thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

ক্রিকেটারদের সেই আন্দোলন নিয়ে মাশরাফির অভিমান

২০২০ মে ২৮ ১৭:৪২:২২
ক্রিকেটারদের সেই আন্দোলন নিয়ে মাশরাফির অভিমান

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বল হাতে কিংবা নেতৃত্বে, বিশ বছরের ক্যারিয়ারে দেশকে দিয়েছেন উজাড় করে। ইনজুরিকে বুড়ো আঙুল দেখিয়ে বারবার ফিরে এসেছেন বীরদর্পে। বাংলাদেশ ক্রিকেটের উত্থানের গল্পটাও তাই তার কাছে খুব চেনা। একটা সময়ের বোলার মাশরাফি পরবর্তীতে দলের অধিনায়ক বনে গেছেন। সাথে লাল-সবুজের ক্রিকেটও পদার্পণ করেছে নতুন অধ্যায়ে।

খেলোয়াড়দের কাছে মাশরাফি বড় ভাই সমতুল্য। মাঠ ও মাঠের বাইরে বাংলাদেশের ক্রিকেটারদের সত্যিকার ও আদর্শ নেতাই মাশরাফি। ক্রিকেটারদের অন্যরকম আশ্রয়ও তিনি। কিন্তু খেলোয়াড়দের সাথে এত ভালো সম্পর্ক থাকার পরেও ক্রিকেটাদের সেই আলোচিত আন্দোলনে ছিলেন না মাশরাফি। সাকিব আল হাসানের নেতৃত্বে ঐ আন্দোলনের কোন কার্যক্রমে দেখা যায়নি দেশের ক্রিকেটের সেরা এই অধিনায়ককে।

এই বিষয়টি নিয়ে তখনই প্রশ্ন উঠেছিল, যদিও তখন মাশরাফি বিষয়টি নিয়ে খোলাসা করেননি। তবে বিখ্যাত ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের 'নট আউট নোমান' শোতে অকপটে নিজের বেদনার কথা বললেন। গত বছরের সেপ্টেম্বরে ক্রিকেটারদের আন্দোলনে তাকে না ডাকার জন্য কষ্ট পেয়েছিলেন, সেটা স্বীকার করলেন এবার প্রথমবার।

ক্রীড়া সাংবাদিক নোমান মোহাম্মদের শোতে ক্রিকেটারদের এই আন্দোলন বলতে গিয়ে মাশরাফি বলেন, ‘এটা (ক্রিকেটারদের কাছ থেকে ডাক না পাওয়া) আমার জন্য অনেক কষ্টের একটা ব্যাপার, সেটা আমি অস্বীকার করব না। যেদিন প্রথম ওদের ১১ দফা দাবি দেখলাম, সেদিন আমার মনে হয়েছিল ১২ দফা দাবি হওয়া উচিত ছিল। থাকা উচিত ছিল, আমরা এর ভেতরে মাশরাফিকে ডাকিনি। আমি তখনও অবসরে যাইনি, আমি তখনও অধিনায়ক। স্বাভাবিকভাবেই সবাই প্রশ্ন করবে, মাশরাফি কই? আমার কাছে তাৎক্ষণিক মনে হয়েছিল। আমি তামিমকে বললাম, আমাকে ডাকিসনি এটা ভিন্ন মতামত। কিন্তু মানুষজনের জন্য তোরা কী রেখে গেলি? মানুষজন যখন বলবে, মাশরাফি কোথায়? তোরা যে আমাকে এতগুলো কথা শোনালি, সেটা কেন?’

এরপর মাশরাফি একরকম বোমাই ফাটিয়েছেন। সরাসরি বলেছেন, ড্রেসিংরুম থেকে তাকে নিয়ে মিথ্যা বার্তা দেওয়া হয়েছে, ‘ড্রেসিংরুমে মিথ্যাচার হয়েছিল। মাশরাফি কই? কেউ বলেছে মাশরাফি এমপি সেজন্য আসবে না। আরেকজন জুনিয়র প্লেয়ার বলেছে মাশরাফি ক্ষমতাসীন দলে সেজন্য আসবে না। কিন্তু এটা কি সরকারবিরোধী আন্দোলন? তা তো না। এরপর তৃতীয় দিন কেউ বলল উনি নড়াইলে গেছে এখন আসবে না। কিন্তু এগুলো কেন? জুনিয়রদের কাছে আমাকে ছোট করার তো কোনো দরকার ছিল না। এরপর যেটা হয়েছে, আমি কিন্তু ওদের কারও সাথে না বলেই আমার ফ্যানপেজে স্টেটমেন্ট দিয়েছি, ১১ দফার দাবির সাথে আমি একমত।

পুরো ব্যাপারটা নিয় তাই মাশরাফির মনে অভিমান জমা হয়েছে, ‘আমাকে কোনোভাবে অ্যাভয়েড করতে চেয়েছে সেটা ঠিক আছে। আমি অধিনায়ক হয়েও কখনো জাহির করতে চাইনি। চাবও না। আমাকে না ডাকলে ড্রেসিংরুমেও হয়তো কখনো যাব না, এটাও সত্যি কথা। কিন্তু সমস্ত মানুষের সামনে একটা অদ্ভুত অবস্থায় আমিই পড়েছি। দাবিটা যেহেতু যৌক্তিক, কিন্তু সেই যৌক্তিক দাবিতে আমি নেই বলে আমি অযৌক্তিক। ওরা যদি ক্লিয়ার করে আসত শুরু থেকে যে আমরা মাশরাফিকে চাইনি, বা আমাকে পাওয়া যায়নি, তাহলে আমি একটু সেফ সাইডে থাকতে পারতাম আর কী। তবে এটা নিয়ে আমার কোনো আফসোস নেই।’

অবশ্য এ নিয়ে এখন আর মাশরাফির মনে মেঘ জমে নেই বলেই দাবি করলেন, ‘এখনো আমরা একসাথে আড্ডা দিই। আমার ভেতরে এটা নিয়ে বিন্দুমাত্র ক্ষোভ নেই, এসব আমি মনেও রাখি না। প্রশ্ন এসেছে তাই সত্যিটা বললাম, এটাই কথা। আমার পরিবার যেমন আমার একপাশে, সতীর্থেরা অন্য পাশে কারণ ওরা আমার পরিবার। বহরের পর বছর, ইদ, রোজা সবকিছু তাদের সাথে ভাগাভাগি করেছি। ছোটখাটো সমস্যা নিয়ে দুঃখগুলোকে এক করে রাখার মানে হয় না। ওরাই আমার সবচেয়ে আনন্দের জায়গা, শান্তির জায়গা।’

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৮মে, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

খেলা এর সর্বশেষ খবর

খেলা - এর সব খবর