thereport24.com
ঢাকা, শুক্রবার, ১০ মে 24, ২৭ বৈশাখ ১৪৩১,  ২ জিলকদ  1445

এক দিন পরেই পতন, ফের তলানিতে লেনদেন

২০২২ এপ্রিল ১১ ১৬:৫৩:৫৫
এক দিন পরেই পতন, ফের তলানিতে লেনদেন

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: রোজার দ্বিতীয় কর্মদিবস থেকে চার দিন পতনের পর চলতি সপ্তাহের প্রথম দিন ঘুরে দাঁড়ালেও পরের দিনই আবার দরপতনের ধারায় পুঁজিবাজার।

সোমবারের এই পতন বিনিয়োগকারীদের মনের হতাশা আরও বাড়িয়ে দিয়েছে। এদিন ২৩ পয়েন্ট সূচক কমেছে ২৩৪টি শেয়ারের দরপতনের কারণে। আগের দিন ২১৭টি কোম্পানির দর বেড়েছিল।

লেনদেনও নেমে এসেছে ৬০০ কোটি টাকার নিচে। আগের দিন লেনদেন ছিল ৬৪৩ কোটি টাকার বেশি। সেটি নেমেছে ৫৫৭ কোটি টাকায়।

আবারও দরপতনের সর্বোচ্চ সীমা ২ শতাংশ নামার পর বিপুলসংখ্যক শেয়ারের ক্রেতা ছিল না। এই পরিমাণ দর কমেছে শতাধিক কোম্পানির।

প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগ বাড়ানোর অঙ্গীকার ফলপ্রসূ হয়নি, উল্টো ব্যক্তিশ্রেণির বিনিয়োগকারীরাও হাত গুটিয়ে বসে।

লেনদেনের প্রথম কয়েক মিনিটের মধ্যেই সূচক আগের দিনের চেয়ে প্রায় ১৫ পয়েন্ট বেড়ে যায়। তবে তা বেশিক্ষণ স্থায়ী হয়নি। একের পর এক কোম্পানিগুলো দর হারাতে থাকে। সকাল ১০টা ৩১ মিনিটে ২০ পয়েন্ট কমে যায়। আবার কোম্পানিগুলো দর ফিরে পেতে থাকলে বেলা ১১টা পর্যন্ত সূচক বাড়ে। এর পর থেকে টানা কমে।

রোজায় মার্চেন্ট ব্যাংক ও স্টক ডিলাররা বড় বিনিয়োগ করবে- এমন একটি ঘোষণা আসে এই মাস শুরুর আগে আগে। আবার মার্চেই ঘোষণা আসে, বাজারে বিনিয়োগ বাড়াবে ব্যাংক, সম্পদ ব্যবস্থাপনা কোম্পানি। এমনকি তালিকাভুক্ত নয়, এমন বিমা কোম্পানিকেও বিনিয়োগ বাড়ানোর নির্দেশ দেয় নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসি।

কিন্তু এসব ঘোষণা ও নির্দেশের বাস্তবায়ন নেই। বিপুলসংখ্যক শেয়ারের ক্রেতা পাওয়া যাচ্ছে না।

এক দিন পরেই পতন, ফের তলানিতে লেনদেন
পুঁজিবাজারে একদিন পর আবার দরপতনে বিনিয়োগকারীদের মধ্যে হতাশা বেড়েছে

ইবিএল সিকিউরিটিজের চিফ অপারেটিং অফিসার শাহরিয়ার ফয়েজ বলেন, ‘প্রাতিষ্ঠানিক বিনিয়োগকারী হিসেবে যদি বলি, আমি আমার বিনিয়োগ ওঠাইনি। তবে ফান্ডের সীমাবদ্ধতা আছে। বিনিয়োগ আরও বেশি বাড়াতে হলে ক্যাশ ফ্লো থাকতে হবে। এই টাকাটা তো ব্যাংক থেকেই আসবে। কিন্তু বাজারের ঝুঁকির কারণে ব্যাংক থেকে সেটা পাওয়া সম্ভব হয় না।’

তাহলে কি ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরা বিনিয়োগ তুলে নিচ্ছেন- জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘শুধু ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীরই নয়, অনেক কোম্পানি অ্যাকাউন্ট, যারা দীর্ঘ সময় বাজার ঊর্ধ্বমুখী থাকার কারণে লাভ করতে পেরেছিল তারাও সেটা গেইন করছে। অনেক কোম্পানির করোনার কারণে ব্যবসা বন্ধ ছিল। তারা ওই সময়ে ক্যাপিটাল মার্কেটে বিনিয়োগ করে। এখন তার ব্যবসা চালু হয়েছে, তাহলে সে তো আর বাজারে টাকা রাখবে না।’

ব্যাংক ও এনবিএফআইয়ের বিনিয়োগের ক্ষতির জন্য সঞ্চিতি সংরক্ষণ, এক্সপোজার লিমিট ও অন্যান্য শর্তের কারণে চাইলেও বিনিয়োগ বাড়ানো যাচ্ছে না বলেও জানান তিনি।

দরবৃদ্ধির শীর্ষ ১০

সবচেয়ে বেশি ৯.৭৯ শতাংশ দর বেড়েছে নতুন তালিকাভুক্ত জেএমআই হসপিটালের। আগের দিনে বেড়েছিল ৯.৯১ শতাংশ। বুক বিল্ডিং প্রক্রিয়ায় ২০ টাকায় তালিকাভুক্ত কোম্পানিটির দর আট কর্মদিবসে দাঁড়িয়েছে ৪২ টাকা ৬০ পয়সা।

এরপরেই প্রাইম ইন্স্যুরেন্সের দর বেড়েছে ৫.১১ শতাংশ। তৃতীয় প্রান্তিকে (জুলাই-সেপ্টেম্বর’২০২১) আগের বছরের তুলনায় শেয়ার প্রতি আয় কমলেও ধারাবাহিকভাবে দর বাড়ছে শেয়ারের।

জানুয়ারির শুরুতেই দর বৃদ্ধির কারণ জানতে চাইলে ডিএসইকে কোম্পানি জানায়, কোনো মূল্য সংবেদনশীল তথ্য ছাড়াই দর বাড়ছে।

তৃতীয় সর্বোচ্চ দর বেড়েছে ওইম্যাক্স ইলেক্ট্রোডের। ৫.১০ শতাংশ দর বেড়ে প্রতিটি শেয়ার হাতবদল হয়েছে ২০ টাকা ৬০ পয়সায়।

এছাড়া নর্দার্ন ইসলামী ইন্স্যুরেন্সের ৪.৭৪ শতাংশ, আইপিডিসির ৪.১৩ শতাংশ, সোনালী পেপারের ৪.১১ শতাংশ, বিডি থাই ফুডের ৩.৬২ শতাংশ, আইসিবি অগ্রণী ব্যাংক মিউচ্যুয়াল ফান্ডের ৩.২৯ শতাংশ, নাহি অ্যালুমিনিয়ামের ৩.০১ শতাংশ এবং রূপালী ব্যাংক ভ্যানগারর্ড মিউচ্যুয়াল ফান্ডের দর বেড়েছে ২.৭৭ শতাংশ।

লেনদেনের শীর্ষ পাঁচে যেসব খাত

৮৯ কোটি ৬০ লাখ টাকা লেনদেনের মধ্য দিয়ে শীর্ষ স্থান দখল করেছে আর্থিক প্রতিষ্ঠান। তবে দর বৃদ্ধির চেয়ে কমেছে এমন কোম্পানির সংখ্যাই বেশি। ১০টির প্রতিষ্ঠানের দর পতনের বিপরীতে বেড়েছে ৬টির ও অপরিবর্তিত ছিল ৬টির।

আগের দুই দিন শীর্ষে থাকা প্রকৌশল খাতে লেনদেন হয়েছে ৬৪ কোটি ৩০ লাখ টাকার। গতকাল ৪০ লাখ টাকা বেশি লেনদেন হয়েছিল। গতকাল দর বেড়েছিল ২৫টি কোম্পানির, আজকে বেড়েছে মাত্র ৯টির। কমেছে ৩০টির। অপরিবর্তিত রয়েছে ৩টির দর।

আগের দিন বস্ত্র খাতে ৩৬টি কোম্পানির দর বাড়লেও আজ ৪৫টির দর কমেছে। লেনদেন কমল টানা তিন দিন। ৪৫ কোটি ৯২ লাখ টাকা হাতবদল হওয়ার দিনে দর বেড়েছে মাত্র ৯টির। অপরিবর্তিত ছিল ৫টির।

আগের দিন দ্বিতীয় অবস্থানে থাকা ওষুধ রসায়ন খাতে নেমে গেছে চতুর্থ স্থানে। সেদিন ২২টি কোম্পানির দর বেড়েছিল, আজ কমেছে ১৯টির। বিপরীতে বেড়েছে মাত্র ৮টির। আগের দিন ৫৪ কোটি ১০ লাখ টাকা লেনদেন হলেও আজ সেটি দাঁড়িয়েছে ৪৪ কোটি ৯০ লাখ টাকায়।

পঞ্চম অবস্থানে থাকা বিবিধ খাতের লেনদেন হয়েছে ৩৮ কোটি ১০ লাখ টাকা। ৯টির কোম্পানির মূল্য হ্রাসের বিপরীতে বেড়েছে তিনটির এবং আগের দরেই লেনদেন হয়েছে ২টির।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/১১ এপ্রিল, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

SMS Alert

শেয়ারবাজার এর সর্বশেষ খবর

শেয়ারবাজার - এর সব খবর