thereport24.com
ঢাকা, শনিবার, ৩০ নভেম্বর ২০২৪, ১৬ অগ্রহায়ণ ১৪৩১,  ২৮ জমাদিউল আউয়াল 1446

সমালোচনা করার আগে সারাদেশ ঘুরে আসুন : প্রধানমন্ত্রী

২০২২ মে ১৬ ১৯:৩৫:১০
সমালোচনা করার আগে সারাদেশ ঘুরে আসুন : প্রধানমন্ত্রী

দ্য রিপোর্ট প্রতিবেদক: সরকারের উন্নয়নের সমালোচনাকারীদের সারাদেশ ঘুরে কথা বলার অনুরোধ জানিয়ে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, অনেকে কথা বলার পর বলবেন, আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না।

সোমবার রাজধানীর বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে ‘এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যালোচনা বিষয়ক দ্বিতীয় জাতীয় সম্মেলন, ২০২২’ অনুষ্ঠানে তিনি এ সব কথা বলেন।

প্রধানমন্ত্রীর সরকারি বাসভবন গণভবন থেকে ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে যুক্ত হন তিনি।

শেখ হাসিনা বলেন, সরকার ‘ঘরে ঘরে’ বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছে, দেশের উন্নয়নে বিভিন্ন ‘মেগা প্রকল্প’ বাস্তবায়ন করে যাচ্ছে, এর সুফল দেশের মানুষই পাবে।

সরকারপ্রধান বলেন, অনেকেই হয়ত এখন সমালোচনা করেন। এটা করা হচ্ছে কেন… বা এত টাকা খরচ হয়েছে…। অনেকে শুধু খরচের দিকটা দেখেন, কিন্তু এই খরচের মধ্য দিয়ে দেশের জনগণ যে কত লাভবান হবে, আমাদের অর্থনীতিতে কতটা অবদান রাখবে, আমাদের উন্নয়ন গতিশীল হবে, মানুষের জীবন পরিবর্তনশীল হবে, সেটা বোধহয় তারা বিবেচনা করেন না। এটা হচ্ছে খুব দুঃখজনক।

সমালোচকদের উদ্দেশে সরকারপ্রধান বলেন, আমার অনুরোধ থাকবে, সারা বাংলাদেশটা আপনারা একটু ঘুরে দেখবেন। পরিবর্তনটা কোথায় এসেছে, কতটুকু এসেছে… সেটা বোধহয় সকলে গ্রাম পর্যায়ে একটু যোগাযোগ করলে জানতে পারবেন। শুধু রাজধানীতে বসে...।

নদীমাতৃক বাংলাদেশে যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়নে জোর দিয়ে প্রধানমন্ত্রী বলেন, যোগাযোগ যত দ্রুত বৃদ্ধি পাবে, মানুষের পণ্যের পরিবহন বৃদ্ধি পাবে, মানুষের যাতায়াত বৃদ্ধি পাবে, অর্থনীতি সচল হবে, একবারে তৃণমূল পর্যায়ে যে উৎপাদিত পণ্য তা বাজারজাত করা সহজ হবে। সেটা আমাদের অর্থনীতিকে আরো গতিশীল করবে, দারিদ্র্য বিমোচনে এবং অর্থনৈতিক উন্নয়নে আমাদের তৃণমূলের মানুষ সব থেকে বেশি লাভবান হবে।

বাংলাদেশে ‘সবাই নিজের মত প্রকাশ করতে পারে’ মন্তব্য করে শেখ হাসিনা বলেন, আগে বাংলাদেশে একটিমাত্র টেলিভিশন স্টেশন ছিল, ১৯৯৬ সালে তার সরকারের সময়ই বেসরকারি খাতে টেলিভিশন, রেডিও ‘উন্মুক্ত করে’ দেওয়া হয়।

তিনি বলেন, এখন সবাই কথা বলতে পারেন, টক শো করতে পারেন। অবশ্য এটা আমি জানি, অনেক কথা বলার পরে বলবেন, আমাদের কথা বলতে দেওয়া হয় না। কিন্তু যখন টক শোতে কথা বলেন, কেউ তো আপনাদের মুখ চেপেও ধরেনি, বা গলা টিপেও ধরেনি। সবাই যার যার ইচ্ছে মত বলতে পারেন। সবাইকে আমি বলব- আগে বাংলাদেশটা একটু ঘুরে আসেন। গ্রাম পর্যায়ে যান, সেখানে মানুষ কী অবস্থায় আছে একটু দেখে এসে তারপর কথা বললে আপনারা হয়ত জানতে পারবেন।

শেখ হাসিনার ভাষায়, খেটে খাওয়া মানুষের ‘ভাগ্য পরিবর্তন করাই’ আওয়ামী লীগ সরকারের লক্ষ্য।

তিনি বলেন, আর সেজন্য এসডিজিতে যে বিষয়গুলো রয়েছে, যেগুলো আমাদের জন্য প্রযোজ্য, আমরা তা বাস্তবায়ন করে যাচ্ছি এবং বাস্তবায়ন করে যাব। এই সমস্ত প্রকল্পগুলো যখন সম্পন্ন হবে, বা মানুষ এর শুভ ফল যখন ভোগ করবে, তখন এদেশের অর্থনীতির চাকা আরো উন্নত হবে, সচল হবে, দারিদ্র্য বিমোচন হবে। আমরা দেশের মানুষের সার্বিক উন্নতি করতে পারব।

এসডিজি বাস্তবায়ন পর্যালোচনায় এই জাতীয় সম্মেলনের আয়োজন করায় সংশ্লিষ্টদের সাধুবাদ জানিয়ে সরকারি-বেসরকারি খাতকে পরস্পরের সহযোগী হিসেবে কাজ করার পরামর্শ দেন শেখ হাসিনা। সরকারের তরফ থেকে সব ধরনের সহযোগিতা নিশ্চিত করার আশ্বাস দেন।

তিনি আরও বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে আমরা নীতি সহায়তা এবং অর্থের যোগান অব্যাহত রাখব, তবে অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং অপচয় রোধ নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ গ্রহণ করতে হবে। আমি বিশ্বাস করি, আমরা সকলে মিলে একসঙ্গে কাজ করলে ২০৩০ সালের আগেই নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জন করতে সক্ষম হব। আমাদের লক্ষ্য- আমরা উন্নয়নশীল দেশের মর্যাদা পেয়েছি, সেটা বাস্তবায়নের মাধ্যমে আমরা ২০৪১ সালের মধ্যে উন্নত দেশ হিসেবে প্রতিষ্ঠা লাভ করব। সেই লক্ষ্য অর্জন করার জন্য সবাইকে আমি আহ্বান জানাই।



সরকার প্রধান বলেন, সরকারের পক্ষ হতে সময়োচিত প্রণোদনা প্যাকেজ ও যথাযথ নীতি সহায়তা দেওয়ার কারণে অর্থনীতি আবারও ইতিবাচক ধারায় ফিরে আসছে। নির্দিষ্ট সময়ে এসডিজি’র পথ পরিক্রমা নিশ্চিত করা কঠিন, তবে আমি বিশ্বাস করি সঠিক ও উদ্ভাবনী কর্মপরিকল্পনা এবং কার্যকর ব্যবস্থার মাধ্যমে লক্ষ্যে পৌঁছানো সম্ভব।

সরকার প্রধান বলেন, আমি আশা করি, এ সম্মেলনের মাধ্যমে এসডিজি বাস্তবায়নের সঙ্গে সম্পৃক্ত প্রতিষ্ঠানসমূহ তাদের বাস্তবায়ন অগ্রগতি পর্যালোচনা করার এবং বাস্তবায়ন সমস্যা চিহ্নিত করে তা সমাধানের পন্থা খুঁজে বের করতে সমর্থ হবে।

প্রধানমন্ত্রী বলেন, আমাদের উন্নয়নে সরকারের পাশাপাশি উন্নয়ন সহযোগী সংস্থাসমূহ, এনজিও এবং সমাজের বিভিন্ন স্তরে প্রতিনিধিত্বকারী ব্যক্তিরা সমানভাবে অংশীদার। এ সম্মেলনে সকলের অংশগ্রহণ বাংলাদেশের ভবিষ্যৎ অগ্রযাত্রাকে আরও বেগবান করবে বলে আমি বিশ্বাস করি।

তিনি বলেন, বাংলাদেশের অর্থনীতির চাকাকে সচল রাখতে বেসরকারিখাত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করছে। আমরা ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ পৌঁছে দিয়েছি। অবকাঠামো উন্নয়নে মেগা প্রকল্পগুলো বাস্তবায়িত হলে বেসরকারিখাত আরও বেশি গতিশীল হবে। এ সম্মেলনে বেসরকারিখাতের অংশগ্রহণ সম্মেলনের উদ্দেশ্য পূরণে কার্যকর ভূমিকা রাখবে বলে আমি আশা করি।

শেখ হাসিনা বলেন, এসডিজি বাস্তবায়নে আমরা নীতি সহায়তা এবং অর্থের যোগান অব্যাহত রাখব, তবে অর্থের সর্বোত্তম ব্যবহার এবং অপচয়রোধ নিশ্চিত করতে হবে। সেই সঙ্গে আন্তর্জাতিক প্রতিশ্রুতি যথাযথভাবে বাস্তবায়নের লক্ষ্যে কার্যকর উদ্যোগ নিতে হবে।

তিনি বলেন, আমি বিশ্বাস করি আমরা সকলে মিলে এক সঙ্গে কাজ করলে ২০৩০ এর আগেই আমরা নির্ধারিত লক্ষ্য অর্জনে এবং ২০৪১ সালের পূর্বেই জাতির পিতার স্বপ্নের ক্ষুধা-দারিদ্র্যমুক্ত এবং উন্নত-সমৃদ্ধ বাংলাদেশ বিনির্মাণে সমর্থ হব।

দেশের উন্নয়নে আওয়ামী লীগ সরকারের নেওয়া নানা পদক্ষেপের কথা অনুষ্ঠানে তুলে ধরে শেখ হাসিনা বলেন, বাংলাদেশ ক্ষুধা, দারিদ্রমুক্ত, উন্নত, সমৃদ্ধ সোনার বাংলাদেশ হিসেবে গড়ে তুলব। জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের স্বপ্ন আমরা বাস্তবায়ন করব ইনশাল্লাহ।

বঙ্গবন্ধু আন্তর্জাতিক সম্মেলন কেন্দ্রে এ সম্মেলনে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের এসডিজি বিষয়ক মুখ্য সমন্বয়ক জুয়েনা আজিজ স্বাগত বক্তব্য দেন। অন্যদের মধ্যে পরিকল্পনামন্ত্রী এম এ মান্নান ও পরিকল্পনা প্রতিমন্ত্রী শামসুল আলম অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন।

(দ্য রিপোর্ট/আরজেড/ ১৬ মে, ২০২২)

পাঠকের মতামত:

এ বিভাগের অন্যান্য সংবাদ

SMS Alert

জাতীয় এর সর্বশেষ খবর

জাতীয় - এর সব খবর