thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ২৮ ডিসেম্বর ২০২৪, ১৪ পৌষ ১৪৩১,  ২৬ জমাদিউস সানি 1446

খাদ্য নিরাপত্তায় পরিকল্পনা কমিশনের পরামর্শ

২০১৩ নভেম্বর ১১ ২১:০৮:২৩
খাদ্য নিরাপত্তায় পরিকল্পনা কমিশনের পরামর্শ

দিরিপোর্ট২৪ প্রতিবেদক : দেশের খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে কিছু পরামর্শ দিয়েছে পরিকল্পনা কমিশনের সাধারণ অর্থনীতি বিভাগ(জিইডি)। সম্প্রতি প্রকাশিত জিইডির এক মূল্যায়ণ প্রতিবেদনে বিষয়গুলো উঠে এসেছে।

সরকারের আর্থিক থিঙ্কট্যাংক হিসেবে খ্যাত সংস্থাটি মনে করে, খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করতে জাতীয় খাদ্যনীতি ও এর কর্মপরিকল্পনা এবং দেশীয় বিনিয়োগ পরিকল্পনা (২০১০-১৫)এর সহায়তা নিয়ে ত্রিমাত্রিক বিষয় যেমন সহজলভ্যতা, প্রবেশাধিকার ও উপযুক্ত ব্যবহারের উপর জোর দেয়া উচিত।

জিইডির সদস্য ড. শামসুর আলম দিরিপোর্ট২৪কে বলেন,`বিশ্বব্যাপী খাদ্যের সাম্প্রতিক মূল্যস্ফীতি বাংলাদেশের মতো বৃহৎ গরিব দেশগুলোর জন্য খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিতকরণের উপর বিশেষ গুরুত্ব দিতে বাধ্য করেছে। এদেশের চাল উৎপাদনের অভিজ্ঞতার আলোকে বলা যায় যে, বাংলাদেশ অভ্যন্তরীণ খাদ্য উৎপাদনের মাধ্যমে খাদ্য নিরাপত্তা নিশ্চিত করার সামর্থ্য রাখে। কৃষকদের প্রনোদনা দেয়াসহ উৎপাদনশীলতা বাড়ানোর উপর গুরুত্বারোপ খাদ্যনিরাপত্তা অর্জনের জন্য বিশেষ সহায়ক। খাদ্য উৎপাদনের ক্ষেত্রে কৃষি খাতে জলবায়ূ পরিবর্তন অভিযোজন কৌশল কাজে লাগানোর ব্যাপারে অগ্রাধিকার দিতে হবে।’

কৃষি খাত উন্নয়নে সাধারণ অর্থনীতি বিভাগের পরামর্শগুলো হচ্ছে, প্রথমত: ফলনবৃদ্ধির ক্ষেত্রে শস্যজাতের উন্নয়ন, মানসম্মত বীজ, মাটির স্বাস্থ্য, বালাই ব্যবস্থাপনা ও কৃষিতান্ত্রিক প্রয়োগনীতি, স্থানীয় সেবা প্রদান ব্যবস্থার উন্নয়ন, মূল্যশৃঙ্খলা শক্তিশালীকরণ, বাজারব্যবস্থার উন্নয়ন, কৃষি গবেষণা ও যান্ত্রিকীকরণের উন্নয়ন, বিজ্ঞানী ও সম্প্রসারণ কর্মীদের দক্ষতা বৃদ্ধির জন্য পারিতোষিক এবং বন্যা নিয়ন্ত্রণ ও পানি সংরক্ষণাগার নির্মাণ, সেচ ও পানি ব্যবস্থাপনা উন্নত করা।

দ্বিতীয়ত, কৃষি গবেষণা ও প্রযুক্তি উদ্ভাবনের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, কৃষি গবেষণা সরকারী ব্যবস্থাপনায় পরিচালিত হবে, তবে এনজিও এবং প্রাইভেট সেক্টরকে সম্পৃক্ত করে কর্মসূচী উন্নয়নের প্রচেষ্টা নেয়া যায়। একবিংশ শতকের কৃষির বৈজ্ঞানিক উন্নয়নকল্পে জাতীয় কৃষি গবেষণা সিস্টেমের দশটি প্রতিষ্ঠানের সামর্থ্য আরো বৃদ্ধি করতে হবে। গবেষকদের প্রনোদনা প্রদানসহ গভীর বন্যাযুক্ত এলাকা, চর, বণ্যাপ্রবণ এলাকা, উপকূলীয় জোয়ার ও লবনাক্ততাপ্রবণ এলাকা, পাহাড়ি এলাকার চাষীদের জন্য শস্যজাত উদ্ভাবনকল্পে জাতীয় প্রযুক্তি ইনস্টিটিউটে গবেষণা পরিচালনার ব্যবস্থা নিতে হবে।

তৃতীয়ত, প্রযুক্তি বিতরণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, চাষী, ভূমিহীন চাষি ও বিভিন্ন পেশাজীবী গোষ্ঠী ও নারীসহ ব্যাপক গ্রামীণ জনগোষ্ঠীকে সম্পৃক্ত করে অংশগ্রহণমূলক সম্প্রসারণ সেবার উপর জোর দিতে হবে। প্রাইভেট সেক্টর, এনজিও, কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর, পশুসম্পদ অধিদপ্তর, মস্য অধিদপ্তর ও বাংলাদেশ পল্লী উন্নয়ন বোর্ডের সমবায়সমূহের অংশীদারিত্ব গড়ে তুলতে হবে।

চতুর্থত: জলবায়ু পরিবর্তন উপযোজন প্রযুক্তির ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, লবনাক্ততা সহিষ্ণু, খরা সহিষ্ণু, স্বল্প মেয়াদি ও শীত সহিষ্ণু চালের জাত উন্নয়ন করতে হবে। ভবিষ্যতে জলবায়ু পরিবর্তনের সঙ্গে উপযোজনকল্পে পরিবেশ বান্ধব প্রযুক্তি উন্নয়নের উপর জোর দিতে হবে। আম ও আউশ চাষে প্রযুক্তিকে আরো সহজলভ্য করতে হবে।

পঞ্চমত: সেচ ও বন্যা নিয়ন্ত্রণের ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, সরকারী পর্যায়ে টিউবওয়েল সুবিধা ও ভূ-উপরিস্থ পানি সেচ কাজে ব্যবহার, গঙ্গা ব্যারেজসহ ক্যাপিটাল ড্রেজিং এর মাধ্যমে নদীতে পুন:প্রবাহ সৃস্টি করতে হবে। পানির প্রবাহ ও নাব্যতা রক্ষার জন্য প্রচলিত ড্রেজিং অব্যাহত রাখতে হবে। খরা মৌসুমে ভূ-উপরিস্থ পানি সরবরাহের জন্য শহর ও গ্রামাঞ্চলে জলাশয় সংরক্ষণের ব্যবস্থা নিতে হবে।

ষষ্ঠত: ভূমি ব্যবস্থাপনার ক্ষেত্রে বলা হয়েছে, ভুমি নিয়ে চাষীদেও দুর্ভোগ লাঘবের জন্য ভূমির ডিজিটাল জরিপ ও ই-ভূমিশাসন চালু করতে হবে। ভূমি রেকর্ড কম্পিউটারাইজড ও নামজারি স্বয়ংক্রিয় করা প্রয়োজন । ভূমি সংক্রান্ত বিরোধ দূর করা, ভূমি সংক্রান্ত বিষয় সংশোধন ও সহজীকরণ, ভূমি জোনিং মানচিত্র অনুসারে পরিকল্পিত ভূমির ব্যবহার নিশ্চিত করতে হবে।

(দিরিপোর্ট২৪/জেজে/এইচএস/এমডি/নভেম্বর ১১, ২০১৩)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জেলার খবর এর সর্বশেষ খবর

জেলার খবর - এর সব খবর