thereport24.com
ঢাকা, সোমবার, ১৮ নভেম্বর ২০২৪, ৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

হোমিওপ্যাথিতে করোনামুক্তি?

২০২০ আগস্ট ২৬ ১৭:১৬:৫৪
হোমিওপ্যাথিতে করোনামুক্তি?

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: দুইশো বছরেরও বেশি সময় ধরে বিশ্বে প্রচলিত এবং মোটামুটি জনপ্রিয় চিকিৎসা পদ্ধতি হলো হোমিওপ্যাথি। কিন্তু এর কার্যকারিতা নিয়ে রয়েছে নানা প্রশ্ন। একটি রোগ কিভাবে শনাক্ত করা হবে এবং সেটির চিকিৎসা কীভাবে করা হবে, সে নিয়ে অ্যালোপ্যাথির সঙ্গে হোমিওপ্যাথির রয়েছে বড় ধরনের পার্থক্য। বিশ্বের কিছু দেশে হোমিওপ্যাথি চিকিৎসা এক রকম নিষিদ্ধই বলা চলে। কিন্তু এই করোনা সংকটে অ্যালোপ্যাথি যখন মানুষের জীবন বাঁচাতে পুরোপুরি সফল হতে পারছে না তখন হোমিওপ্যাথি দিচ্ছে সুখবর।

ভারতের গুজরাট স্বাস্থ্য দপ্তর জানিয়েছে, হোমিওপ্যাথির আর্সেনিকাম অ্যালবাম খেয়ে ৯৯.৬৯% ক্ষেত্রেই করোনা থেকে সুরক্ষা মিলছে! সমীক্ষায় তারা এর প্রমাণ পেয়েছে। গত মার্চ থেকেই ভারত সরকার ও সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব হোমিওপ্যাথি (সিসিআরএইচ) এর যৌথ উদ্যোগে গুজরাট, কেরালা, মহারাষ্ট্রসহ বিভিন্ন রাজ্যে আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ এর পরীক্ষামূলক প্রয়োগ শুরু হয়েছিল। এই ওষুধের প্রয়োগে অভূতপূর্ব ফলাফল মিলেছে বলে দাবি করেছে গুজরাটের স্বাস্থ্য দপ্তর।

গুজরাট স্বাস্থ্য দপ্তরের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, মার্চ থেকে রাজ্যের অর্ধেকেরও বেশি মানুষকে আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ দেওয়া হয়েছে। সরকারি হিসাব অনুযায়ী, রাজ্যের প্রায় ৩ কোটি ৪৮ লক্ষ মানুষকে এই হোমিওপ্যাথি ওষুধটি দেওয়া হয়। গুজরাট স্বাস্থ্য দপ্তরের প্রিন্সিপ্যাল সেক্রেটরি জয়ন্তী রবি জানান, যারা কোয়ারেন্টাইনে থাকাকালীন নিয়ম মেনে হোমিওপ্যাথির আর্সেনিকাম অ্যালবাম খেয়েছেন, তাদের ৯৯.৬৯ শতাংশের করোনা পরীক্ষার ফল নেগেটিভ এসেছে।

অন্যদিকে ভারতের সেন্ট্রাল কাউন্সিল অব হোমিওপ্যাথির ডিরেক্টর জেনারেল ড. অনীল খুরানা বলেছেন, আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ ওষুধই করোনা সারাতে পারবে, এমন কোনও দাবি করা হয়নি। তবে এই ওষুধের নির্দিষ্ট ডোজ নিয়ম মেনে খেলে শরীরের রোগ প্রতিরোধ ক্ষমতা বহুগুণ বাড়বে।

এ প্রসঙ্গে গুজরাটের আইয়ুশ বিভাগের ডিরেক্টর ভাবনা প্যাটেল বলেন, করোনা রুখতে হোমিওপ্যাথি ওষুধ আর্সেনিকাম অ্যালবাম সরাসরি কতটা কার্যকরী, তা এখনও স্পষ্ট নয়। এ বিষয়ে আরও পরীক্ষা ও পর্যবেক্ষণ প্রয়োজন।

কী এই আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০?

ডিসটিলড ওয়াটারের সঙ্গে আর্সেনিক মিশিয়ে গরম করে এই ওষুধ তৈরি হয়। এই প্রক্রিয়া চলে তিন দিন ধরে। পানিতে আর্সেনিক দূষণের ফলে শারীরিক সমস্যার কথা সর্বজনবিদিত। এর ফলে ত্বকের ক্যানসার, ফুসফুস ও হৃদরোগ হতে পারে। এই হোমিওপ্যাথিক ওষুধে ১ শতাংশের কম আর্সেনিক থাকে তাই সেটা বড় ধরনের ক্ষতির কারণ হয় না। মুম্বাইয়ের প্রেডিকটিভ হোমিওপ্যাথি ক্লিনিকের চিকিৎসক অমরীশ বিজয়কর জানান, ‘আর্সেনিকাম অ্যালবাম শরীরের প্রদাহের জন্য ব্যবহৃত হয়। ডায়েরিয়া, সর্দি-কাশির জন্য এই ওষুধ ব্যবহৃত হয়।’

খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, সাধারণভাবে হোমিওপ্যাথরা উদ্বেগ, চাঞ্চল্য, ঠান্ডা লাগা, আলসার বা জ্বালা-যন্ত্রণার জন্য রোগীদের আর্সেনিকাম অ্যালবাম-৩০ দিয়ে থাকেন। এটি পাউডার ও ট্যাবলেট আকারে পাওয়া যায়। একটি কোর্সের জন্য প্রয়োজনীয় একটি ছোট শিশির দাম ৫০ টাকার বেশি নয়।

হোমিওপ্যাথ বিশেষজ্ঞরা এমনটাও বলছেন যে, আর্সেনিকাম অ্যালবাম ছাড়াও বেশ কিছু ওষুধ করোনা চিকিৎসায় ব্যবহার করছেন তারা। এর মধ্যে রয়েছে- ব্রায়োনিকা অ্যালবা, রাস টক্সিকো ডেনড্রন, বেলেডোনা ও জেলমেসিয়াম। তারা এটাও বলছেন যে, হোমিওপ্যাথি ওষুধ কলেরা, স্প্যানিশ ইনফ্লুয়েঞ্জা, পীতজ্বর, ডিপথেরিয়া, টাইফয়েডের মতো মহামারির প্রতিষেধক হিসেবে ব্যবহৃত হয়েছে। সুতরাং হোমিওপ্যাথিতে করোনামুক্তি হলে সেটা অবাক হওয়ার মতো কিছু নয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৬আগস্ট, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

স্বাস্থ্য এর সর্বশেষ খবর

স্বাস্থ্য - এর সব খবর