thereport24.com
ঢাকা, বৃহস্পতিবার, ২৮ নভেম্বর ২০২৪, ১৪ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউল আউয়াল 1446

নাগার্নো-কারাবাখ যুদ্ধে ৫ হাজারেরও বেশি প্রাণহানি

২০২০ অক্টোবর ২৩ ১৫:৪৯:৪১
নাগার্নো-কারাবাখ যুদ্ধে ৫ হাজারেরও বেশি প্রাণহানি

দ্য রিপোর্ট ডেস্ক: বিতর্কিত অঞ্চল নাগার্নো-কারাবাখ দখলকে কেন্দ্র করে আর্মেনিয়া ও আজারবাইজানের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধে পাঁচ হাজারের বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে বলে ধারণা করছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন।

যুদ্ধবিরতির আলোচনায় উভয় দেশেরই নীতিবাচক সাড়ার কারণে এমন পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে বলেও দাবি করেছেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট পুতিন। খবর ডয়চে ভেলের।

বৃহস্পতিবার রাশিয়ার রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনে এক বক্তব্যে পুতিন বলেন, ‘আমার কাছে যা তথ্য আছে তাতে মনে হচ্ছে নাগার্নো-কারাবাখে পাঁচ হাজারেরও বেশি মানুষ মারা গেছেন। যুদ্ধবিরতিতে ইতিবাচক সাড়া না দেয়ায় এমন ভয়াবহ পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে।’

তবে নাগার্নো-কারাবাখের স্বাধীন প্রশাসন বলছে, বৃহস্পতিবার পর্যন্ত শুধুমাত্র নাগর্নো-কারাবাখে ৮৭৪ জন সেনা এবং ৩৭ জন সাধারণ মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

নাগার্নো-কারাবাখ নিয়ে গত চার দশক ধরে দ্বন্দ্বে লিপ্ত রাশিয়ার মিত্র আর্মেনিয়া ও তুরস্কের মিত্র আজারবাইজান। নাগার্নো-কারাবাখ আজারবাইজানের বলেই আন্তর্জাতিকভাবে স্বীকৃত। কিন্তু এটি নিয়ন্ত্রণ করে জাতিগত আর্মেনিয়ানরা।

৮০’র দশকের শেষে এবং ৯০’ এর দশকের শুরুতে এই অঞ্চলের দখলকে কেন্দ্র করে দুই দেশের মধ্যে রক্তক্ষয়ী যুদ্ধ হয়েছিল। ১৯৯৪ সালে দুই দেশ যুদ্ধবিরতির ঘোষণা দিলেও তারা কখনোই স্থায়ীভাবে শান্তি চুক্তি করতে পারেনি।

গত ২৭ সেপ্টেম্বর থেকে ওই অঞ্চল নিয়ে ফের সংঘর্ষে জড়ায় দেশ দুটি, যা গত কয়েক দশকের মধ্যে সবচেয়ে রক্তক্ষয়ী সংঘাত। সংঘর্ষের পর থেকেই দুই পক্ষেরই শত শত মানুষ ইতোমধ্যে মারা গেছেন। এছাড়া এই যুদ্ধে নাগার্নো-কারাবাখ অঞ্চলসহ দুই দেশেরই বড় কয়েকটি শহর ধ্বংসস্তুপে পরিণত হয়েছে।

কয়েকদিন আগে রাশিয়ার মধ্যস্থতায় দুই দেশ যুদ্ধবিরতি চুক্তি করলেও তা খুব একটা দীর্ঘস্থায়ী হয়নি।

তবে এবারের যুদ্ধে ঠিক কতজন সেনা নিহত হয়েছেন এই বিষয়ে স্পষ্ট কিছু জানায়নি আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া। আজারবাইজান সরকার দেশটিতে ৬১ জন বেসমারিক নাগরিকের নিহত হওয়ার খবর নিশ্চিত করেছে। অন্যদিকে আর্মেনিয়া বলছে যুদ্ধে তাদের হাজারেরও বেশি মানুষের মৃত্যু হয়েছে।

রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট দাবি করেন, আজারবাইজান ও আর্মেনিয়া দুইটি দেশের সঙ্গেই প্রতিদিন যোগাযোগ রাখছেন তিনি। দিনে একাধিকবার ফোনে কথা বলেন দুই দেশের রাষ্ট্রপ্রধানের সঙ্গে।

পুতিন বলেন, ‘এই যুদ্ধে আমি কোনো পক্ষকেই সমর্থন করছি না। এই রক্তক্ষয়ী যুদ্ধকে দ্রুত বন্ধ করার জন্য আমি সবরকম প্রচেষ্টা চালাব। আমার একমাত্র লক্ষ্য দুই দেশের মধ্যে শান্তি প্রতিষ্ঠা করা।’

তুরস্কের সমালোচনা করে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট বলেন, ‘তুরস্ক যেভাবে আজারবাইজানকে সমর্থন করছেন, তা আমি সমর্থন করছি না। আমার বন্ধু্ এরদোগান এই বিষয়ে তার অভিমত বদল করতে পারে।’

বক্তব্যে পুতিন যুক্তরাষ্ট্রকেও রাশিয়ার সঙ্গে সমঝোতা আলোচনায় অংশ নেওয়ার আহ্বান জানিয়েছেন।

বৃহস্পতিবার প্রেসিডেন্ট পুতিন যখন এ বিষয়ে বক্তব্যে দিচ্ছিলেন তখনো দুই দেশের মধ্যে তীব্র যুদ্ধ হয়েছে। আজারবাইজান জানিয়েছে, আর্মেনিয়া তিনটি ব্যালেস্টিক মিসাইল নিক্ষেপ করেছে আজারি শহর লক্ষ্য করে। অন্যদিকে আর্মেনিয়ার অভিযোগ, মারতুনি শহর এবং সংলগ্ন গ্রামে শেলিং করেছে আজারবাইজান।

উল্লেখ্য, শুক্রবার যুক্তরাষ্ট্রের সচিব মাইক পম্পেও-র সঙ্গে আজারবাইজান এবং আর্মেনিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রীদের বৈঠক হওয়ার কথা রয়েছে। বৃহস্পতিবার তাঁদের সঙ্গে বৈঠকে বসেছিলেন রাশিয়ার পররাষ্ট্রমন্ত্রী।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৩ অক্টোবর, ২০২০)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

বিশ্ব এর সর্বশেষ খবর

বিশ্ব - এর সব খবর