thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ৬ ফেব্রুয়ারি 25, ২৪ মাঘ ১৪৩১,  ৭ শাবান 1446

সবচেয়ে দ্রুত সুস্থ হচ্ছে বাংলাদেশে

২০২০ জুন ০৮ ২০:২৩:৩৩
সবচেয়ে দ্রুত সুস্থ হচ্ছে বাংলাদেশে

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বাংলাদেশে করোনা সংক্রমণের তিন মাস পার করলো। তিন মাসে বাংলাদেশে করোনা রোগী শনাক্ত হয়েছে ৬৮ হাজার ৫০৪ জন। এই সময়ের মধ্যে বাংলাদেশে করোনায় আক্রান্ত হয়ে মারা গেছে ৯৩০ জন। মৃত্যুর হার যেমন এখন পর্যন্ত সহনীয় মাত্রায় রয়েছে, তেমনি বাংলাদেশের জন্য সবথেকে আশার দিক হলো করোনা সংক্রমিত ব্যক্তিরা দ্রুত সুস্থ হয়ে উঠছেন। হাসপাতালের ওপর নির্ভরতা এখন পর্যন্ত কম।

স্বাস্থ্য অধিদপ্তর সূত্র থেকে জানা গেছে যে, সরকারি-বেসরকারি হাসপাতালগুলোতে এখন পর্যন্ত ১৪ হাজারের কিছু বেশি সংখ্যক করোনা রোগী রয়েছে। বাকিরা বাসায় চিকিৎসা নিচ্ছেন। এখন পর্যন্ত সুস্থ হয়েছেন ১৪ হাজার ৫৬৪ জন। শনাক্তের বিচার তা ২১ শতাংশের বেশি। এটা বাংলাদেশের জন্য আশাবাদের খবর। পৃথিবীর যে দেশগুলোতে করোনা সংক্রমণ ব্যাপক আকারে ছড়িয়ে পড়েছিল, সেই দেশগুলোতে সবথেকে বড় সঙ্কট তৈরি হয়েছিল চিকিৎসা ব্যবস্থা নিয়ে। করোনা আক্রান্ত হলেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিল এবং এর ফলে হাসপাতালে চাপ বেড়েছিল, উন্নত দেশগুলোর হাসপাতালও চিকিৎসা দিতে হিমশিম খাচ্ছিল। এক পর্যায়ে চিকিৎসা ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়েছিল। আর এজন্যেই বাংলাদেশ শুরু থেকে হাসপাতালের উপর যেন চাপ না পড়ে সেজন্য বাসায় থেকে চিকিৎসার উপর জোর দিয়েছিল।

বাংলাদেশের করোনা সঙ্কট মোকাবেলার সবথেকে দুর্বল দিক আমাদের হাসপাতাল ব্যবস্থার দূর্বলতা। আমাদের হাসপাতাল আইসিইউ বেডের সংখ্যা কম, আমাদের অক্সিজেন সীমিত, ভ্যান্টিলেশন নেই ইত্যাদি নানারকম সংকটের কারণে উদ্বিগ্ন ছিলাম এবং বিশেষজ্ঞরা আশংকা করেছিল যে, হাসপাতালের উপর যদি চাপ বাড়ে তাহলে পরিস্থিতি ভয়ংকর হয়ে উঠতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশে করোণা সংক্রমণের তিন মাস পর এখন দেখা যাচ্ছে যে, আমাদের হাসপাতালগুলোতে চাপ বেড়েছে সত্যি। কিন্তু সাথে সাথে সুস্থ হয়ে ওঠা রোগীর সংখ্যা বাড়ছে এবং করোনা সংক্রমণের মোকাবেলায় বাংলাদেশের নেয়া কৌশলের সবথেকে ইতিবাচক দিক হচ্ছে ক্রমশ মানুষ হাসপাতালের উপর নির্ভরশীল না হয়ে নির্ভরশীল হচ্ছে বাসার চিকিৎসার উপর।

করোনা চিকিৎসার শুরু থেকে সম্পৃক্ত আন্তর্জাতিক খ্যাতি সম্পন্ন মেডিসিন বিশেষজ্ঞ ডা. এবিএম আবদুল্লাহ বলেছেন যে, করোনার চিকিৎসার জন্য কথায় কথায় হাসপাতালে যাওয়ার দরকার নেই। তিনি সুনির্দিষ্টভাবে বলেছেন যে, করোনার স্বাভাবিক উপসর্গ থাকলে বাসায় বসেই চিকিৎসা নেওয়া সম্ভব। শুধুমাত্র কয়েকটি কারণে হাসপাতালে যেতে হয়। এর মধ্যে রয়েছে শ্বাসকষ্ট, রক্তজমাট বেঁধে যাওয়া বা অন্যকোন জটিলতা। এই কারণেই এখন চিকিৎসকরা মনে করছেন, করোনা চিকিৎসায় এই কৌশলটিকে আরো কার্যকর করতে হবে। কারণ বাসায় বসে চিকিৎসা নেয়াটাই বাংলাদেশের প্রেক্ষাপটে ভালো। কারণ হাসপাতালে নানারকম সমস্যা হচ্ছে।

প্রথম সমস্যা যে, অপ্রতুল চিকিৎসা ব্যবস্থা।

দ্বিতীয়ত, হাসপাতালের অনেক জটিল রোগে আক্রান্ত রোগীর সাথে থেকে অন্য রোগীরা মনোবল হারিয়ে ফেলতে পারেন।

তৃতীয়ত, হাসপাতালের পরিবেশগত সমস্যা রয়েছে।

এই সমস্ত বাস্তবতা বিবেচনা করে হাসপাতাল থেকে মুখ ফিরিয়ে নিচ্ছেন মানুষ। আবার অনেকে করোনায় আক্রান্ত হয়ে তথ্য গোপন করছেন। তারা হাসপাতালের থেকে বাড়িতে বসে চিকিৎসা নেওয়াতেই বেশি আগ্রহী হচ্ছেন। অনেকে মৃদু উপসর্গ নিয়ে কাউকে কিছু না জানিয়ে বাসাতেই চিকিৎসা নিচ্ছেন।

একাধিক চিকিৎসক-বিশেষজ্ঞরা বলছেন যে, এটাতেই বাংলাদেশ অন্য দেশগুলোর থেকে ভিন্ন। অন্য দেশগুলোতে করোনা পজিটিভ হলেই হাসপাতালে ভর্তি হয়েছেন এবং হাসপাতালে একটি ভয়াবহ পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। কিন্তু বাংলাদেশ হাসপাতাল নির্ভর না হওয়ার সিদ্ধান্তটি অনেক কার্যকর এবং গুরুত্বপূর্ণ বলে মনে করা হচ্ছে। বাংলাদেশে গত ৯০ দিনে ১৪ হাজারের বেশি মানুষ সুস্থ হয়েছেন যা বাংলাদেশের জন্য ইতিবাচক।

দেখা যাচ্ছে যে, বিশ্বে অন্যান্য দেশগুলোতে করোনা আক্রান্ত রোগীর যে সুস্থতার হার, সেই সুস্থতার হারে বাংলাদেশ অনেক এগিয়ে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৮জুন, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর