আইপিওর টাকা অন্য খাতে ব্যবহারের সুযোগ পেলো এনার্জিপ্যাক

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: প্রাথমিক গণ প্রস্তাবের ( আইপিও) মাধ্যমে সংগৃহিত অর্থ দিয়ে অতিরিক্ত দেশগুলো (জাপান/চীন/ভারত) থেকে উৎপাদনের উপকরণ সংগ্রহ করতে পারবে পুঁজিবাজারে তালিকাভুক্ত কোম্পানি এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন। সেইসঙ্গে এলপিজি শিল্পে কোম্পানির বাজার মূলধন বাড়ানোর জন্য রোড ট্যাঙ্কারের পরিবর্তে স্ট্যান্ডার্ড ভালভসহ সহজলভ্য খালি এলপিজি স্টিল সিলিন্ডার , রোড ট্যাঙ্কারের জন্য প্রাইম মুভার এবং ববটেল ট্যাঙ্কার আমদানি করতে পারবে। এছাড়া ব্যবসার উদ্দেশ্যে আইপিও অ্যাকাউন্ট থেকে কোম্পানির নিয়মিত অ্যাকাউন্টে আইপিওর অবশিষ্ট অর্থ স্থানান্তর করতে পারবে।

আইপিওর অর্থ ব্যবহারের সংশোধনী প্রস্তাব অনুমোদন দেওয়ায় এ সুযোগ পেয়েছে কোম্পানিটি। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বাংলাদেশ সিকিউরিটিজ অ্যান্ড এক্সচেঞ্জ কমিশন( বিএসইসি) সম্প্রতি এ বিষয়ে একটি চিঠি কোম্পানিটির ব্যবস্থাপনা পরিচালক বরাবর পাঠিয়েছে। বিষয়টি ডিএসই ও সিএসই স্টক এক্সচেঞ্জের প্রধান নিয়ন্ত্রক কর্মকর্তাকে (সিআরও) জানানো হয়েছে।

জানাগেছে , অর্থ সংগ্রহের মাধ্যমে শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্তির পর ২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি থেকে শেয়ারবাজারে লেনদেন শুরু করে এনার্জিপ্যাক। কোম্পানিটি সাধারণ বিনিয়োগকারীদের নিকট ২ কোটি ১ লাখ ৪৬ হাজার ৮০০টি সাধারণ শেয়ার ৩১ টাকা মূল্যে (প্রান্ত সীমা থেকে ১০ শতাংশ বাট্টায়) ইস্যু করে। এর মাধ্যমে কোম্পানিটি ৬২ কোটি ৪৫ লাখ ৫০ হাজার ৮০০ টাকা সংগ্রহ করে। সংগ্রহীত অর্থ দিয়ে কোম্পানিটি ব্যবসা সম্প্রসারণ, ব্যাংক ঋণ পরিশোধ এবং আইপিও খরচ খাতে ব্যয় করবে বলে জানায়।

কিন্তু তালিকাভুক্তি পর আইপিও অর্থ ব্যবহারের সংশোধনী এনে গত ১৫ ডিসেম্বর বিএসইসি কাছে আবেদন জানিয়েছে এনার্জিপ্যাক। কোম্পানিটি আইপিওর অর্থ দিয়ে অতিরিক্ত দেশগুলো (জাপান/চীন/ভারত) থেকে উৎপাদনের উপকরণ সংগ্রহ করার অনুমতি প্রার্থনা করে। এছাড়া এলপিজি শিল্পে কোম্পানির বাজার মূলধন বাড়ানোর জন্য রোড ট্যাঙ্কারের পরিবর্তে স্ট্যান্ডার্ড ভালভসহ সহজলভ্য খালি এলপিজি স্টিল সিলিন্ডার , রোড ট্যাঙ্কারের জন্য প্রাইম মুভার এবং ববটেল ট্যাঙ্কার আমদানি করার সুযোগ চায়। এছাড়া ব্যবসার উদ্দেশ্যে আইপিও অ্যাকাউন্ট থেকে কোম্পানির নিয়মিত অ্যাকাউন্টে আইপিওর অবশিষ্ট অর্থ স্থানান্তর করার সুযোগ দাবি করে।

ওই আবেদনের পরিপ্রেক্ষিতে কোম্পানিটির আইপিওর অর্থ ব্যবহারে সংশোধনীর অনুমোদন দিয়েছে নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

এ বিষয়ে জানতে চাইলে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশনের কোম্পানি সচিব মো. আলাউদ্দিন শিবলী বলেন, আইপিওর অর্থ ব্যবহারের সংশোধনীর বিষয়ে বার্ষিক সাধারণ সভায় (এজিএম) শেয়ারহোল্ডারদের অনুমোদনের পর বিএসইসির কাছে আবেদন জানানো হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কমিশন বিষয়টির অনুমোদন দিয়েছে।

তিনি আরো বলেন, এর আগে শুধু চীন থেকে উপকরণ আমদানি করার বিষয়টি আইপিওর অর্থ ব্যাবহারের শর্তে উল্লেখ ছিল। পরবর্তীতে কভিড পরিস্থিতির কারণে সেটা বাড়িয়ে জাপান ও ভারতের জন্য আবেদন করা হয়। তাই এখন থেকে বাকি দুটি দেশ থেকেও উপকরণ আমদানি করা যাবে। এছাড়া সংশোধনীর বাকি দুটি বিষয়েও তিনি নিশ্চিত করেন।

উল্লেখ্য, চলতি ২০২১-২২ হিসাব বছরের দ্বিতীয় প্রান্তিকে (অক্টোবর-ডিসেম্বর, ২০২১) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ০.৫৩ টাকা। গত হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ০.৪৮ টাকা।

হিসাব বছরের প্রথম দুই প্রান্তিক মিলিয়ে তথা ছয় মাসে (জুলাই-ডিসেম্বর, ২০২১) কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি মুনাফা (ইপিএস) হয়েছে ১.০২ টাকা। গত হিসাব বছরের একই সময়ে কোম্পানিটির ইপিএস ছিল ০. ৯২ টাকা।

গত ৩১ ডিসেম্বর, ২০২১ তারিখে কোম্পানিটির সমন্বিত শেয়ারপ্রতি নিট সম্পদ মূল্য ছিল ৫৮.৬২ টাকা (সম্পদ পুর্নমূল্যায়নের পর)।

২০২১ সালের ১৯ জানুয়ারি শেয়ারবাজারে তালিকাভুক্ত হয়ে লেনদেন শুরু করে এনার্জিপ্যাক পাওয়ার জেনারেশন। কোম্পানিটি বর্তমানে শেয়ারবাজারের ‘এন’ ক্যাটাগরিতে লেনদেন করছে। কোম্পানিটির পরিশোধিত মূলধন ১৯০ কোটি ১৬ লাখ ৩০ হাজার টাকা। সেই হিসাবে কোম্পানিটির মোট শেয়ার সংখ্যা ১ কোটি ৬৩ লাখ ২১৬টি। এর মধ্যে সর্বশেষ হিসাব অনুযায়ী উদ্যোক্তা পরিচালকদের হাতে ৫৪.১৩ শতাংশ, প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারীদের হাতে ১৬.৩৮ শতাংশ ও সাধারণ বিনিয়োগকারীদের হাতে ২৯.৪৯ শতাংশ শেয়ার রয়েছে। সর্বশেষবৃহস্পতিবার (১৭ ফেব্রুয়ারি) এনার্জিপ্যাকের শেয়ার ৪১.৬০ টাকায় লেনদেন হয়।

( দ্য রিপোর্ট/ টিআইএম/১৭ ফেব্রুয়ারি,২০২২)