গুলিতে আ.লীগ নেতা নিহত : ঘটনার বর্ণনা দিলেন গাড়িচালক মুন্না

রাজধানীর শাজাহানপুরে দুর্বৃত্তের গুলিতে আওয়ামী লীগ নেতাসহ দুইজন নিহত হয়েছেন। এ ঘটনায় আরও দুজন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। বৃহস্পতিবার (২৪ মার্চ) রাত সাড়ে ১০টার দিকে এ ঘটনা ঘটে।

নিহতরা হলেন- মতিঝিল থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক জাহিদুল ইসলাম ওরফে টিপু (৫৮)। অন্যজন সড়কে যানজটে আটকা পড়ে রিকশায় বসে থাকা কলেজছাত্রী সামিয়া আফরিন ওরফে প্রীতি (২৪)। এ ঘটনায় গুলিবিদ্ধ টিপুর গাড়িচালক মুন্না বর্তমানে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে (ঢামেকে)চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

আহত মুন্না ঘটনার বর্ণনা দিয়ে গণমাধ্যমকে বলেন, ‘আমরা গাড়িতে করে খিলগাঁওয়ের বাগিচার বাসায় ফিরছিলাম। শাহজাহানপুর বাগিচা মসজিদের দিকে যেতে ট্রেনের সিগন্যালে গাড়ি থামাই। হঠাৎ বাঁ পাশ থেকে হেলমেট ও মাস্ক পরা অবস্থায় গুলি চালায় দুর্বৃত্তরা। প্রথম গুলিটি লাগে ভাইয়ের (জাহিদুলের) বাঁ হাতে। আমার ডান হাতে ও পিঠে গুলি লেগেছে। তখন আমি সিট ভেঙে দিয়ে শুয়ে মারা যাওয়ার ভান করি। তারা আমাকে মৃত ভেবে চলে যায়। পরে আমি গুলিবিদ্ধ অবস্থায় গাড়ি চালিয়ে ভাইকে নিয়ে ঢাকা মেডিকেলে আসি।

তিনি বলেন, কী কারণে, কে বা কারা এ ঘটনা ঘটিয়েছে সে বিষয়ে কিছু বলতে পারছি না। আমি কাউকে চিনতেও পারিনি।

জাহিদুল ইসলাম টিপুর বাসা রাজধানীর খিলগাঁওয়ের বাগিচা এলাকায়। তিনি ঢাকা দক্ষিণ সিটি করপোরেশনের ১১, ১২ ও ১৩ নম্বর ওয়ার্ডের আওয়ামী লীগ সমর্থিত সংরক্ষিত নারী কাউন্সিলর ডলির স্বামী। এছাড়া তিনি শাহজাহানপুর থানা আওয়ামী লীগের সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও মতিঝিল আইডিয়াল স্কুল অ্যান্ড কলেজের মাধ্যমিক শাখার গভর্নিং বডির সদস্য ছিলেন।

গুলিতে নিহত টিপু ছিলেন যুবলীগ নেতা রিয়াজুল হক খান মিল্কি হত্যা মামলার অভিযোগপত্রভুক্ত আসামি। ২০১৩ সালের ২৯ জুলাই গুলশানের শপার্স ওয়ার্ল্ড নামের একটি শপিংমলের সামনে যুবলীগ নেতা মিল্কীকে গুলি করে হত্যা করা হয়।এ মামলায় গ্রেপ্তার হয়ে অনেক দিন কারাগারে ছিলেন টিপু। পরে তিনি জামিনে মুক্ত হন।

পুলিশ জানায়, তদন্তের স্বার্থে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করে যেসব নমুনা সংগ্রহ করা দরকার সিআইডি ক্রাইম সিন তা সংগ্রহ করেছে। এ হত্যাকাণ্ডের রহস্য উদ্ঘাটনে এরই মধ্যে তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।

উল্লেখ্য, বৃহস্পতিবার রাত ৯টা ৫০ মিনিটের দিকে শাহজাহানপুর এলাকায় টিপুর মাইক্রোবাস লক্ষ্য করে গুলি ছুড়ে হেলমেট পরা দুবৃত্তরা। এতে টিপু ও তার গাড়িচালক মুন্না গুলিবিদ্ধ হন। এ সময় রিকশায় বসে থাকা সামিয়া আফরিন ওরফে প্রীতি নামে এক কলেজছাত্রীও গুলিবিদ্ধ হন।

গুলিবিদ্ধ অবস্থায় তিনজনকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ (ঢামেক) হাসপাতালে নিয়ে গেলে কর্তব্যরত চিকিৎসক রাতে দুজনকে মৃত বলে ঘোষণা করেন। নিহত প্রীতি বদরুন্নেসা কলেজের শিক্ষার্থী ছিলেন বলে জানা গেছে। গুলিবিদ্ধ গাড়িচালক মুন্না বর্তমানে ঢামেকে চিকিৎসাধীন অবস্থায় রয়েছে।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/২৫ মার্চ, ২০২২)