thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৩ নভেম্বর ২০২৪, ৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২১ জমাদিউল আউয়াল 1446

জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক রাহাত খানের জানাজা সম্পন্ন

২০২০ আগস্ট ২৯ ১৪:২১:৪৭
জাতীয় প্রেসক্লাবে সাংবাদিক রাহাত খানের জানাজা সম্পন্ন

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: দেশের খ্যাতিমান কথাসাহিত্যিক ও সাংবাদিক রাহাত খানের জানাজা জাতীয় প্রেসক্লাবে সম্পন্ন হয়েছে। শনিবার (২৯ আগস্ট) বেলা ১১টার দিকে জাতীয় প্রেসক্লাব চত্বরে মরহুমের জানাজা শেষে তার মরদেহে শ্রদ্ধা নিবেদন করেন সর্বস্তরের মানুষ।

এ সময় দেশের বিশিষ্ট এ সাহিত্যিক ও সাংবাদিককে নিয়ে স্মৃতিচারণ করে কথাও বলেন তারা।

জানাজায় রাহাত খানকে নিয়ে বাংলা একাডেমির মহাপরিচালক হাবীবুল্লাহ সিরাজী বলেন, রাহাত খান এক অপূর্ব ও বর্ণাঢ্য জীবনের অধিকারী ছিলেন। ১৯৭৪ সালে বাংলাদেশে প্রথম যে আন্তর্জাতিক সাহিত্য সম্মেলন হয় তার কার্যনির্বাহী সাধারণ সম্পাদক ছিলেন রাহাত খান। সেই সম্মেলনে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান এসেছিলেন প্রধান অতিথি হয়ে। এসেছিলেন জসীমউদ্দীন ও জয়নুল আবেদিন। আমাদের গর্ব এটাই রাহাত ভাই সেই বয়সে আমাদের প্রতিনিধিত্ব করেছেন সাহিত্যে।

তিনি বলেন, বাংলা সাহিত্যে যে একটি গতিময় বাংলা ভাষা আছে, তৎকালীন পূর্ববঙ্গ থেকে পরবর্তীতে বাংলাদেশে যাদের হাত ধরে তা প্রবাহিত হয়েছে রাহাত খান তাদের অন্যতম। আর তরুণদের কাছে এটুকু অনুরোধ, আমাদের অবহেলার স্থানগুলো আমরা যেন আবেগের বশে নির্ণয় না করি। সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে দেখতে পাচ্ছি অনেক এলেবেলে কথাবার্তা হচ্ছে। আমি সবার কাছে হাতজোড় করে বলি, রাহাত খানের সাহিত্য বিচার তাকে পাঠের পর আপনারা করবেন। আজ তরুণদের কাছে, আপনাদের সবার কাছে এটুকুই নিবেদন। বাংলা একাডেমির পক্ষ থেকে তার স্মৃতির প্রতি শ্রদ্ধা জানাই।

রাহাত খানের সহধর্মিনী অপর্ণা খান বলেন, আপনাদের সবার কাছে রাহাত খানের জন্য আমি দোয়া প্রার্থী। আমাদের পরিবারের জন্যও আপনাদের কাছে দোয়া প্রার্থনা করি। আর এ দুঃসময়ে যারা আমাদের সঙ্গে যোগাযোগ করেছেন, পাশে এসে দাঁড়িয়েছেন তাদের সবার কাছে কৃতজ্ঞতা প্রকাশ করছি।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সভাপতি সাইফুল আলম বলেন, আমরা যেন একটা লাশের মিছিলের মধ্যে আছি। এ বছর জানুয়ারি থেকে এ পর্যন্ত আমরা জাতীয় প্রেসক্লাবের ১৬ জন সদস্যকে হারিয়েছি। এদের মধ্যে সর্বশেষ রাহাত ভাই, যিনি আমাদের অত্যন্ত প্রিয় সাংবাদিক ও অভিভাবক। শুধু সাহিত্যের ক্ষেত্রে নয়, সাংবাদিকতার ক্ষেত্রেও রাহাত খান কিংবদন্তিতুল্য। আমরা মনে করি, তার এ চলে যাওয়ার মধ্য দিয়ে একটা বিরাট শূন্যতা বাংলাদেশের কথাসাহিত্যে ও সাংবাদিকতায় সৃষ্টি হয়েছে। আমরা যারা তার উত্তরসূরি, নিশ্চয় আমরা তাকে দীর্ঘদিন মনে রাখবো।

জাতীয় প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক ফরিদা ইয়াসমিন বলেন, রাহাত খান শুধু কর্মজীবনে নয়, ব্যক্তি জীবনেও নিরহংকার ও অমায়িক মানুষ ছিলেন। তিনি সুন্দর ও নান্দনিক জীবন-যাপন করতেন। রাহাত খানের কাজ, তার কথা, সান্নিধ্যের অভাব আমরা দীর্ঘদিন অনুভব করবো। তার মৃত্যুর মধ্য দিয়ে এদেশের সাংবাদিকতা ও সাহিত্যের যে ক্ষতি হয়েছে তা অপূরণীয়। তিনি তার সৃষ্টির মধ্য দিয়েই বেঁচে থাকবেন আমাদের মধ্যে।

সকালে মরহুমের জানাজায় আরো অংশগ্রহণ করেন- প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক তথ্য উপদেষ্টা ইকবাল সোবহান চৌধুরী, বাংলাদেশ ফেডারেল সাংবাদিক ইউনিয়নের সাবেক সভাপতি মনজুরুল আহসান বুলবুল, জাতীয় প্রেসক্লাবের সাবেক সাধারণ সম্পাদক স্বপন সাহা, বিএফইউজের সাবেক ভারপ্রাপ্ত সভাপতি জাকারিয়া কাজল, ঢাকা সাংবাদিক ইউনিয়েনর সভাপতি কুদ্দুস আফরাজ, সাধারণ সাম্পাদক সাজ্জাদ আলম খান, বিএফইউজের সাবেক মহাসচিব আব্দুল জলিল ভূঁইয়াসহ মরুহুমের পরিবারের সদস্য ও সাধারণ জনগণ।

জানাজা শেষে মরহুমের মরদেহে ফুলেল শ্রদ্ধা নিবেদন করে বাংলা একাডেমি কর্তৃপক্ষ, সংস্কৃতি মন্ত্রণালয়, জাতীয় প্রেসক্লাব, প্রতিদিনের সংবাদসহ বিভিন্ন সামাজিক, সাংস্কৃতিক ও রাজনৈতিক সংগঠন। এরপর মরদেহ তার সর্বশেষ কর্মস্থল 'প্রতিদিনের সংবাদ' কার্যালয়ে শ্রদ্ধা নিবেদনের জন্য নেয়া হয়। সেখান থেকে বাদ জোহর মিরপুরের শহীদ বুদ্ধিজীবী কবরস্থানে তাকে সমাহিত করা হবে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৯আগস্ট, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

গণমাধ্যমের খবর এর সর্বশেষ খবর

গণমাধ্যমের খবর - এর সব খবর