thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ২৯ নভেম্বর ২০২৪, ১৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৭ জমাদিউল আউয়াল 1446

রোহিঙ্গাদের গুলিতে মারার নির্দেশ ছিল, স্বীকারোক্তি দুই সেনার

২০২০ সেপ্টেম্বর ০৯ ১০:০৯:৩৪
রোহিঙ্গাদের গুলিতে মারার নির্দেশ ছিল, স্বীকারোক্তি দুই সেনার

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: মিয়ানমারের রাখাইনে রোহিঙ্গাদের ওপর চালানো নৃশংসতার ভয়াবহ বর্ণনা দিয়েছেন দেশটির সামরিক বাহিনীর দুই সদস্য। হেগের আন্তর্জাতিক অপরাধ আদলতে (আইসিসি) দেওয়া স্বীকারোক্তিতে তারা বলেছেন, ‘রোহিঙ্গাদের যাকে দেখবে তাকে গুলি করার’ নির্দেশ ছিল তাদের ওপর।

আইসিসিতে রোহিঙ্গা গণহত্যা বিষয়ক অপরাধের তদন্তে স্বীকারোক্তি দেওয়া মিয়ানমারের এই দুই সেনা মিও উইন তুন (৩৩) ও জ নায়েং তুন (৩০)। ২০১৭ সালের আগস্টে রাখাইনে কীভাবে রোহিঙ্গাদের একে একে গ্রামের পর গ্রাম, গণকবর, হত্যা ও ধর্ষণ করেছে তার বর্ণনা দেয় মিয়ানমারের দুই সেনা।

রাখাইনের নিরাপত্তা চৌকিতে কথিত হামলার ধুয়ো তুলে মিয়ানমারের সেনাবাহিনী ২০১৭ সালে রোহিঙ্গাদের বিরুদ্ধে ক্লিয়ারেন্স অপারেশনের নামে বর্বর হামলা শুরু করে। নির্বিচারে হত্যা ধর্ষন বাড়িঘরে আগুন লাগানোর ঘটনায় প্রাণে বাঁচতে বাংলাদেশের দিকে ঢল নামে মিয়ানমারের সংখ্যালঘু রোহিঙ্গাদের।

ওই সময় রাখাইনে গণহত্যা হচ্ছে বলে জাতিসংঘসহ আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাগুলি অভিযোগ করে এলেও মিয়ানমারের সেনা নিয়ন্ত্রিত সরকার কোনো ভ্রুক্ষেপই করেনি। উল্টো নানা টালবাহানা করে প্রায় সব রোহিঙ্গাদের বাংলাদেশের দিকে ঠেলে দেয়।

ফরটিফাই রাইটসের বরাত দিয়ে নিউইয়র্ক টাইমস প্রতিবেদনে বলেছে, আইসিসিতে স্বীকারোক্তিকে মিও উইন তুন জানিয়েছেন, তিনি কেবল তার কর্মকর্তাদের আনুগত্য করেছেন। তাদের নির্দেশে ৩০ জন রোহিঙ্গা মুসলমানদের গণহত্যায় অংশ নিয়েছিলেন। সেসময় সেল টাওয়ার ও সামরিক ঘাঁটির কাছে একটি গণকবর দিয়েছেন।

অন্যদিকে জ নায়েং তুন বলেছেন, ‘তার দল প্রায় ২০টি গ্রাম নিশ্চিহ্ন করে দিয়েছিল। পরে শিশু ও বয়স্কদের মৃতদেহ একটি গণকবরে ফেলে তারা।’

মিয়ানমারের এই দুই সেনার স্বীকারোক্তি অনুযায়ী, কেবল তারা দুজনই কমপক্ষে ১৫০ জন রোহিঙ্গা হত্যাকাণ্ডের সঙ্গে জড়িত। এছাড়া কয়েক ডজন গ্রামও ধ্বংসের সঙ্গে জড়িত ছিল তারা। ওই সৈনিকরা ১৯ জন ব্যক্তির নাম উল্লেখ করেছে যারা সরাসরি এ ধরনের নৃশংসতা করেছে। এছাড়া ছয় জন জ্যেষ্ঠ সামরিক কর্মকর্তা এসবের নির্দেশ দিয়েছে বলে জানিয়েছে তারা।

মানবাধিকার সংস্থা ফরটিফাই রাইটসের বলছে, মিয়ানমারের দুই সেনার এই স্বীকারোক্তির ফলে ধারণা করা হচ্ছে, তারা আদালতের কাছে নিজেদের দোষ স্বীকার করে রাজসাক্ষী হিসেবে ভবিষ্যতে মামলায় কাজ করবে।

আইসিসির বিভিন্ন ধরনের সাক্ষী সুরক্ষার (উইটনেস প্রটেকশন) নিয়ম আছে এবং তার অধীনে এ ধরনের সাক্ষীদের সব ধরনের সুরক্ষা দেওয়া হয়।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/০৯সেপ্টেম্বর, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর