thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

করোনা ঠেকাতে গর্ভবতীরা যেসব নিয়ম মেনে চলবেন

২০২০ এপ্রিল ১২ ১০:০৬:৪৩
করোনা ঠেকাতে গর্ভবতীরা যেসব নিয়ম মেনে চলবেন

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: লকডাউনে সারাক্ষণ এক অজানা আশঙ্কায় হবু মায়েদের মনে কাঁটার মতো খচখচ করে। বিশেষ করে যারা প্রথম বার মা হতে চলেছেন। তারা তো করোনাভাইরাস ছড়িয়ে পড়ার কারণে আরও বেশি মানসিক উদ্বেগে দিন কাটাচ্ছেন।

যারা মা হতে চলেছেন, তাদের নির্দিষ্ট সময় পর পর কিছু টেস্ট করানো ও চিকিৎসকের পরামর্শ নিতেই হয়। কিন্তু এই লকডাউনের সময় হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যাওয়ার আগে একটু ভাবতেও হচ্ছে। তাই নিতান্ত প্রয়োজন না হলে অন্তঃসত্ত্বাদের বাড়ির বাইরে না বেরনোই ভাল বলে মনে করছেন বিশেষজ্ঞরা।

স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞদের মতে, গর্ভাবস্থার প্রথম তিন মাসে বাড়তি সাবধানতা নেওয়া উচিত। প্রয়োজনীয় ওষুধ, যেমন ফোলিক অ্যাসিড ও অন্য ওষুধ খেতে ভুললে চলবে না। আর সাধারণ স্বাস্থ্যবিধিও মেনে চলতে হবে।

প্রতিবার খাওয়ার আগে সাবান দিয়ে ভালো করে হাত ধুতে হবে। নাকে, মুখে, চোখে কখনওই হাত দেওয়া চলবে না। বাড়িতে কারও হাঁচি, সর্দি হলে ভুলেও তার কাছাকাছি যাওয়া চলবে না। এ ক্ষেত্রে হবু মা কে অন্য ঘরে থাকতে হবে, নাক মুখ মাস্ক দিয়ে ঢেকে রাখা দরকার।

‘আমেরিকান কলেজ অব অবস্ট্রেটিশিয়ান অ্যান্ড গায়নকোলজি’ হবু মা এবং সদ্য মায়েদের জন্য সার্স কোভ-২ করোনাভাইরাস প্রতিরোধে একটা গাইডলাইন তৈরি করে দিয়েছে। সেখানেও বাড়িতে থাকাকে গুরুত্ব দেওয়া হয়েছে। তবে লকডাউনের সময় চিকিৎসকের কাছে যাওয়ার প্রয়োজন পড়লে সংশ্লিষ্ট চিকিৎসকককে ফোন করে সমস্যার কথা জানাতে হবে।

এই সময় গর্ভবতী নারীদের ভালো থাকতে গেলে কিছু নিয়ম মানতে হবে। যেমন:

গর্ভাবস্থায় কিছু রুটিন টেস্ট করা প্রয়োজন। লকডাউনের সময় আলট্রাসোনোগ্রাফি-সহ অন্যান্য পরীক্ষার দিন পূর্ব নির্ধারিত থাকলে চিকিৎসকের সঙ্গে টেলিফোনে কথা বলে নিতে হবে। খুব সমস্যা না হলে কয়েক দিন পরে টেস্ট করা যেতে পারে।

হাসপাতাল বা ক্লিনিকে যেতে হলে যথাযথ ব্যবস্থা নিয়ে যাওয়া উচিত। মাস্ক পরাও বাধ্যতামূলক। হাসপাতালই হোক অথবা ক্লিনিক, যে কোনও মানুষের থেকে হবু মাকে ৬ ফুট দুরে থাকতে হবে।

কোনও অবস্থাতেই মুখে, চোখে বা নাকে হাত দেওয়া চলবে না। বাড়ি ফিরে পোশাক সাবান জলে কেচে, সাবান মেখে পরিস্কার হয়ে তবেই ঘরে যেতে হবে। এই সময় মোবাইল, আংটি, ঘড়ির ব্যবহার কমিয়ে দিন। কেননা, এগুলো থেকেও কোভিড-১৯ ছড়িয়ে পড়ার ঝুঁকি থাকে।

হবু মা এবং যারা সদ্য মা হয়েছেন তাদের এমনিতেই ভয় ও উদ্বেগ বেড়ে যায়। সঙ্গে যোগ হয়েছে কোভিডের আতঙ্ক। তবু এর মধ্যেই ভাল থাকতে হবে। ফিজিক্যাল ডিস্ট্যানস বজায় রাখতে হলেও টেলিফোনে বন্ধু ও ভাই-বোনদের সঙ্গে গল্প করতে পারেন। ভালো বই পড়লে মন ভাল থাকে, দুপুরে ও রাতে ঘুমাতে যাওয়ার আগে বই পড়ুন। বাড়ির হালকা কাজকর্ম, রান্না সবই করতে পারেন।

টেলিভিশনে সিনেমা দেখতে পারেন, তবে করোনা সংক্রান্ত খবর মনের উপর চাপ দিলে তা দেখবেন না।

কোনও রকম শারীরিক সমস্যা হলে ঝুঁকি না নিয়ে সংশ্লিষ্ট স্ত্রীরোগ বিশেষজ্ঞকে ফোন করতে হবে। দরকার হলে অবিলম্বে হবু মাকে হাসপাতালে নিয়ে যেতে হতে পারে।

হবু মায়ের যদি সর্দি কাশি হয় গরম জলে গার্গল করবেন, অসুখটা বাড়তে দেবেন না। কিন্তু যদি এর সঙ্গে শ্বাসকষ্ট থাকে এবং ঠোঁট বা মুখে নীলচে আভা দেখা দেয়, তখন করোনাভাইরাস সংক্রমণের কথা ভাবতে হবে ও প্রয়োজনে পরীক্ষা করাতে হবে।

বর্ভাবস্থায় কোভিড-১৯ পজিটিভ হলে ভেঙে পড়বেন না। বরং কিছু নিয়ম মানলে ও সাবধানে থাকলে এই অসুখ সেরেও যায়।

নিচে নতুন মায়েদের জন্য কিছু আশার কথা

১. সদ্যজাত শিশুর বেলায় এই ভাইরাস অত মারাত্মক আকার নিতে পারছে না।

২.‘দিল্লির অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব মেডিক্যাল সায়েন্স’-এ এক জন করোনা পজিটিভ প্রসূতির স্বাভাবিক ভাবে প্রসব হয়েছে, বাচ্চাটির কোভিড-১৯ নেগেটিভ।

৩. প্রমাণ মিলেছে, মায়ের দুধে করোনাভাইরাস থাকে না। তাই করোনা আক্রান্ত মায়েরও বাচ্চাকে দুধ দিতে কোনও বাধা নেই।

৪. হায়দবাবাদের একটি ওষুধ প্রস্তুতকতারী সংস্থা কোভিড-১৯ প্রতিরোধে ‘ক্লোরোফ্লু’ নামে একটি ভ্যাকসিন তৈরি করেছে, এটি ফেজ-৩ ট্রায়ালে যাচ্ছে। আশা করা যায়, আগামী কয়েক মাসের মধ্যেই এই ভ্যাক্সিনের সাহায্য মিলবে। প্রসূতীদের ক্ষেত্রে এই ভ্যাকসিন আরও ভালো কাজ করবে বলে গবেষকদের ধারণা।

সূত্র: আনন্দবাজার

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১২এপ্রিল,২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর