thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৩ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

৬৬০ ওসিকে একযোগে আইজিপির কঠোর বার্তা

২০২০ জুলাই ০৯ ২১:২১:০০
৬৬০ ওসিকে একযোগে আইজিপির কঠোর বার্তা

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: বাংলাদেশের ইতিহাসে প্রথমবারের মতো পুলিশের ইনস্পেক্টর জেনারেল (আইজিপি) দেশের ৬৬০টি থানার সকল অফিসার ইনচার্জদের (ওসি) সঙ্গে একযোগে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে সভা করেছেন। কনফারেন্সে আইজিপি ড. বেনজীর আহমেদ ওসিদের যেকোনো প্রকার দুর্নীতির বিরুদ্ধে তার কঠোর অবস্থানের কথা ব্যক্ত করেন।

বৃহস্পতিবার (৯ জুলাই) সকাল সাড়ে ১১টা থেকে আড়াইটা পর্যন্ত প্রায় ৩ ঘণ্টাব্যাপী চলে এই ভিডিও কনফারেন্স।

আইজিপি বলেন, বর্তমানে সরকারি বেতন ও অন্যান্য সুযোগ-সুবিধা দিয়ে সুন্দরভাবে জীবন চালানো যায়। একজন সরকারি কর্মচারীর ব্যয় হতে হবে তার বৈধ আয়ের সঙ্গে সঙ্গতিপূর্ণ। অবৈধ অর্থ উপার্জনের মাধ্যমে বিলাসী জীবন-যাপনের স্থান পুলিশের চাকরি নয়। দুর্নীতিবাজরা পুলিশে থাকতে পারবে না। বড়লোক হতে চাইলে তারা পুলিশের চাকরি ছেড়ে দিয়ে ব্যবসা করুক।

তিনি বলেন, আপনারা নিজে অবৈধ উপায়ে কোনো অর্থ উপার্জন করবেন না, অন্য কাউকে অবৈধভাবে অর্থ উপার্জনের সুযোগও করে দেবেন না।

তিনি দ্ব্যর্থহীন কণ্ঠে ঘোষণা করেন, কোনো ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাও আপনাদের কাছে ঘুষ বা মাশোয়ারা চাইলে তা আমাকে নির্ভয়ে জানান। আমি ওই পুলিশ কর্মকর্তার বিষয়টি ব্যক্তিগতভাবে দেখব।

আইজিপি বলেন, ৬৬০ থানার অফিসার ইনচার্জ (ওসি) হলো বাংলাদেশ পুলিশের প্রতিচ্ছবি। আপনাদের ওপরই বাংলাদেশ পুলিশের ভাবমূর্তি নির্ভর করে। আপনাদেরকে এমনভাবে দায়িত্ব পালন করতে হবে, যাতে জনগণ আপনাদের ওপর আস্থা রাখতে পারে এবং আপনাদের প্রত্যেককে যেন একজন সোশ্যাল লিডার হিসেবে সম্মান করে।

বর্তমানে করোনায় পুলিশের অনন্য ভূমিকার কথা উল্লেখ করে তিনি বলেন, গত তিন মাসে পুলিশ জনগণের সঙ্গে থেকে জনগণের কল্যাণ ও সুরক্ষার জন্য যা করেছে তা সত্যিই অভূতপূর্ব। জনগণ পুলিশকে এর প্রতিদানও দিয়েছে। পুলিশ মানুষের অগাধ বিশ্বাস, সম্মান ও আস্থা অর্জন করেছে। মানুষ পুলিশকে তাদের হৃদয়ের মণিকোঠায় স্থান দিয়েছে। যে মর্যাদা, যে সম্মান মানুষ পুলিশকে দিয়েছে তা টাকা দিয়ে কেনা যায় না।

বাংলাদেশ পুলিশ গত তিন মাসে যেখানে গিয়েছে সেখান থেকে আর পেছনে ফিরে যাবে না। জনগণের আস্থা ও বিশ্বাস নিয়ে জনগণের পুলিশ হয়ে বাংলাদেশ পুলিশ সামনের দিকে এগিয়ে যাবে উল্লেখ করে ড. বেনজীর বলেন, প্রধানমন্ত্রীর একান্ত ইচ্ছা ও অনুপ্রেরণায় বাংলাদেশকে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত করতে কাজ করছি আমরা সবাই। সবার আগে বাংলাদেশ পুলিশ হবে দুর্নীতি ও মাদকমুক্ত। দুর্নীতি ও মাদকের বিরুদ্ধে আমাদের অবস্থান জিরো টলারেন্স। পুলিশের কোনো সদস্য মাদক গ্রহণ করবে না, মাদক ব্যবসার সঙ্গে জড়িত হবে না, মাদক ব্যবসায়ীদের সঙ্গে সম্পর্ক রাখবে না। আমরা বাংলাদেশকে মাদকমুক্ত করতে চাই।

তিনি বলেন, মহান স্বাধীনতা যুদ্ধের পর করোনা বাংলাদেশ পুলিশের ইতিহাসে এক নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে। বঙ্গবন্ধুর উদাত্ত আহ্বানে সাড়া দিয়ে ১৯৭১ সালের ২৫ মার্চ রাজারবাগে পুলিশ সদস্যরাই প্রথম সশস্ত্র প্রতিরোধ গড়ে তুলেছিলেন। পুলিশ মুক্তিযুদ্ধে অংশ নিয়েছে, অস্ত্র দিয়েছে, মুক্তিযোদ্ধাদের প্রশিক্ষণ দিয়েছে।

পুলিশ প্রধান বলেন, পুলিশকে আমরা জনগণের দোরগোড়ায় নিয়ে যেতে চাই। বিট পুলিশিংয়ের মাধ্যমে দেশের প্রতিটি ওয়ার্ডে পুলিশি সেবা পৌঁছে দেয়ার লক্ষ্যে আমরা কাজ করছি। আমরা জনগণের পুলিশ হয়ে জনগণের সঙ্গে থাকতে চাই।

তিনি বলেন, সাধারণ মানুষকে নিপীড়ন-নির্যাতন থেকে পুলিশকে বেরিয়ে আসতে হবে। শারীরিক শক্তি ব্যবহার না করে আইনি সক্ষমতা ও মানবিক মূল্যবোধের মাধ্যমে যেকোনো সমস্যার সমাধান করতে হবে। পুলিশ অফিসার ও ফোর্সের জন্য বর্তমানে প্রচলিত কল্যাণ ব্যবস্থা থেকে বেরিয়ে এসে তাদের চিকিৎসা, সন্তানদের লেখাপড়া, আবাসন এবং অবসর পরবর্তী সময়েও কল্যাণ নিশ্চিত করার জন্য পদক্ষেপ নেয়া হবে।

আইজিপি আরো বলেন, সৎ ও স্বচ্ছ উপায়েও যেন পুলিশের প্রত্যেক সদস্য জীবন-যাপন করতে পারেন সেদিকে লক্ষ্য রেখেই সদস্যদের জন্য কল্যাণ পরিকল্পনা তৈরি করা হচ্ছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৯জুলাই, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

অপরাধ ও আইন এর সর্বশেষ খবর

অপরাধ ও আইন - এর সব খবর