনোভাব যাচাই করে ঢাকা উত্তরের হাড্ডাহাড্ডি লড়াইয়ের আভাস পাওয়া গেছে। ঢাকা উত্তরে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী আতিকুল ইসলাম এবং বিএনপির সমর্থিত তাবিথ আউয়ালের মধ্যে কে এগিয়ে তা বলা মুশকিল।

স্থানভেদে দুই প্রার্থীর অবস্থান ভিন্নরকম। কোথাও কোথাও আতিকুল ইসলাম এগিয়ে আছেন, কোথাও কোথাও তাবিথের অবস্থান ভালো। যদিও উত্তরের ভোটাররা এখন পর্যন্ত সুনির্দিষ্টভাবে মুখ খুলছেন না যে তারা কাকে ভোট দেবেন। নির্বাচন বিশ্লেষকরা বলছেন, নির্বাচনে ভোটাররা যখন স্বপ্রণোদিত হয়ে তাদের পছন্দের প্রার্থীর নাম উচ্চারণ করেন না, তখন বুঝতে হবে ভোটাররা এখন পর্যন্ত সিদ্ধান্ত নেননি। তারা দোদল্যুমানতার মধ্যে আছেন। সরেজমিনে ঘুরে দেখা গেছে যে, উত্তরা থেকে শুরু করে মোহাম্মদপুর পর্যন্ত যে এলাকা সেই এলাকায় আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থীর অবস্থান ভালো। গুলশান-বনানী-বারিধারা- মহাখালি- রামপুরা এলাকায় তাবিথ আউয়ালের অবস্থান ভালো। তবে একাধিক ভোটারের সঙ্গে আলাপ করে জানা গেছে যে, তারা এখন পর্যন্ত কাকে ভোট দেবেন সে ব্যাপারে মনস্থির করেননি। দুই প্রার্থীরই অবস্থান এবং আশ্বাস ও প্রতিশ্রুতিগুলো ভোটাররা গভীরভাবে বিশ্লেষণ করছেন। আতিকুল ইসলাম শুরুতে একটু পিছিয়ে থাকলেও ক্রমশ নির্বাচনী প্রচারণায় তিনি সংহত হচ্ছেন। অন্যদিকে তাবিথ আউয়ালের ব্যাপারে সবচেয়ে বড় যে সমস্যাটি ভোটাররা আশঙ্কা করছেন, তা হলো শেষ পর্যন্ত বিএনপি ভোটে থাকবে কিনা। গত সিটি নির্বাচনে ভোটাররা ব্যাপক উৎসাহ নিয়েই ভোটকেন্দ্রে গিয়েছিল। মাত্র দুপুর ১২ টার সময় বিএনপির পক্ষ থেকে নির্বাচন বর্জনের ঘোষণা দেওয়া হয়। তাবিথ আউয়াল নির্বাচন থেকে সরে দাড়ান। সেই সময়ের মধ্যেও ৬২ হাজার ভোট পেয়েছিলেন বিএনপির এই প্রার্থী। তাই ভোটারদের মধ্যে এক ধরণের সংশয় রয়েছে, শেষ পর্যন্ত বিএনপি যদি ভোট থেকে সরে দাড়ায়, কারণ অতীত অভিজ্ঞতা বলে বিএনপি প্রায় প্রতিটি নির্বাচনেই মাঝপথে ভোট থেকে সরে দাড়িয়েছে। শেষ পর্যন্ত যদি ভোট থেকে সরে দাড়ান তাহলে তাবিথ আউয়ালকে ভোট দিয়ে লাভ কি হবে? এই প্রশ্নের উত্তরের ওপরই নির্ভর করছে তাবিথ আউয়ালের ভোটের ভাগ্য।

সংশ্লিষ্ট সূত্রগুলো বলছে, যদি ভোটার উপস্থিতি বেশি হয় তাহলে উত্তর তাবিথের পক্ষে যাবে। আর শেষ পর্যন্ত যদি বিএনপি নির্বাচন থেকে সরে দাড়ায় বা সড়ে দাড়ানোর জন্য অভিযোগে খোঁজে তাহলে ভোটার উপস্থিতি কম হবে সেক্ষেত্রে নির্বাচনে আতিকুল ইসলামই এগিয়ে যাবেন বলে বিশ্লেষকরা মনে করছেন।

অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণ সিটি কর্পোরেশন নির্বাচনে যতই সময় এগিয়ে যাচ্ছে ততই ইশরাক হোসেনকে ছাপিয়ে আওয়ামী লীগের সমর্থিত প্রার্থী শেখ ফজলে নূর তাপস এগিয়ে যাচ্ছেন। ঢাকা দক্ষিণে তাপসের পক্ষে এক ধরণের জোয়ার এসেছে বলেই নির্বাচন বিশ্লেষক এবং পর্যবেক্ষকরা মনে করছেন।

সরেজমিনে দক্ষিণের নির্বাচনী এলাকা ঘুরে দেখা গেছে, ভোটাররা প্রকাশ্যেই তাপসকে ভোট দেওয়ার কথা বলছেন। এ ব্যাপারে কোন রাখডাক দেখছেন না। বিশেষ করে ঢাকা দক্ষিণ অনেকবেশি অবহেলিত উত্তরের চেয়ে। বিশেষ করে পুরান ঢাকা, লালবাগ, সূত্রাপুর, কোতয়ালী এলাকাগুলো নানাভাবে অবহেলিত এবং বঞ্চিত। তারা মনে করছেন যে, শেখ ফজলে নূর তাপস যদি মেয়র হিসেবে নির্বাচিত হন তাহলে তিনি এলাকাগুলোর উন্নয়ন করতে পারবেন। ঢাকা দক্ষিণে উন্নয়ন বিষয়টি সবচেয়ে প্রাধান্য পাচ্ছে এবং অধিকাংশ ভোটাররাই মনে করছেন উন্নয়নের জন্য তাপসের কোন বিকল্প নেই।

অন্যদিকে ঢাকা দক্ষিণে আরেকটি বিষয় গুরুত্বপূর্ণভাবে কাজ করছে, তা হলো নারী এবং তরুণ ভোটাররা। এই দুই ধরণের ভোটারদেরই প্রায় জয় করেছেন শেখ ফজলে নূর তাপস। নির্বাচনী পর্যবেক্ষকরা দেখছেন, তাপস একটা পরিকল্পিত বিন্যস্ত নির্বাচনী প্রচারণা চালাচ্ছেন। যে কারণে তিনি যেখানেই যান না কেন একটি টিম সুনির্দিষ্ট বার্তা নিয়ে ভোটারদের কাছে পৌঁছে যাচ্ছে। অন্যদিকে ইশরাকের নির্বাচনী প্রচারণা হচ্ছে অপরিকল্পিত এবং শো ডাউন নির্ভর। রাজনৈতিক দলের কর্মীসভা বা জনসভা আর ভোটারদের কাছে ভোট প্রার্থনা দুটি যে ভিন্ন বিষয় তা ইশরাকের প্রচারণা থেকে লক্ষ্য করা যাচ্ছে না। অন্যদিকে ইশরাক আবেগনির্ভর প্রচারণা করছেন এবং উন্নয়ন সংশ্লিষ্ট তিনি যে সমস্ত বক্তব্য রাখছেন সে সমস্ত অস্পষ্ট এবং অগভীর বলেই ভোটাররা মনে করছেন। তাছাড়া তার প্রতি আবেগ এবং সহানুভূতি থাকলেও ভোটাররা মনে করছেন যে, তিনি মেয়র নির্বাচিত হলে এলাকার উন্নয়ন তিনি আদৌ করতে পারবেন কিনা এই আশংকা ভোটারদের মধ্যে রয়েছে। এ কারণেই ক্রমশই নির্বাচনী প্রচারণায় পিছিয়ে পড়ছেন ইশরাক। তবে নির্বাচনের এখনো বেশকিছুদিন বাকি। এ ধরণের নির্বাচনে শেষ মুহূর্তে ভোটাররা সিদ্ধান্ত নেন এবং সেটার ওপর নির্ভর করে ভোটের ফলাফল।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/জানুয়ারি ১৭,২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

রাজনীতি এর সর্বশেষ খবর

রাজনীতি - এর সব খবর