thereport24.com
ঢাকা, মঙ্গলবার, ১৯ নভেম্বর ২০২৪, ৫ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ১৭ জমাদিউল আউয়াল 1446

কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী মান্না দে’র মহপ্রয়াণ দিবস আজ

২০২১ অক্টোবর ২৪ ১১:২৯:০২
কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী মান্না দে’র মহপ্রয়াণ দিবস আজ

দ্য ‍রিপোর্ট ডেস্ক: ‘যদি কাগজে লেখো নাম কাগজ ছিড়ে যাবে/পাথরে লেখো নাম পাথর ক্ষয়ে যাবে’, ‘কফি হাউজের সেই আড্ডাটা আজ আর নেই’ -এসব গান বাজলে শ্রোতারা আজো তন্ময় হয়ে যান। এসব গান বারবার আমাদের মনে করিয়ে দেন তার নাম।

আবার হবে তো দেখা, এই কূলে আমি আর ওই কূলে তুমি, তীর ভাঙা ঢেউ আর নীড় ভাঙা ঝড়, শাওন রাতে যদি, সে আমার ছোট বোন- এসব গান আজো আচ্ছন্ন করে যাচ্ছে মানুষের মন।

কিংবদন্তী সংগীত শিল্পী মান্না দে’র মহপ্রয়াণের ৯ম বার্ষিকী আজ। ২০১৩ সালের সালের ২৪ অক্টোবর জীবন খাতার পাতায় সব হিসেব-নিকেশ চুকিয়ে জীবনের জলসাঘর থেকে বিদায় নেন তিনি। তবু তিনি আছেন তার সৃষ্টির মধ্যে দিয়ে, তার সঙ্গীতের মধ্য দিয়ে।

শুধু বাংলার নয় ভারতীয় উপমহাদেশের সঙ্গীত আকাশের অন্যতম উজ্জ্বল নক্ষত্র মান্না দে’র জন্ম ১৯১৯ সালের ১ মে। বাবা-মায়ের দেওয়া নাম প্রবোধ চন্দ্র দে। কিন্তু নিজের মঞ্চ নামেই বিশ্ববাসীর কাছে পরিচিত তিনি।

ছোট থেকেই সংগীতের জগতে বেড়ে ওঠা মান্না দে’র। মা মহামায়া এবং বাবা পূর্ণা চন্দ্র দে তো ছিলেনই, তবে মান্না দে’র সংগীতের আসল অনুপ্রেরণা তার কাকা সংগীতাচার্য কৃষ্ণ চন্দ্র দে।

মাত্র ২৩ বছর বয়সে কাকার হাত ধরে বোম্বাই (বর্তমানে মুম্বাই) আসেন মান্না দে। সেই বছরই কাকার সংগীত পরিচালনায় ‘তামান্না’ ছবিতে একটি ডুয়েট গান গান। সেটাই ছিল বলিউডে তার গানের শুরু। এরপর আট দশক দীর্ঘ কেরিয়ারের ৪০০০-এর বেশি গান রেকর্ড করেছেন তিনি।

সোলো গায়ক হিসাবে তার প্রথম ব্রেক আসে ‘রাম রাজ্য’ ছবিতে। ‘গায়ি তু তো গায়ি সীতা সতী’ গানটি রেকর্ড করেন মান্না দে। ১৯৪৩ সালে মুক্তি পায় এই ছবি। জানা যায় স্বয়ং গান্ধীজি এই ছবিটি দেখেছিলেন।

শচীন দেব বর্মনের সঙ্গে মান্না দে প্রথম যুক্ত হন ১৯৫০ সালের ‘মাশাল’ ছবিতে। উপর গগন বিশাল এবং দুনিয়াকে লোগো-ছবিতে দুটো গান রেকর্ড করেছিলেন মান্না দে। এরপর থেকই শুরু সুপারহিট এই সংগীত পরিচালক ও গায়ক জুটির সফর।

মান্না দে গোটা দেশে জনপ্রিয় হয়ে উঠেন ১৯৫৩ সালে ‘দো বিঘা জমি’ মুক্তির পর। সলিল চৌধুরীর কম্পোজিশনে এই ছবিতে গান গেয়েছিলেন মান্না দে। এ বছরই সুলোচনা কুমারণকে বিয়ে করেন মান্না দে। তাদের দাম্পত্য জীবনে দুই কন্যা সুরোমা এবং সুমিতা।

লতা মুঙ্গেশকরের সঙ্গে তার প্রথম ডুয়েট ছিল ‘লপট কে পোট পাহানে বিক্রল’। আশা ভোঁসলের সঙ্গে তার গাওয়া প্রথম গান ‘ও রাত গয়ি ফির দিন আয়া’।

১৯৬৯ সালে প্রথমবার জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারের মঞ্চে সেরা গায়কের স্বীকৃতি পান। ‘মেরে হুজুর’ ছবির জন্য আসে এই সম্মান। ভারতীয় সংগীত জগতে অসামান্য অবদানের জন্য বহু সম্মান পেয়েছেন মান্না দে। ভারত সরকারের তরফে পদ্মশ্রী, পদ্মভূষণ এবং দাদা সাহেব ফালকে সম্মানে ভূষিত করা হয়েছে তাকে।

১৯৯২ সালে হিন্দি ফিল্ম ইন্ডাস্ট্রিকে বিদায় জানান, তবে বাংলা ছবি এবং একক সঙ্গীতের কাজ জারি রেখেছিলেন এই প্রবাদপ্রতিম শিল্পী।

প্রায় আট দশক ব্যাপ্ত সংগীত জীবনে হিন্দি এবং বাংলার পাশাপাশি মৈথিলি, পাঞ্জাবি, গুজরাটি, মারাঠি, কন্নড়, মালায়ালম ভাষাতে গান রেকর্ড করেছেন মান্না দে।

মান্না দে’র আত্মজীবনীর নাম জীবনের জলসাঘরে। ২০০৫ সালে প্রকাশিত হয় এই বই। তাকে নিয়ে তৈরি হয়েছে একটি ডকুমেন্ট্রি ফিল্মও। সেই ছবির শ্যুটিং কলকাতার কফি হাউজেও হয়েছিল। ২০০৮ সালে মুক্তি পায় এই তথ্যচিত্র।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৪ অক্টোবর, ২০২১)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

জলসা ঘর এর সর্বশেষ খবর

জলসা ঘর - এর সব খবর