thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১৭ মে 24, ৩ জ্যৈষ্ঠ ১৪৩১,  ৯ জিলকদ  1445

ঋণ নিয়ে সন্দিহান বিনিয়োগকারীরা

মূলধন ও রিজার্ভের তুলনায় লিবরার নামমাত্র উৎপাদন

২০১৩ নভেম্বর ১১ ১৭:২৮:০৭
মূলধন ও রিজার্ভের তুলনায় লিবরার নামমাত্র উৎপাদন

রেজোয়ান আহমেদ দিরিপোর্ট২৪ : উৎপাদন করলেও তার চেয়ে বেশি পরিমাণ ঋণ নিয়েছে লিবরা ইনফিউশন কর্তৃপক্ষ। কোম্পানিটিতে উৎপাদনের চেয়ে কয়েকগুণ বেশি মূলধন ও রিজার্ভ রয়েছে। প্রতিষ্ঠানটি ঋণ না নিয়ে সুদ বাবদ ব্যয় দেখিয়ে টাকা হাতিয়ে নিচ্ছে বলে অভিযোগ বিনিয়োগকারীদের। পাশাপাশি রিজার্ভে টাকা থাকলেও তাকর্তৃপক্ষ আত্মসাৎ করেছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

জানা গেছে, মূলধন ও রিজার্ভ মিলিয়ে মোট ১৯৬ কোটি টাকা দিয়ে কর্তৃপক্ষ ২০১১-১২ অর্থবছরে ২৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার টার্নওভার করেছে। এতো বিশাল অংকের টাকা দিয়ে নামমাত্র টার্নওভার করলেও কর্তৃপক্ষ একই অর্থবছরে স্বল্প ও দীর্ঘ মেয়াদি মোট ৫৭ কোটি ২৪ লাখ টাকার ঋণ নিয়েছে বিভিন্ন সংগঠনের কাছ থেকে। যার জন্য সুদবাবদ খরচ হয়েছে ২ কোটি ৯৭ লাখ ৫০ হাজার টাকা।

বিশাল অংকের অর্থ কোম্পানিতে থাকা সত্ত্বেও কোম্পানিটিপ্রকৃতপক্ষে ঋণ নিয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহের দানা বেধেছে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে। তাদের অভিযোগ কোম্পানিটিরকর্তৃপক্ষ ঋণ না নিয়েই সুদ বাবদ বড় একটা অংক নিজেদের পকেটে নিচ্ছে। আর তা না হলে রিজার্ভ হিসেবে আছে দেখালেও তা বাস্তবে নেই, কোম্পানির অসৎ কর্তৃপক্ষ তা আগেই নিজেদের পকেটে নিয়ে নিয়েছেন বলে মনে করেন তারা। কারণ ১৯৬ কোটি টাকা থাকা সত্ত্বেও মাত্র ২৪ কোটি ৮৬ লাখ টাকার টার্নওভার করতে কেন তারা এই ঋণ নেবে। তাছাড়া কোম্পানিটির এমন কোনো সাবসিডিয়ারি কোম্পানি নেই যার জন্য ঋণ প্রয়োজন।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক স্টক এক্সচেঞ্জের এক আর্থিক বিশ্লেষক বলেন, অনেক কোম্পানিই হিসাবে অনেক কিছু আছে দেখায়কিন্তু বাস্তবে দেখা যায় শূণ্য কারন আগেইতা নিয়ে নিয়েছেন। আবার অনেকে থাকলেও তার মাধ্যমেই উৎপাদন করে কিন্তু ঋণ নিয়েছে বলে ব্যয় দেখিয়ে তা নিজেদের পকেটে নিয়ে নেয়। তারা মূলত বিভিন্ন কায়দায় ব্যাক্তিগত ফায়দা হাসিল করে শেয়ারহোল্ডারদের সাথে প্রতারণা করে।

১ কোটি ৩০ লাখ টাকার ১০ টাকা অভিহিত মূল্যের লিবরা ইনফিউশন কোম্পানিতে রিজার্ভ ১৯৪ কোটি টাকা থাকলেও তারা শেয়ার প্রতি আয় (ইপিএস) করে ৪ টাকা ৫ টাকা। কিন্তু কোম্পানির মোট মূলধন ১৯৫ কোটি ৯৭ লাখ টাকা যদি তারা এফডিআর করেও রাখে তাতে আয় হবে ২৩ কোটি ৫১ লাখ ৬৪ হাজার টাকা। যাতে ইপিএস আসবে প্রায় ১৮১ টাকা। আনুষাঙ্গিক খরচ সর্বোচ্চ বাদ দিলেও আসবে ১৫০ টাকা। এমতাবস্থায় কর্তৃপক্ষ আয় করছে ৪ থেকে ৫ টাকা, যেটা কিছুতেই মানতে পারছে না বিনিয়োগকারীরা।

নং বাম/অবা-৪/১৭/১৮/অংশ/১৩৯-কোম্পানি আইন, ১৯৯৪ এর ২২০ ধারা প্রদত্ত ক্ষমতাবলে লিবরা ইনফিউশন কোম্পানির নাম উল্লেখ করে কস্ট অডিট করানো বিধান করে গেজেট আকারে প্রকাশ করলেও কর্তৃপক্ষ তা তোয়াক্কা করছে না।

শ্রমিক আইন অনুযায়ী আয়ের উপর ৫ শতাংশ হারে ফান্ড গঠন করা বাধ্যতামূলক হলেও কর্তৃপক্ষ তা করেনি। এছাড়া শ্রমিক আইন অনুযায়ী প্রতিবছর শ্রমিকদের জন্য গঠিত ফান্ডের দুই-তৃতীয়াংশ বিতরণ করার নির্দেশনা থাকলে তার তোয়াক্কা করেনি কর্তৃপক্ষ। তারা বছরের পর বছর ফান্ড বড় করেছে কিন্তু শ্রমিকদের বিতরণ করেনি।

কোম্পানিটিতে ২০১১-১২ অর্থবছর শেষে শ্রমিক কল্যাণ ফান্ডে ৩১ লাখ ৬১ হাজার টাকা রয়েছে। যেখানে বছরে ১ থেকে ৩ লাখ টাকা করে ফান্ড জমা হয়। সে হিসেবে কোনোভাবেই এই ফান্ডের পরিমান ১ বছর প্রদান না করলেও ৩ লাখ টাকার উপরে হওয়ার কথা না। কিন্তু কর্তৃপক্ষ ফান্ড গঠন করলেও কত বছর ধরে শ্রমিকদের দেয় না।

এসব বিষয়ে জানতে চাইলে কোম্পানি সচিব জাহাঙ্গীর আলম কোনো জবাব দিতে অপারগতা প্রকাশ করেন।

(দিরিপোর্ট২৪/আরএ/ডব্লিউএস/এমডি/নভেম্বর ১১, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর